ফলাফল পক্ষে নেয়ার ষড়যন্ত্র হচ্ছে

লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি না করে ঢাকা সিটি নির্বাচনের ফলাফল পক্ষে নেয়ার ষড়যন্ত্র হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন ঢাকা দক্ষিণে বিএনপি সমর্থিত মেয়র প্রার্থী মির্জা আব্বাসের স্ত্রী আফরোজা আব্বাস। পুরান ঢাকায় নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে গিয়ে গতকাল গণমাধ্যমের কাছে তিনি এ অভিযোগ করেন। আফরোজা আব্বাস বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার গণসংযোগে নগ্ন হামলায় প্রমাণিত হয়েছে নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি না করে একচেটিয়া ও একতরফা নির্বাচনের মাধ্যমে ঢাকা সিটি নির্বাচনের ফলাফল নিজেদের পক্ষে নেয়ার ষড়যন্ত্র হচ্ছে। তিনি বলেন, মির্জা আব্বাসের পক্ষে নির্বাচনী গণসংযোগকালে প্রতিদিন আমাদেরকে হয়রানি করা হচ্ছেন, বাধা দেয়া হচ্ছে। নির্বাচনের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে সরকার সমর্থিত প্রার্থী ও তাদের নেতাকর্মীরা আমাদের কর্মী-সমর্থকদের ওপর তত বেশি চড়াও হচ্ছে। এমন কোন দিন নেই যেদিন আমাদের প্রচারণার মাইক, ছিনিয়ে নেয়নি, লিফলেট বিতরণে বাধা দেয়নি কিংবা আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালায়নি। আমরা এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনকে অবহিত করেছি। প্রশাসনকে জানিয়েছি কিন্তু এর কোন প্রতিকার পাচ্ছি না। যেখানে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরির ব্যবস্থাই সরকারই তৈরি করেনি সেখানে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে কি করে? পরে তিনি পুরান ঢাকার হোসেনী দালাল, ঢাকা শিক্ষা বোর্ড এলাকাসহ লালবাগের বেশ কিছু এলাকায় মির্জা আব্বাসের পক্ষে গণসংযোগ করেন। এ সময় আফরোজা আব্বাসের সঙ্গে কাউন্সিলর প্রার্থী শাহিদা মোর্শেদ, কাউন্সিলর প্রার্থী আনোয়ার পারভেজ বাদল অংশ নেন। এদিকে বিকালে বাসাবো কদমতলা এলাকায় নির্বাচনী গণসংযোগে যান আফরোজা আব্বাস। সেখানে তিনি হিন্দু সমপ্রদায়ের ভোটারসহ বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। তাদের কাছে মির্জা আব্বাসের জন্য মগ মার্কায় ভোট প্রার্থনা করেন। এ সময় আফরোজা আব্বাসের সঙ্গে রমেশ দত্ত, উত্তম সরকার, পবনদাস, যদুদাস, নিত্তনদাসসহ বেশ কয়েকজন হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি অংশ নেন।
হান্নান শাহ, স্বেচ্ছাসেবক দল, শ্রমিক দল ও ড্যাবের গণসংযোগ
এদিকে বিকালে দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আদর্শ ঢাকা আন্দোলনের প্রার্থীর প্রধান সমন্বয়ক ও বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্রি. জে. (অব.) আ স ম হান্নান শাহ’র নেতৃত্বে জয়কালী মন্দির ও র‌্যাংকিন স্ট্রিট এলাকায় জনসংযোগ করেছেন বিএনপি নেতাকর্মীরা। এ সময় তার সঙ্গে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কাজী মনিরুজ্জামান মনির অংশ নেন। পরে ঢাকার একটি অভিজাত হোটেলে জাতীয়তাবাদী যুব ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে মির্জা আব্বাসের নির্বাচন প্রচারণার জন্য এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। বিজিএমইএ’র সাবেক সভাপতি কাজী মনিরুজ্জামান মনিরের সভাপতিত্বে সভায় শেখ আতাউর রহমান, আ ক ম রুহুল আমিন, আবদুল্লাহ চৌধুরী, বদরুজ্জামান খসরু, জিয়াউল হক ফারুক ও রোকনুল হক ভূঁইয়া বক্তব্য দেন। ওদিকে মির্জা আব্বাসের পক্ষে গতকাল লালবাগ, আজিমপুরে প্রচারণার চালিয়েছে স্বেচ্ছাসেবক দল কেন্দ্রীয় নেতারা। সংগঠনের সিনিয়র সহ-সভাপতি মুহাম্মদ মুনির হোসেনের এ প্রচারণায় সহ-সভাপতি শহিদুল ইসলাম মুকুল, যুগ্ম সম্পাদক সাদরেজ জামান, অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম, আওলাদ হোসেন উজ্জ্বল, আক্রামুজ্জামান টুকনসহ নেতারা অংশ নেন। ওদিকে দুপুরে মির্জা আব্বাসের পক্ষে মতিঝিল দিলকুশা এলাকায় গণসংযোগ করেছে শ্রমিক দল। ঢাকা মহাগনগর কমিটির সভাপতি কাজী আমির খসরুর নেতৃত্বে তারা মগ প্রতীকে ভোট চেয়ে গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ করেন। এদিকে বিকালে মির্জা আব্বাসের পক্ষে সবুজবাগ, খিলগাঁও ও এজিবি কলোনিতে গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ করেছে ডক্টর অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ ড্যাব নেতারা। ওদিকে বেলা ১১টায় ২০ দলীয় জোটের মেয়র প্রার্থী মির্জা আব্বাসের সমর্থনে পুরানা পল্টন, নয়াপল্টন, কালভার্ট রোড, হাউজ বিল্ডিং ও বায়তুল মোকারম এলাকায় গণসংযোগ করেছে জোটের শরিক দল লেবার পার্টি। চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরানের নেতৃত্বে কর্মসূচিতে পার্টির কেন্দ্রীয় ও মহানগর নেতারা অংশ নেন। মির্জা আব্বাসের পক্ষে আজ সকাল ৯টায় সূত্রাপুর থানা প্রাঙ্গণ থেকে গণসংযোগ শুরু করেন আফরোজা আব্বাস। পরে তিনি বাংলাবাজার মোড়, ভিক্টোরিয়া পার্ক পেট্রল পাম্প, চিশতিয়া কমিউনিটি সেন্টার, ধোলাইখাল, সলিমুল্লাহ কলেজ, টিপু সুলতান রোড, হোটেল আল রাজ্জাক এলাকায় এবং প্রধান নির্বাচনী সমন্বয়কারী ব্রি. জে. (অব.) আ স ম হান্নান শাহ বিকাল সূত্রাপুর ও ফরিদাবাদে গণসংযোগ করবেন।
কামরাঙ্গীর চরে গণসংযোগকালে মাইক ছিনতাই
এদিকে গতকাল দুপুরে কামরাঙ্গীরচর আশরাফাবাদ স্কুলের সামনে মাদবর বাজারে মগ মার্কা ও স্থানীয় কাউন্সিলর অ্যাডভোকেট রাশেদ আলম খোকনের পক্ষে গণসংযোগকালে সরকারদলীয় ক্যাডাররা হামলা চালিয়ে মাইক, ব্যাটারি, লিফলেট, মোবাইল ও ঘড়ি ছিনিয়ে নেয়। এ সময় সন্ত্রাসীরা মগ মার্কা প্রতীকের কর্মী আমির হোসেন, শাহ আলমসহ কয়েকজনকে বেধড়ক মারপিট করে। এলাকাবাসী জানায়, এই হামলার সঙ্গে ছাত্রলীগের স্থানীয় কর্মীরা জড়িত।

No comments

Powered by Blogger.