কেউ ২৭২ আসন না পেলে কী করবেন রাষ্ট্রপতি?

ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি
ভারতের লোকসভা নির্বাচনে কেউ এককভাবে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাচ্ছে না বলেই ধারণা করা হচ্ছে৷ আর যদি তা-ই হয়, তা হলে বেশি আসন পাওয়া দলকে সরকার গঠনে প্রয়োজনীয় ২৭২ আসন আছে দেখাতে অন্য দলগুলোর লিখিত সমর্থনপত্র হাজির করতে হবে৷ তার আগ পর্যন্ত সরকার গঠনে কাউকে আহ্বান নাও জানাতে পারেন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি৷ ঝুলন্ত পার্লামেন্ট হলে একটি স্থিতিশীল সরকার গঠনের জন্য কে সবচেয়ে উপযোগী হতে পারে, তা নিয়ে এখন বিভিন্ন মহলের সঙ্গে নিবিড়ভাবে পরামর্শ করছেন রাষ্ট্রপতি প্রণব৷ এ পর্যন্ত পর্যালোচনায় তিনি সম্ভবত এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন, সরকার গঠন করতে ইচ্ছা যারাই পোষণ করুক না কেন, সরকার গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় আসনের প্রমাণপত্র হিসেবে আগে তাদেরকে নির্বাচন-পরবর্তী মিত্রদের কাছ থেকে লিখিত সমর্থন হাজির করতে হবে৷ সূত্র জানায়, ‘রাষ্ট্রপতি প্রণব নিশ্চিত করতে চান, যারাই সরকার গঠন করতে চায়, তারা যেন পার্লামেন্টে নিরঙ্কুশ সমর্থনের সুবিধা ভোগ করতে পারে৷’ প্রণবকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, একটি পদক্ষেপই কেবল এই বিষয়টি নিশ্চিত করতে পারে৷ তা হলো নির্বাচন-পরবর্তী মিত্রদের কাছ থেকে লিখিত সমর্থন জোগাড় করা৷
১৯৮৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেস একক সংখ্যাগরিষ্ঠ দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করলেও রাজীব গান্ধী সরকার গঠন করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন৷ একপর্যায়ে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি আর ভেঙ্কটরমন জনতা দলের নেতা ভি পি সিংকে সরকার গঠনের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন৷ জনতা দল কংগ্রেসের চেয়ে কম আসন পেলেও সরকার গঠনে প্রয়োজনীয়সংখ্যক আসন দেখাতে সক্ষম হয়েছিল৷ এই নজির অনুসরণ করা হয়েছিল ১৯৯৬ সালের নির্বাচনের পরও৷ তৎকালীন রাষ্ট্রপতি শংকর দয়াল শর্মা অটল বিহারি বাজপেয়ির নেতৃত্বাধীন ভারতীয় জনতা পার্টিকে (বিজেপি) সরকার গঠনের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন৷ মাত্র ১৬১ আসন পাওয়া বিজেপি এতে বিস্মিত হলেও সুযোগটি হাতছাড়া করেনি৷ দুই বছর পর বাজপেিয়র নেতৃত্বে বিজেপি জোট মোট আসন ২৭২-এর বেশি পেয়েছিল৷ এর পরও তৎকালীন প্রেসিডেন্ট কে আর নারায়ণন বিজেপিকে অন্য দলগুলোর কাছ থেকে নির্বাচন-পরবর্তী সমর্থনের বিষয়ে লিখিত আনতে বলেছিলেন৷ বর্তমান রাষ্ট্রপতি প্রণবের এ ধরনের উদ্যোগ প্রসঙ্গে ভারতের সংবিধান বিশেষজ্ঞ ও সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল সোলি জে সোরাবজি বলেন, ‘সরকার গঠনে আমন্ত্রণ জানানোর আগেই প্রেসিডেন্টের লোকসভায় কোনো দল বা জোটের শক্তিমত্তা পরীক্ষা করার দরকার নেই৷ শক্তির পরীক্ষা হবে পার্লামেন্টে, রাষ্ট্রপতি ভবনে নয়৷ যদিও এ ধরনের লিখিত সমর্থন চাওয়ার ক্ষেত্রে সাংবিধানিকভাবে কোনো বাধা নেই, তার পরও শুনতে এটাকে কিছুটা অনৈতিক দাবির মতো লাগে৷’ টাইমস অব ইন্ডিয়া৷

No comments

Powered by Blogger.