শিগগিরই শেখ হাসিনার গণেশ উল্টে যাবে- বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী

কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বলেছেন, জনগণ রাস্তায় নামলে শিগগিরই শেখ হাসিনার গণেশ উল্টে যাবে। এমনকি সংসদে নাম লেখানোর মতো কেউ না-ও থাকতে পারে।
গতকাল বন্ধ হয়ে যাওয়া দিগন্ত টেলিভিশনের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে চ্যানেলটির কর্মীদের প্রতিবাদী অবস্থানে সংহতি প্রকাশ করতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। কাদের সিদ্দিকী দিগন্ত টেলিভিশন কর্তৃপক্ষের উদ্দেশে বলেন, দিগন্ত টেলিভিশনের কর্তাব্যক্তিদের ঈমান ঠিক নেই। তারা জালিম সরকারের হাত-পা টিপছে টিভি চ্যানেল খুলে দিতে। অথচ তারা রাজপথে যায়নি কিংবা আইনি লড়াই করেনি। তিনি বলেন, সরকারের পা টিপে দিগন্ত টিভি খুলতে পারবেন না। দিগন্ত টিভি খুলতে হলে আদালতে বা জনতার আদালতে যেতে হবে। এভাবে সরকারের কানে পানি যাবে না। যার পজিশন জমিদারদের কাচারি ঘরের গেট পর্যন্ত সেই ইনু মন্ত্রী। সুতরাং, তার কাছে অনুরোধ করে লাভ নেই। তিনি বলেন, আমি দিগন্ত টেলিভিশনে গিয়ে নব্য রাজাকার খেতাব পেয়েছি। কিন্তু যারা আমাকে এ রাজাকার খেতাব দিয়েছে তাদের ওপর আল্লাহর গজব পড়েছে। তিন মাস পোলাও-বিরিয়ানি খাওয়ানো হলেও ওই কুলাঙ্গাররা আর টিকতে পারেনি। তারা নিঃশেষ হয়ে গেছে। তিনি বলেন, শাহবাগে রাস্তা বন্ধ করে তিন মাস তাদের থাকতে দেয়া হয়েছে। অথচ লাইট বন্ধ করে রাতের আঁধারে হেফাজতের কর্মীদের নির্মমভাবে হত্যা করে তাদের সরিয়ে দেয়া হয়েছে। তারা একদিনও সেখানে থাকতে পারেনি। এ কারণে আগামীতে আওয়ামী লীগ ২০টির বেশি আসন পাবে না। দিগন্ত টিভি খুলে দিলে আওয়ামী লীগ আরও ১০টি আসন বেশি পেতে পারে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
কাদের সিদ্দিকী অভিযোগ করেন, ধর্মপ্রাণ মানুষের ওপর জুলুম-নির্যাতন চালানো হয়েছে। দিগন্ত থাকলে আমরা তা দেখতে পারতাম। প্রধানমন্ত্রীর লোডশেডিং দেয়ার ঘোষণার সমালোচনা করে তিনি বলেন, এমন জালিম সরকারকে মানুষ আর ভোট দেবে না। ‘এত কাজ করলাম ভোট দিলো না। চুরি করলে ভোট দিতো’- প্রধানমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ওনারা চুরি করেননি, তাহলে পদ্মা সেতু, হল-মার্ক দুর্নীতি এগুলো কে করেছে? সখীপুর বাসাইল উপনির্বাচনে তারা কি ভোট চুরিও করেনি? বড়ভাই লতিফ সিদ্দিকীকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, আমি আমার পিতার কাছ থেকে যা পাইনি বড় ভাইয়ের কাছ থেকে তা পেয়েছি। তিনি আমাকে রাজাকার উপাধি দিয়েছেন। আমি আজকে রাজাকার হিসেবে ইসলামের খেদমত করতে চাই।
এ সময় বিএনপির সমালোচনা করে তিনি বলেন, বিএনপি সত্যিকার অর্থে বিরোধী দলের দায়িত্ব পালন করতে পারেনি। তারা ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। বিএনপি যদি তাদের অতীত ভুল স্বীকার করে নিজেদের পরিবর্তনের কথা জনগণকে বোঝাতে সমর্থ না হয়, তাহলে কেয়ামত পর্যন্ত তারা ক্ষমতায় আসতে পারবে না। তিনি বলেন, বিএনপি যোগ্য দল হলে চ্যানেল ওয়ান, দিগন্ত টিভি, ইসলামী টিভি, আমার দেশ পত্রিকা বন্ধ হতো না। বিএনপি ও আওয়ামী লীগ মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ বলেও মন্তব্য করেন বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী।
জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল অব. আ স ম হান্নান শাহ, কল্যাণ পার্টির সভাপতি মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মোহাম্মদ ইবরাহীম, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) সভাপতি শফিউল আলম প্রধান, ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান আবদুল লতিফ নেজামী, যুবদল সভাপতি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, আবদুল হাই শিকদার, নয়া দিগন্ত সম্পাদক আলমগীর মহিউদ্দিন, প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমেদ, সাংবাদিক নেতা আবদুস শহিদ, ইলিয়াস খান, বাকের হোসাইন, দিগন্ত টিভির নির্বাহী পরিচালক মাহবুবে আলম, প্রধান বার্তা সম্পাদক জিয়াউল কবির সুমন প্রমুখ।

No comments

Powered by Blogger.