মধ্যস্থতাকারী দল চূড়ান্ত করছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী কেরি

মধ্যপ্রাচ্য শান্তি আলোচনার জন্য মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি তাঁর মধ্যস্থতাকারী দল চূড়ান্ত করছেন। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র জেন পিসাকি গত সোমবার এ খবর দিয়েছেন। ইসরায়েলে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন করা মার্টিন ইনডিক যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতকারী দলের প্রধান হতে পারেন। মার্কিন কয়েকটি গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান এ খবর দিয়েছে। তবে এ খবরের সত্যতা নিশ্চিত বা অস্বীকার কোনোটাই করেননি মুখপাত্র পিসাকি। মধ্যপ্রাচ্য শান্তি আলোচনা আবার শুরুর জোর প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে কেরি গত সপ্তাহে আরেক দফা ওই অঞ্চলে সফর করেন। গত ফেব্রুয়ারিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়ার পর মধ্যপ্রাচ্যে এটা ছিল তাঁর ষষ্ঠ সফর। সফরের শেষ দিন গত শুক্রবার আম্মানে কেরি ঘোষণা দেন, ফিলিস্তিন ও ইসরায়েলের নেতারা আবার সংলাপে বসার বিষয়ে নীতিগতভাবে সম্মত হয়েছেন। তিন বছর ধরে এ ধরনের আলোচনা বন্ধ রয়েছে। আলোচনা শুরু করার জন্য ইসরায়েলের প্রধান আলোচক সি পি লিভনি এবং ফিলিস্তিনি প্রধান আলোচক সায়েব এরাকাত শিগগিরই ওয়াশিংটনে যাবেন বলে আশা করা হচ্ছে। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র জেন পিসাকি ওয়াশিংটনে সাংবাদিকদের বলেন, ‘গত কয়েক বছরের মধ্যে এই প্রথম উভয় পক্ষের সরকারি আলোচকেরা বৈঠকে বসার বিষয়ে প্রকাশ্যে সম্মত হয়েছেন।’ তবে কবে এ আলোচনা শুরু হতে পারে, তার নির্দিষ্ট দিনক্ষণ তিনি বলেননি। পিসাকি বলেন, মার্কিন কর্মকর্তারা গত কয়েক দিন উভয় পক্ষের সঙ্গে যোগাযোগের মধ্যে রয়েছেন। জন কেরি উভয় পক্ষের আলোচকদের মধ্যে সঠিক সমন্বয়ের ওপরে আলোকপাত করছেন জানিয়ে পিসাকি বলেন, ঠিক কারা আলোচক বা কূটনীতিক হিসেবে থাকবেন, সে বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তিনি আরও বলেন, এই আলোচনা একটি চ্যালেঞ্জপূর্ণ প্রক্রিয়া হতে যাচ্ছে। কেরি একা এর সবই নিজের কাঁধে বহন করতে পারেন না। তাই তিনি যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে একটি জ্যেষ্ঠ দল গঠনের চেষ্টা করছেন। এদিকে ১৯৭৯ সালে ইসরায়েল ও মিসরের মধ্যে আলোচিত ক্যাম্প ডেভিড চুক্তি সম্পাদনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার বলেছেন, এই শান্তি-প্রক্রিয়ার ব্যাপারে তিনি এক মাস বা পাঁচ দিন আগের চেয়ে এখন অনেক বেশি আশাবাদী। পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক গবেষণা প্রতিষ্ঠান কার্নেগি এনডাউমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল পিস-এ একটি সম্মেলনে ভাষণের সময় এ কথা বলেন তিনি। জন কেরি মূলত ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের দল ফাতাহর সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করছেন। ফাতাহর কার্যক্রম পশ্চিম তীরভিত্তিক। গাজা শাসনকারী কট্টরপন্থী ফিলিস্তিনি দল হামাস বলেছে, আব্বাস ফিলিস্তিনি জনগণের ইচ্ছাকে প্রতিনিধিত্ব করেন না। তাই ফিলিস্তিনি জনগণ এই শান্তি আলোচনা গ্রহণ করবে না। এমন প্রেক্ষাপটে এই শান্তি আলোচনার প্রচেষ্টা ফিলিস্তিনিদের ঐক্য-প্রচেষ্টাকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা। এএফপি।

No comments

Powered by Blogger.