সিরিয়ার বিদ্রোহীদের সহায়তা সুনির্দিষ্ট করলেন না ওবামা

যুক্তরাষ্ট্র সিরিয়ার বিদ্রোহীদের কী সহায়তা দেবে, তা সুনির্দিষ্ট করে জানাতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। গতকাল বুধবার জার্মানির বার্লিনে এক সংবাদ সম্মেলনে তাঁকে এ নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল। তবে যুক্তরাষ্ট্র সিরিয়া যুদ্ধে জড়িয়ে পড়তে প্রস্তুত—এমন গুঞ্জনকে অতিরঞ্জিত বলে উড়িয়ে দেন ওবামা। উত্তর আয়ারল্যান্ডে অনুষ্ঠিত শিল্পোন্নত দেশগুলোর সংগঠন জি-৮ এর সম্মেলন শেষে গতকাল জার্মানি সফরে যান ওবামা। মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে এটাই তাঁর প্রথম জার্মান সফর। সেখানে দেশটির চ্যান্সেলর আঙ্গেলা মেরকেলের সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেন তিনি। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র তার এত দিনের নীতি পরিবর্তন করে সিরিয়ার বিদ্রোহীদের সামরিক সহায়তা দেওয়ার ঘোষণা দেয়। সিরিয়ার সরকারি বাহিনী বিদ্রোহীদের দমনে রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করেছে মর্মে প্রমাণ মেলার কথা বলে এ সিদ্ধান্ত নেয় দেশটি। গতকালের সংবাদ সম্মেলনেও ওবামা দাবি করেন, সিরিয়ার সরকারি বাহিনী রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করেছে। ওবামা বলেন, ‘সিরিয়ার বিদ্রোহীদের সামরিক সহায়তার আওতায় কী দেওয়া হবে, তা আমি সুনির্দিষ্ট করে বলব না। বলতে পারি না।’ তবে এর আগে মার্কিন কর্মকর্তারা জানিয়েছিলেন, বিদ্রোহীদের কাছে ছোট অস্ত্রের চালান পাঠানো হবে। সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের সমালোচনা করে ওবামা বলেন, দেশটিতে গোলযোগ আর রক্তপাতের জন্য প্রেসিডেন্ট বাশার দায়ী। এই পদে বৈধভাবে তাঁর অবস্থান এখন অসম্ভব। সংবাদ সম্মেলনে মার্কিন নাগরিকদের ফোন রেকর্ড করা এবং অনলাইন তৎপরতায় প্রশাসনের নজরদারির পক্ষে আবারও সাফাই গেয়েছেন ওবামা। তিনি বলেন, জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থা (এনএসএ) সুনির্দিষ্ট কাউকে লক্ষ্যবস্তু করে এই তৎপরতা চালায় না। তবে জনগণের নিরাপত্তা ও ব্যক্তিগত গোপনীয়তার মধ্যে ভারসাম্য থাকতে হবে। উদ্বেগজনক পরিস্থিতিতে প্রয়োজনে বিশ্বজুড়ে ফোন ও ইন্টারনেটে নজরদারির পক্ষে নিজের অবস্থানের কথা তুলে ধরেন ওবামা। মার্কিন প্রেসিডেন্ট এ সময় বলেন, যুক্তরাষ্ট্র কোনো ফরাসি বা জার্মান নাগরিকের অনলাইন তৎপরতায় নজরদারি করেনি। পারমাণবিক অস্ত্র হ্রাসের প্রস্তাব: যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার পারমাণবিক অস্ত্রের মজুত কমানোর প্রস্তাব দেবেন ওবামা। গতকালই পরে বার্লিনের ব্রান্ডেনবুর্গ গেটে দেওয়া বক্তব্যে ওই প্রস্তাব দেওয়ার কথা তাঁর। মার্কিন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা জানান, ব্রান্ডেনবুর্গ গেটে দেওয়া ভাষণে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মোতায়েন করা পারমাণবিক অস্ত্র এক-তৃতীয়াংশ হ্রাসের প্রস্তাব দেবেন ওবামা। রাশিয়া-যুক্তরাষ্ট্র সর্বশেষ স্বাক্ষরিত ‘নিউ স্টার্ট’ চুক্তি অনুযায়ী এই অস্ত্র হ্রাস করার প্রস্তাব দেওয়া হবে। এদিকে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক উপদেষ্টা ইউরি উসাকভ গতকাল ওয়াশিংটনে বলেছেন, শুধু রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র নয়, পারমাণবিক অস্ত্র হ্রাস কার্যক্রমে অন্য দেশগুলোকেও সম্পৃক্ত করতে হবে। বিবিসি, এএফপি ও রয়টার্স।

No comments

Powered by Blogger.