কাশ্মীর সীমান্তে উত্তেজনা-পরিস্থিতির উন্নতি না হলে বিকল্প ভাববে ভারত-প্রয়োজনে নিরাপত্তা পরিষদে যাওয়ার ইঙ্গিত পাকিস্তানের

কাশ্মীরের বিতর্কিত সীমান্ত এলাকায় উত্তেজনা কমেনি। ভারত ও পাকিস্তানকে বিভক্তকারী নিয়ন্ত্রণ রেখার (এলওসি) দুই পাশে উভয় পক্ষ সেনা উপস্থিতি বাড়িয়েছে।
ভারতীয় বিমানবাহিনীর (আইএএফ) প্রধান মার্শাল এন এ কে ব্রাউনি গতকাল শনিবার বলেছেন, পাকিস্তানি সেনারা গুলি ছোড়া বন্ধ না করলে অন্য পথে হাঁটার কথা ভাববে নয়াদিল্লি। গত শুক্রবার এলওসির অন্তত আটটি স্থানে উভয় পক্ষের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে।
এদিকে ভারতীয় সেনাবাহিনীর বারবার নিয়ন্ত্রণ রেখা অতিক্রমের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে পাকিস্তান। পরিস্থিতির উন্নতি না হলে বিষয়টিকে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদেও তোলা হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছে তারা। পাকিস্তান আন্তসীমান্ত বাণিজ্য স্থগিত করেছে বলে ভারত শুক্রবার নিশ্চিত করেছে।
চলমান উত্তেজনা কমানোর লক্ষ্যে ব্রিগেডিয়ার পর্যায়ে বৈঠক অনুষ্ঠানের ব্যাপারে গতকাল পর্যন্ত পাকিস্তানের সাড়া মেলেনি। গত বৃহস্পতিবার ভারতীয় সেনাদের গুলিতে দ্বিতীয়বার পাকিস্তানি সেনা মারা যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে ইসলামাবাদে নিযুক্ত ভারতীয় রাষ্ট্রদূতকে তলব করে পাকিস্তান। এর পরিপ্রেক্ষিতে পতাকা বৈঠকের আহবান জানায় ভারত।
গত ৬ জানুয়ারি থেকে কয়েক দফা 'হামলা' ও গোলাগুলির ঘটনায় দুই দেশের দুইজন করে চারজন সেনা মারা গেছেন।
ভারতের গোয়েন্দাদের দাবি, পাকিস্তান সেনাবাহিনী তাদের সব সদস্যের ছুটি বাতিল করেছে। ভারতের সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, ভারতের অংশে বর্ডার অ্যাকশন টাস্কফোর্সের (বিএটিএফ) সদস্যসংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। সেনা ও বিমান উভয় বাহিনীই সীমান্ত এলাকায় নজরদারি বাড়িয়েছে। চালকবিহীন নজরদারি বিমানও মোতায়েন করা হয়েছে।
সেনা সূত্রের বরাত দিয়ে ভারতীয় পত্রিকা টাইমস অব ইন্ডিয়া গতকাল জানায়, সীমান্ত এলাকার মেন্ধার ও পঞ্চ সেক্টরের অন্তত আটটি স্থানে শুক্রবার উভয় পক্ষের মধ্যে গোলাগুলি হয়েছে। তবে কোনো পক্ষের হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। গোলাগুলির ঘটনার স্থায়িত্বকাল ছিল ২০ মিনিট।
আইএএফ প্রধান ব্রাউনি গতকাল নয়াদিল্লিতে সাংবাদিকদের বলেন, 'আমাদের এলওসি নির্ধারিত। আমাদের মধ্যে অস্ত্রবিরতি চুক্তি আছে। এর মর্যাদায় রক্ষায় রয়েছে নির্দিষ্ট কাঠামোগত ও কৌশলগত পদ্ধতি। তাই এ ধরনের (সেনা-হত্যার) ঘটনা, বিশেষ করে কয়েক মাস ধরে যা হচ্ছে, তা সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য।' তিনি আরো বলেন, 'আমরা পরিস্থিতির ওপর সতর্কতার সঙ্গে নজর রাখছি। যদি অস্ত্রবিরতি ভঙ্গের ঘটনা চলতেই থাকে তবে আমাদের হয়তো এ ব্যাপারে অন্য পথে এগোনোর চিন্তা করতে হবে।'
পাকিস্তানি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব জলিল আব্বাস জিলানি শুক্রবার ইসলামাবাদে কাশ্মীরের সাম্প্রতিক ঘটনা নিয়ে ইউরোপীয় কূটনীতিকদের সঙ্গে আলোচনা করেন। সূত্র : এক্সপ্রেস ট্রিবিউন।

No comments

Powered by Blogger.