ভারতে বিবাহবিচ্ছেদের হার বেড়ে দ্বিগুণ

অর্থনৈতিকভাবে দ্রুত অগ্রসর হচ্ছে ভারত। একই সঙ্গে বাড়ছে বিবাহবিচ্ছেদের হার। গত পাঁচ বছরে এই হার বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। আর এ বিচ্ছেদের প্রবণতা শহুরে মধ্যবিত্তদের মধ্যেই বেশি।
নয়াদিলি্লর দাম্পত্যবিষয়ক পরামর্শদাতা ডা. গীতাঞ্জলি শর্মা বলেন, 'ডিভোর্সের হার বাড়ছে। এ ব্যাপারে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। গত পাঁচ বছরে ডিভোর্সের হার শতকরা এক শ ভাগ বেড়েছে।' তাঁর মতে, আধুনিক কর্মক্ষেত্রের চাপের প্রকৃতিতে পরিবর্তন এসেছে। তিনি বলেন, 'আমার মনে হয়, লোকে আজকাল ব্যক্তিগত জীবনের তুলনায় ক্যারিয়ারে অধিক মনোযোগী। তাদের ধৈর্য ও সহনশীলতা কমছে। সম্পর্কের সমস্যা সমাধানে সচেষ্ট না হয়ে পলায়নপর মনোবৃত্তিই তাদের কাছে অধিক গ্রহণযোগ্য।'
খাতা-কলমের হিসাবে, বিশ্বের সবচেয়ে কম বিচ্ছেদ ঘটা দেশগুলোর মধ্যে ভারত অন্যতম। সম্প্রতি এক জরিপে বলা হয়, প্রতি এক হাজার বিয়ের মধ্যে সংসার ভাঙে একটি দম্পতির। আদালতে এখন বিবাহবিচ্ছেদের আরজি জানানোর সংখ্যা দ্রুত হারে বাড়ছে। সমস্যার সহজ ও দ্রুত নিষ্পত্তির নির্দেশ দিয়েছে সরকারও। বর্তমানে আদালতে এ নিয়ে মামলা চলে বছরের পর বছর ধরে।
দিলি্ল হাইকোর্টে মামলা চলছে আইটি কর্মী মোহিতের। তাঁর কিশোর বয়সের প্রেম পরিণতি পায় বিশের কোঠায় পেঁৗছানোর পরপরই। আর তাঁরা আলাদা থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিন বছর হচ্ছে। এই তিন বছর ধরেই চলছে তাদের মামলা। মোহিত তাঁর বিয়ে বিপর্যয়কে ভারতের পুরনো ও নতুন সংস্কারের মধ্যে সংঘাতের ফল বলেই মনে করেন। তিনি স্বীকার করেন, স্ত্রীর আলাদা ক্যারিয়ার থাকবে_বিষয়টি কিছু কিছু সময় তাঁর পক্ষে মেনে নেওয়া কঠিন হয়ে দাঁড়াচ্ছিল। তিনি বলেন, 'বিয়ের সময় আমরা আধুনিক, অগ্রসরমাণ বউ চাই। কিন্তু বিয়ের পর চাই, স্ত্রী আমার জন্য রান্না করবে। কাজ থেকে ফিরে বাড়িতেই তার দেখা পাব আমি।'
বিচ্ছেদ হওয়া ব্যক্তিদের জন্য নতুন বিয়ের ঘটকালি করার মুম্বাইভিত্তিক প্রতিষ্ঠান 'সেকেন্ডশাদি ডটকম'-এর কর্ণধার বিবেক পাহওয়া দাবি করেন, 'প্রতি মাসে অন্তত চার হাজার আগ্রহী তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তুলনামূলকভাবে আমাদের ওয়েবসাইটটি নতুন। মাত্র তিন বছর হচ্ছে। আমি দেখছি বিচ্ছেদের ব্যাপারে মানুষের মনোভাব দ্রুত পাল্টাচ্ছে। আমাদের ব্যবসা ভালোই চলছে।' সূত্র : বিবিসি।

No comments

Powered by Blogger.