থিয়েটার পুণ্যভূমির প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর উসব- সংস্কৃতি সংবাদ

তারুণ্যের দীপ্ত প্রত্যয় নিয়ে ২০১১ সালের ৮ জানুয়ারি যাত্রা শুরু করে থিয়েটার পূণ্যভূমি। সময়ের বহমানতায় প্রতিষ্ঠার দুই বছর পূর্ণ করল নাট্যদলটি। মঙ্গলবার ছিল দলের দ্বিতীয় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী।
এ উপলক্ষে আহা কি আনন্দ আকাশে বাতাসে শিরোনামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) সুইমিংপুলে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর উৎসবের আয়োজন করা হয় । বিকেলে বাঙালী ঐতিহ্যের খাবার ভাত-ভর্তা ভোজের মধ্য দিয়ে শুরু হয় আয়োজন। এরপর শুরু হয় থিয়েটার আড্ডা। প্রাণের উচ্ছ্বাসমাখা এ আড্ডায় অংশ নেয় পুণ্যভূমির নাট্যকর্মীরা। এরপর উৎসবের শিরোনাম আহা কি আনন্দ আকাশে বাতাসে গানের সুরে নৃত্য পরিবেশন করে নাট্যদলের সাংস্কৃতিক সংগঠন শিকড়ের নৃত্যশিল্পীরা।
সংক্ষিপ্ত আলোচনা পর্বে প্রধান অতিথি ছিলেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সহ-সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ। আরও বক্তব্য রাখেন পথনাটক পরিষদের সভাপতি মান্নান হীরা, এটিএন বাংলার অন্যতম উপদেষ্টা শামসুল হুদা ও গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আক্তারুজ্জামান। সভাপতিত্ব করেন দলের আহ্বায়ক জুলফিকার হুসাইন সোহাগ।
গোলাম কুদ্দুছ বলেন, নাটক সমাজ ও যাপিত জীবনের দর্পণ। নাটকের মাধ্যমেই সমাজের কথা তুলে ধরতে হবে। আর সময়ের দাবি হিসেবে এখন নাটকসহ বিভিন্ন শিল্পমাধ্যমে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের ইস্যুটিকে উপস্থাপন করতে হবে। তিনি আরও বলেন, সম্প্রতি ভারতের দিল্লীতে গণধর্ষণের ঘটনা নিয়ে ভারতের পাশাপাশি বাংলাদেশেও ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে। টাঙ্গাইলের কিশোরী ধর্ষণ নিয়েও সুশীল সমাজ আন্দোলন করছে। টক শোতে অনর্গল কথা বলছেন। কিন্তু এই নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরাই একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় লাখ লাখ নারীর ধর্ষণকারীদের বিচারের পক্ষে সরব হচ্ছেন না। ইনিয়ে-বিনিয়ে যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষে কথা বলছেন।
আলোচনাসভা শেষে ঘোষণা করা হয় এ বছরের পূর্ণ নাট্যকর্মীর নাম। এ বছরে এ পুরস্কারটি পেয়েছেন কামরুজ্জামান জিপু। তার হাতে আমন্ত্রিত অতিথিরা সম্মাননা তুলে দেন। এরপরে শিকড়ের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। পরিবেশিত হয় পথনাটক শান্তিরক্ষক।
দাদুভাইয়ের জন্মদিন পালন ॥ বিশিষ্ট ছড়াকার, শিশু সংগঠক ও সাংবাদিক রফিকুল হক দাদুভাইয়ের ৭৭তম জন্মদিন ছিল মঙ্গলবার। এ উপলক্ষে বাংলাদেশ শিশুকল্যাণ পরিষদ মিলনায়তনে অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করে তাঁরই গড়া প্রতিষ্ঠান চাঁদের হাট কেন্দ্রীয় পরিষদ। পৌষের সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত এ আয়োজনে ফুলেল শুভেচ্ছা, কথামালা ও সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় ভালবাসা জানানো হয় দাদুভাইকে।
আজ এই দিনটাকে মনে রেখো গানের পরিবেশনা দিয়ে শুরু হয় জন্মদিন উদযাপনের আয়োজন। এরপর দাদুভাইকে জানানো হয় ফুলেল শুভেচ্ছা। প্রথমেই শুভেচ্ছা জানান পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শামীম পারভেজ। এরপর একে একে ফুলেল ভালবাসা জানান শিশু কল্যাণ পরিষদের নুরুল কবির, কবি শামসুজ্জামান নূর, সাবেক ফুটবলার জাকারিয়া পিন্টু, ছড়াকার তৌহিদুল ইসলাম লিটন, নাসির ইকবাল প্রমুখ। দাদুভাইয়ের হাতে শুভেচ্ছা স্মারক তুলে দেন পরিষদের সভাপতি শাহ আলমগীর।
কথমালায় অংশ নেন শিশুসাহিত্যিক আলী ইমাম, কবি লিলি হক, মিসেস রফিকুল ইসলাম, শামীম পারভেজ প্রমুখ। আলোচনার আগে জন্মদিনের কেক কাটা হয়।
অদিতি মহসিনের রবীন্দ্রসঙ্গীতের এ্যালবামের প্রকাশনা ॥ সময়ের প্রতিশ্রুতিশীল রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী অদিতি মহসিন। মঙ্গলবার প্রকাশিত হলো এই শিল্পীর রবীন্দ্রসঙ্গীতের নতুন এ্যালবাম। শিরোনাম বর্ষামুখর রাতে ফাগুন সমীরণে। এ্যালবামটি প্রকাশ করেছে বেঙ্গল ফাউন্ডেশন।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বেঙ্গল শিল্পালয়ে এ্যালবামের মোড়ক উন্মোচন ও প্রকাশনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এ্যালবামের মোড়ক উন্মোচন করেন নাট্যজন রামেন্দু মজুমদার। মোড়ক উন্মোচনের আনুষ্ঠানিকতা শেষে শিল্পী সিডির গানগুলো ছাড়াও শ্রোতাদের পছন্দের কিছু গান পরিবেশন করেন।
রবীন্দ্রনাথের বর্ষা ও বসন্তের বারোটি গান নিয়ে এ্যালবামটি। সঙ্গীত পরিচালনা করেছেন ভারতের দূর্বাদল চট্টোপাধ্যায়। এ্যালবামের গানগুলো হলো এসো শ্যামল সুন্দর, আবার এসেছে আষাঢ় আকাশ ছেয়ে, বজ্রমানিক দিয়ে গাঁথা, আষাঢ় তোমার মালা, শ্যামল ছায়া/নাইবা গেলে, আমার দিন ফুরালো ব্যাকুল বাদল সাঁঝে, আজি ঝড়ের রাতে তোমার অভিসার, যদি তারে নাই চিনি গো, আকাশ আমায় ভরল আলোয়, তুই রে বসন্তসমীরণ, ফাগুন হাওয়ায় হাওয়ায় করেছি দান, ঝরা পাতা গো/আমি তোমারি দলে ও তুমি কিছু দিয়ে যাও মোর প্রাণে গোপনে।
ব্র্যাক ব্যাংক-সমকাল সাহিত্য পুরস্কার ॥ দ্বিতীয়বারের মতো শুরু হয়েছে ব্র্যাক ব্যাংক-সমকাল সাহিত্য পুরস্কার। মোট তিন শাখায় পুরস্কার দেয়া হবে। এগুলো হচ্ছে কবিতা ও কথাসাহিত্য; প্রবন্ধ, আত্মজীবনী, ভ্রমণ ও অনুবাদ এবং তরুণ সাহিত্যিকদের জন্য হুমায়ূন আহমেদ পুরস্কার। প্রথম দুই শাখায় বিজয়ী এক লাখ টাকা ও তরুণ সাহিত্যিক শাখায় বিজয়ী পাবেন পঞ্চাশ হাজার টাকা। আগামী মার্চে আনুষ্ঠানিকভাবে বিজয়ীদের পুরস্কার প্রদান করা হবে।
২০১২ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রকাশিত বই পুরস্কারের জন্য বিবেচিত হবে। অনূর্ধ ৩৫ বছর বয়সী লেখকরা তরুণ সাহিত্যিক পুরস্কারের জন্য বিবেচিত হবেন। একজন লেখক যেকোন একটি শাখায় অংশ নিতে পারবেন এবং কেবল একটি বই পুরস্কারের জন্য বিবেচিত হবে। আগামী ২০ জানুয়ারির মধ্যে ছয় কপি বই সমকাল অফিসের সাহিত্য বিভাগে পাঠাতে হবে।
প্রসঙ্গত, ২০১১ সালে এ পুরস্কার পেয়েছেন সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হক, কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হক ও তরুণ কবি দ্রাবিড় সৈকত।

No comments

Powered by Blogger.