তিসত্মায় পানি কমছেই, নেমেছে ৩ হাজার কিউসেকে- সেচ চালানো কঠিন

নীলফামারী, ২৯ জানুয়ারি পানির ক্রমহ্রাসে আশা-নিরাশার দোলাচলের কবলে পড়েছে তিসত্মা। নদীর নাব্য এতটাই হ্রাস পেয়েছে যে এখন সেচ কার্যক্রম চালানোই কঠিন হয়ে পড়বে। সংশিস্নষ্টরা কখন যে কৃষকদের বিৰোভের মুখে পড়ে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হচ্ছে।
শুক্রবার ও শনিবার সরকারীভাবে সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় এ দুই দিন পানি মাপজোখ করা হয় না বলে তিসত্মা ব্যারাজের সেচ প্রকল্পের উপসহকারী প্রকৌশলী মাঈনুদ্দিন ম-ল জানান, বৃহস্পতিবার পর্যনত্ম পানি নেমে এখন ৩ হাজার ৯০ কিউসেকে এসে দাঁড়িয়েছে। এ ছাড়া প্রতিদিনই পানি কমছে।
দেশের সবচেয়ে বড় সেচ প্রকল্প তিসত্মা ব্যারাজের প্রথম পর্যায়ের কাজ শেষে এর মাধ্যমে বৃহত্তর রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চলের এক লাখ ১১ হাজার হেক্টর জমিতে সেচ দেয়ার মতো অবকাঠামো গড়ে তোলা হয়। কিন্তু লৰ্যমাত্রা অনুযায়ী এক বারও সেচ দেয়া সম্ভব হয়নি।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানিয়েছে, সেচ প্রকল্পের পানিসহ তিসত্মাকে বাঁচিয়ে রাখতে নূ্যনতম পানি প্রয়োজন বিশ হাজার কিউসেক। কিন্তু বিগত বছরগুলোতে শুষ্ক মৌসুমে নদীর পানি প্রবাহ দু'/তিন শ' কিউসেকে নেমে আসায় তিসত্মা ব্যারাজ শুধু অকার্যকরই হয়ে পড়েনি; নদীও মরে গেছে। অভিন্ন নদীর উজানে বিজনবিভূই এলাকায় ভারত তাদের গজলডোবা ব্যারাজ দিয়ে ১৯৮৭ সাল থেকে তিসত্মার পানি একতরফা প্রত্যাহার করে আসছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত সফরের পর তিসত্মায় পানি প্রতিদিন কিছু না কিছুভাবে বৃদ্ধি পায়। সংশিস্নষ্ট সূত্র তাদের জরিপে জানায়, তিসত্মা ব্যারাজ পয়েন্টে গত ১০ জানুয়ারি পানি ছিল ৫ হাজার ২৯৪ কিউসেক, এটি বৃদ্ধি পেয়ে ২১ জানুয়ারি পানির পরিমাণ দাঁড়ায় ৬ হাজার ৩৯৬। এরপর পানি কমতে শুরম্ন করে। ২৪ জানুয়ারি ৪ হাজার ৮৮৪,
২৫ জানুয়ারি ৪ হাজার ৩০৫, ২৬ জানুয়ারি ৪ হাজার ৫৮, ২৭ জানুয়ারি ৩ হাজার ৮২৯ ও ২৮ জানুয়ারি পানি নেমে আসে ৩ হাজার ৯০ কিউসেকে। দিন দিন উজানের প্রবাহ কমতে কমতে তিসত্মা আবার যেন ধু-ধু বালুচরে পরিণত হতে শুরম্ন করেছে।
এদিকে তিসত্মা ব্যারাজের সেচের পানি দিয়ে সংশিস্নষ্ট কতর্ৃপৰ এবারের সেচনির্ভর বোরো আবাদে নীলফামারী, রংপুর ও দিনাজপুর জেলার ৬৫ হাজার হেক্টরে সেচ দেয়ার যে টার্গেট নিয়েছিল। কিন্তু যে হারে তিসত্মার পানি কমছে তাতে তারা ৩০ হাজার হেক্টরে সেচ দিতে পারবে কিনা তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। অপরদিকে তিসত্মা ব্যারাজের সংশিস্নষ্টরা এখন রয়েছে কৃষক বিৰোভের আশঙ্কায়। কৃষকরা বলছেন, এখনও পুরোপুরিভাবে তাদের সেচের প্রয়োজন হচ্ছে না। অল্প সেচে রোপা বোনার কাজ সেরে ফেলা হচ্ছে। তবে ফেব্রম্নয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে পুরোদমে সেচ লাগবে। সে সময় তিসত্মা ব্যারাজের সেচ না পেলে বোরো ৰেতের চরম ৰতি হবে এবং ফলনে দেখা দেবে বিপর্যয়।

No comments

Powered by Blogger.