টেলিমেডিসিন কার্যক্রম-গ্রামে স্বাস্থ্যসেবার প্রসার ঘটাবে

বিশেষ প্রযুক্তির কম্পিউটারের মাধ্যমে টেলিকনফারেন্সে অংশ নিয়ে প্রত্যন্ত গ্রামে বসেই রোগীরা পেতে পারেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের পরামর্শ। এ জন্য ফি গুনতে হয় মাত্র একশ' টাকা। অথচ এসব প্রতিষ্ঠিত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ পেতে রোগীকে সাধারণত সাতশ' থেকে হাজার টাকা গুনতে হয়।


তার ওপর রয়েছে গ্রাম থেকে রাজধানী বা মেট্রোপলিটন শহর অথবা জেলা শহরে গিয়ে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া পর্যন্ত যাতায়াত ও থাকা-খাওয়া বাবদ বড় অঙ্কের খরচের বিষয়। আর চিকিৎসককে দেখাতে সিডিউল পাওয়ার সমস্যা তো রয়েছেই। তার সঙ্গে রয়েছে দালালদের খপ্পরে পড়ার বিপদ। তাই গ্রামীণফোনের টেলিকনফারেন্সের মাধ্যমে গ্রামের মানুষের কাছে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের চিকিৎসা পরামর্শ প্রদান কার্যক্রম এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হবে। মঙ্গলবার সমকালে এ সংক্রান্ত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বর্তমানে দেশের চারটি স্থানে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের পরামর্শ প্রদানের মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবা সহজলভ্য করার কার্যক্রম পরিচালিত হলেও অচিরেই এর আওতা বাড়বে। আমরা আশা করব, গ্রামীণফোন গ্রামে মোবাইল ফোন পেঁৗছে দেওয়ার মাধ্যমে যেমন তথ্যপ্রবাহের ক্ষেত্রে গ্রাম ও শহরের মধ্যকার ডিজিটাল বিভক্তি বা দূরত্ব ঘোচানোয় অবদান রেখেছে, তেমনি ডিজিটাল প্রযুক্তির সুবিধা ব্যবহার করে তারা গ্রামে উন্নত চিকিৎসাসেবা পেঁৗছে দেওয়ার ক্ষেত্রেও অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে। আমাদের গ্রাম এতকাল নানাক্ষেত্রেই ছিল বঞ্চনা ও অবহেলার শিকার। সম্প্রতি সরকারের গ্রাম উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থাও গ্রামের বিভিন্ন ক্ষেত্রে উন্নয়ন কাজ করছে। গ্রামীণফোনের উন্নত চিকিৎসাসেবা প্রদানের এই উদ্যোগ এ ক্ষেত্রে আরও এক ধাপ অগ্রগতি অর্জনের স্মারক। আমরা জানি, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতেও ডাক্তাররা নিয়মিত রোগী দেখেন না। অনেক ডাক্তারই সরকারি হাসপাতাল বা স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পরিবর্তে নিজের চেম্বারে রোগী দেখাকে অগ্রাধিকার দেন। ফলে গ্রামের গরিব রোগীরা সেখানকার চিকিৎসাসেবা থেকেও বঞ্চিত হয়। টেলিকনফারেন্সের মাধ্যমে নূ্যনতম ফি দিয়ে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ সহজলভ্য করার সুযোগ সৃষ্টি হওয়ায় গরিব রোগীরাও সহজে উন্নত স্বাস্থ্যসেবা নিতে পারবে। বড় কথা, সঠিক রোগ নির্ণয়ের বিরাট কাজটি এই পদ্ধতিতে সম্পন্ন হচ্ছে স্বল্প খরচে বিনা ঝক্কিতেই। গ্রামে বসেই বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ পাওয়ার সুযোগ সৃষ্টি করার জন্য আমরা গ্রামীণফোনকে সাধুবাদ জানাই। এটাও প্রত্যাশা যে, এ ধরনের কার্যক্রমে অন্যান্য মোবাইল ফোন কোম্পানিও এগিয়ে আসবে।

No comments

Powered by Blogger.