আরও উঁচুতে 'গেরিলা' by নিথর মাহবুব

সৈয়দ শামসুল হক এবং নাসির উদ্দীন ইউসুফ, এই দুইয়ের সমন্বয়ে তৈরি চলচ্চিত্র_ এটা যে নিঃসন্দেহে অসাধারণ একটি কাজ হবে, তা প্রত্যাশা করা অস্বাভাবিক নয়। হলোও তা-ই, বাংলাদেশের মানুষের সে প্রত্যাশা পূরণে বিন্দুমাত্র ত্রুটি রাখেননি নাট্যব্যক্তিত্ব নাসির উদ্দীন ইউসুফ। তার অসামান্য নির্মাণ মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র 'গেরিলা' সম্প্রতি ১৭তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে নেটপ্যাক [নেটওয়ার্ক ফর দ্য প্রমোশন অব এশিয়ান সিনেমা] পুরস্কার
পেয়েছে। কলকাতার নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামে এই উৎসব শুরু হয়েছিল ১০ নভেম্বর থেকে। এতে ৫০টি দেশের ১৫৩টি ছবি দেখানো হয়। নেটপ্যাক [নেটওয়ার্ক ফর দ্য প্রমোশন অব এশিয়ান সিনেমা] পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন পেয়েছিল এশিয়ার বিভিন্ন দেশের ১২টি চলচ্চিত্র। গত বৃহস্পতিবার উৎসবের শেষ দিন সন্ধ্যায় কলকাতার সংস্কৃতি কেন্দ্র নন্দনে তার হাতে এই পুরস্কার তুলে দেন ভারতের বিশিষ্ট চলচ্চিত্র পরিচালক সন্দীপ রায়। এবারের উৎসবেই প্রথমবারের মতো এই নেটপ্যাক পুরস্কার প্রবর্তিত হয়েছে। 'গেরিলা'র জন্যও এটি প্রথম পুরস্কার। এটি প্রযোজনা করেছে ইমপ্রেস টেলিফিল্ম ও আড়িয়াল ক্রিয়েটিভ স্পেস। ছবিটির চিত্রনাট্য তৈরি করেছেন যৌথভাবে নাসির উদ্দীন ইউসুফ ও এবাদুর রহমান। অভিনয়ে জয়া আহসান, ফেরদৌস আহমেদ, এটিএম শামসুজ্জামান, পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়, শতাব্দী ওয়াদুদ, শম্পা রেজা, আহমেদ রুবেল প্রমুখ। এ ছাড়াও ছবিটিতে অভিনয় করেছেন সহস্রাধিক শিল্পী। সঙ্গীত পরিচালনা করেছেন শিমুল ইউসুফ। পরিবেশনায় আশীর্বাদ চলচ্চিত্র। গত বছরের পহেলা বৈশাখে এটি মুক্তি পায়। এর দৈর্ঘ্য ১৪০ মিনিট। ঢাকার ইস্কাটন, গুলশান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়; তেঁজগাও শিল্প এলাকা, ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গ, রাজারবাগ পুলিশ লাইন; সোনারগাঁওয়ের পানাম নগরী, ধামরাই, রংপুর; দিনাজপুরের পার্বতীপুর, পুবাইল, মানিকগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে প্রায় ৫ মাস কাজ করে গত বছরের ২৬ অক্টোবর ছবির চিত্রায়ন শেষ হয়। ছবিতে ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সত্য প্রকাশে কোনো হিসাব-নিকাশের ধার ধারেননি পরিচালক। নাসির উদ্দীন ইউসুফ এ ব্যাপারে তার পূর্ণ অভিজ্ঞতাকেই কাজে লাগিয়েছেন। পরিচালনা, স্ক্রিপ্ট, মেকআপ এবং অভিনয় মিলিয়ে নিঃসন্দেহে 'গেরিলা' বাংলা চলচ্চিত্রে একটি সফল উদাহরণ হয়ে টিকে থাকবে।

No comments

Powered by Blogger.