ডিসিসি বিভক্ত করতে সংসদে বিল উত্থাপন-স্বতন্ত্র সদস্যের বিরোধিতা

ঢাকা সিটি করপোরেশনকে (ডিসিসি) বিভক্ত করতে গতকাল বুধবার জাতীয় সংসদে নতুন একটি বিল উত্থাপন করা হয়েছে। বহুল আলোচিত 'স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) (সংশোধন) বিল, ২০১১' নামের এই বিলটি উত্থাপনের সময় বিরোধিতা করেন স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য মো. ফজলুল আজিম। এ বিলটি পাস হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মেয়র ও কাউন্সিলরদের পদ শূন্য হবে। এরপর সরকার নতুন দুটি সিটি করপোরেশনে প্রশাসক নিয়োগ করবেন। বিলে ডিসিসি
বিভক্ত করে 'ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন' এবং 'ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন' নামে দুটি সিটি করপোরেশন করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
স্পিকার অ্যাডভোকেট আবদুল হামিদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সংসদ অধিবেশনে এলজিআরডিমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের অনুপস্থিতিতে প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক বিলটি উত্থাপন করেন। অধিকতর পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও অধিকতর যাচাই-বাছাই করে সাত দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য বিলটি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়েছে।
বিরোধী দলহীন সংসদে বিলটি উত্থাপনের সময় বিরোধিতা করেন একমাত্র স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য মো. ফজলুল আজিম। তিনি বলেন, 'ডিসিসিতে সমস্যা অনেক। বিভক্তিকরণ কোনো সমাধান নয়। এরই মধ্যে সর্বস্তরের জনগণ সরকারের এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়েছে। তাই আমি বিলটি উত্থাপনের বিরোধিতা করছি।'
জবাবে প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, মানুষের সঙ্গে সহজ যোগাযোগ স্থাপন ও জনগণের সেবা নিশ্চিত করার জন্য ডিসিসিকে বিভক্ত করা দরকার। জনগণের স্বার্থের কথা বিবেচনা করেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, বিলটি নিয়ে সংসদীয় কমিটিতে আলোচনা হবে। এরপর আবারও সংসদে আলোচনা হবে। তখন বিলে কোনো ত্রুটি থাকলে তা সংশোধন করা যাবে।
সংসদে উত্থাপিত বিলটিতে বলা হয়েছে_ডিসিসির ১ থেকে ২৩, ৩৭ থেকে ৪৭ এবং ৫৪ ও ৫৫ নম্বর ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত হবে 'ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন'। আর ২৪ থেকে ৩৬, ৪৮ থেকে ৫৩ এবং ৫৬ থেকে ৯২ নম্বর ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত হবে 'ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন'।
বিলটির উদ্দেশ্য ও কারণ সম্পর্কে লিখিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বর্তমানে ডিসিসির জনসংখ্যা এক কোটিরও বেশি। এর আয়তন প্রায় ১৫০ বর্গকিলোমিটার। এই বৃহৎ মহানগরীর বিপুল জনসংখ্যার কাছে একটি কেন্দ্র থেকে সেবা দেওয়া অত্যন্ত কঠিন। ফলে জনসাধারণ কাঙ্ক্ষিত নাগরিক সেবা পাচ্ছেন না। ডিসিসির মোট ওয়ার্ড ৯২টি। মহিলাদের জন্য ৩১টি সংরক্ষিত আসন নিয়ে মোট কাউন্সিলর সংখ্যা ১২৩। এ অবস্থায় নাগরিক সেবা কার্যক্রম আরো সুদৃঢ় ও যথাযথ পর্যায়ে উন্নীত করতে ডিসিসিকে দুটি সিটি করপোরেশনে বিভক্ত করা আবশ্যক। ডিসিসিকে উত্তর ও দক্ষিণে বিভক্ত করে পৃথক দুটি সিটি করপোরেশন গঠনের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। এ উদ্দেশ্য পূরণে স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) আইন, ২০০৯ (২০০৯ সালের ৬০ নম্বর আইন)-এর সংশোধন দরকার।

No comments

Powered by Blogger.