সিরিয়াকে দ্রুত রক্তপাত বন্ধ করতে বলেছে আরব লিগ

আরব লিগভুক্ত দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা সিরিয়াকে বলেছেন, বেশি দেরি হওয়ার আগেই দেশটির মাসব্যাপী রক্তপাত বন্ধ করা উচিত। তাঁরা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, সিরিয়ার রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংস্কার কর্মসূচির জন্য আরব লিগের মহাসচিব নাবিল আল আরাবিকে দামেস্কে পাঠানো হবে।
গতকাল রোববার মিসরের রাজধানী কায়রোয় আরব দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
আল আরাবি কবে সিরিয়া সফর করবেন, তা স্পষ্ট করে জানানো হয়নি। তবে রাশিয়া জানিয়েছে, আজ সোমবার ঊর্ধ্বতন এক দূতকে তারা দামেস্কে পাঠাচ্ছে। দেশটির ইতার তাস বার্তা সংস্থা এ সংবাদ জানিয়েছে।
সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের পদত্যাগের দাবিতে দেশটির সাধারণ নাগরিকেরা পাঁচ মাস ধরে বিক্ষোভ করছেন। কিন্তু প্রেসিডেন্ট আসাদ বিক্ষোভ দমনের জন্য ট্যাংক, ভারী অস্ত্রশস্ত্রসহ সেনাবাহিনী ব্যবহার করছেন। জাতিসংঘের মতে, সিরিয়ায় এ পর্যন্ত দুই হাজার ২০০ জন সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন। এ অবস্থায় সিরিয়ার পরিস্থিতি নিয়ে গতকাল প্রথমবারের মতো আনুষ্ঠানিক বৈঠক করল আরব লিগ।
সিরিয়া জানিয়েছে, সংস্কার কর্মসূচির জন্য তারা কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছে। সহিংসতার জন্য জঙ্গিরা দায়ী বলে দাবি করে তারা। সিরিয়ার সঙ্গে তুরস্ক, লেবানন, ইসরায়েল, জর্ডান ও ইরাকের সীমান্ত রয়েছে।
আরব লিগের বৈঠকের পর সংবাদ সম্মেলন হওয়ার কথা থাকলেও তা বাতিল করা হয়। পরে এক বিবৃতিতে আরব দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা জানান, সিরিয়ায় হাজার খানেক লোক হতাহত হয়েছে। সেখানকার বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে আরব লিগ গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে। সিরিয়ার অবস্থা এ অঞ্চলের পরিস্থিতি জটিল করে তুলেছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আরব লিগ গুরুত্ব দিয়ে বলেছে যে সিরিয়ার স্থিতিশীলতা আরব বিশ্ব এবং পুরো অঞ্চলের স্থিতিশীলতার মূল ভিত্তি।’ বিশ্লেষকদের মতে, দামেস্ককে শান্ত রাখতে আরব লিগ ওই কথা বলেছে।
এর আগে আরব লিগের বর্তমান চেয়ারম্যান ওমানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইউসুফ বিন আলাবি বলেন, সিরিয়ার স্থিতিশীলতার জন্য বৈঠকটি গুরুত্বপূর্ণ। প্রথম পর্বে তিনি বলেন, ‘সিরিয়ার জনগণের জন্য স্থিতিশীলতা আনতে আমরা দর-কষাকষি করব।’
আরব লিগের সদর দপ্তরের সামনে বিক্ষোভ: এদিকে কায়রোতে আরব লিগের সদর দপ্তরের সামনে বিক্ষোভ করেছেন সিরিয়া ও ইয়েমেনের গণতন্ত্র-সমর্থিত শতাধিক কর্মী। আরব দেশগুলোর মন্ত্রীদের আগমনের কিছুক্ষণ আগে তাঁরা বিক্ষোভ করে দুই দেশের নেতাদের পদত্যাগের দাবি জানান। ইয়েমেনে কয়েক মাস ধরে প্রেসিডেন্ট আলী আবদুল্লাহ সালেহর বিরুদ্ধে গণবিক্ষোভ হচ্ছে।
সিরিয়ায় নিরাপত্তা বাহিনীর হামলা চলছে: সিরিয়ার আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, শনিবার দামেস্কের কফর সাসেহতে একটি মসজিদে নামাজ পড়ে বের হওয়ার সময় নিরাপত্তা বাহিনী একদল বিক্ষোভকারীর ওপর হামলা চালায়। এতে একজন নিহত এবং মসজিদের ইমামসহ ১০ জন আহত হন।
গণতন্ত্র-সমর্থিত একটি বিক্ষোভে গুলি চালানোর আদেশ প্রত্যাখ্যান করা সেনাদের সঙ্গে শনিবার রাতভর দামেস্কের উত্তর-পূর্ব উপকণ্ঠ হারাস্তায় বন্দুকযুদ্ধ করেছে প্রেসিডেন্ট আসাদের অনুগত সেনারা। স্থানীয় বাসিন্দারা গতকাল এ কথা জানিয়েছেন।

No comments

Powered by Blogger.