উল্টো চতুর্থ হলো আবাহনী

পেশাদার ফুটবল লিগে টানা চতুর্থ শিরোপা জয়ের অভিযানে নেমে চতুর্থ হলো ঢাকা আবাহনী। কাল শেষ ম্যাচে ব্রাদার্সকে ১-০ গোলে হারিয়েও তারা ভাগ্য বদলাতে পারেনি। চতুর্থ হয়েই শেষ করল লিগ। আবাহনীর ইতিহাসে এমন বাজে ফল হয়েছে আর মাত্র একবার। ১৯৮০ সালে ঢাকা লিগে চতুর্থ হয়েছিল আকাশি-নীলরা।
লিগের শেষ ম্যাচটি কাল হওয়ার কথা ছিল বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে। কিন্তু আগের রাতের ভারী বর্ষণে মাঠ অনুপযুক্ত হয়ে পড়ায় ম্যাচটি সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় কমলাপুরে। আগামীকাল বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের বিশ্বকাপ প্রাক-বাছাই ম্যাচটাও অবশ্য ভেন্যু বদলাতে ভূমিকা রেখেছে। কিন্তু কমলাপুর স্টেডিয়ামও কাল খেলার জন্য ঠিক উপযুক্ত ছিল না।
কমলাপুরে তখন চলছিল ঢাকা জুনিয়র ও বিকেএসপির তৃতীয় বিভাগের ম্যাচ। মিনিট দশেক খেলাও গড়িয়েছিল। কিন্তু সেটি বন্ধ রেখে শুরু করা হয় আবাহনী-ব্রাদার্স ম্যাচ। থিকথিকে কাদা ভরা মাঠে কোনো দলই খেলতে পারছিল না স্বাভাবিক খেলা। আবাহনীর থুয়াম ফ্রাঙ্ক নষ্ট করেছেন অন্তত গোটা চারেক সুযোগ। সুযোগ নষ্ট করেছেন ব্রাদার্সের কিংসলেও। ৮০ মিনিটে আবাহনী গোলরক্ষক জিয়াকে একা পেয়েও বল বাইরে মারেন নাইজেরিয়ান ফরোয়ার্ড। ঠিক দুই মিনিট পরই প্রতি-আক্রমণ থেকে গোল করেছেন আবাহনীর ঘানাইয়ান স্ট্রাইকার আউডু ইব্রাহিম। তাঁকে বল বানিয়ে দিয়েছিলেন আমিনু। বাকি সময়ে অনেক চেষ্টা সত্ত্বেও গোল শোধ করতে পারেনি ব্রাদার্স।
গত বছর ২৭ ডিসেম্বর শুরু হওয়া লিগ শেষ হতে পারত আরও আগেই। কিন্তু লিগ নানা কারণে বন্ধ থেকেছে বারবার। কুয়েতের বিপক্ষে অলিম্পিক প্রাক-বাছাই ম্যাচ, স্বাধীনতা কাপ, কম্বোডিয়ায় আবাহনীর এএফসি প্রেসিডেন্টস কাপে অংশ নেওয়া, বৃষ্টি, হরতাল অব্যাহতভাবে খেলা চলতে দেয়নি। বিশ্বকাপ ক্রিকেটের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আগে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম সংস্কারের জন্য ছেড়ে দিলেও খেলা চলেছে কমলাপুরে।
নানা নাটকীয়তায় ভরা লিগে দুই প্রধান দল আবাহনী-মোহামেডানের ভরাডুবি হয়েছে। আবাহনী হলো চতুর্থ, গতবারের রানার্সআপ মোহামেডান ষষ্ঠ। পাতানো খেলা নিয়ে সরগরম ছিল লিগ, এখনো পাতানো ম্যাচ খেলার অভিযোগে শিরোপা জয়ের উৎসব করতে পারছে না কোটি টাকার নবাগত দল শেখ জামাল। লিগটা জমেছিল ভালোই। কারা চ্যাম্পিয়ন হবে, সেটা শেষ চার রাউন্ডের আগেও বোঝা যায়নি। শেখ জামাল নিজেদের শেষ ম্যাচে গিয়েই শিরোপা নিশ্চিত করেছে। যদিও পাতানো খেলার অভিযোগ তাদের মাথার ওপর ঝুলছে।
বিদেশিদের দাপটের সাক্ষী লিগে স্থানীয়দের মধ্যে ব্যতিক্রম বলতে মিঠুন চৌধুরী। ১২টি হ্যাটট্রিকের একটি করেছেন মুক্তিযোদ্ধার এই স্ট্রাইকার। গোলদাতা তালিকার সেরা পাঁচেও সবেধন নীলমণি মিঠুন। বেশির ভাগ ম্যাচে সাইডবেঞ্চে কাটিয়েছেন জাতীয় দলের খেলোয়াড় জাহিদ হাসান এমিলি, এনামুল, জাহিদ, আলফাজ, তৌহিদুল আলমরা। অনেক আক্ষেপেরই এক লিগ গেল তাদের।
কোচ নিয়েও কম নাটক হয়নি। লিগে প্রথম ম্যাচের পরই সার্বিয়ান কোচ জোরান কার্লোভিচকে কার্যত বিদায় করেছে শেখ জামাল। এরপর পাকির আলী এসেই তাদের দেখিয়েছেন সাফল্যের রাস্তা। আবাহনীর ইরানি কোচ আলী আকবর পোরমুসলিমিও লিগ শেষ না করে চলে গেছেন।

No comments

Powered by Blogger.