গ্রিসে ব্যয়সংকোচন পরিকল্পনার প্রতিবাদে দুই দিনের ধর্মঘট শুরু

গ্রিসে সরকারের ব্যয়সংকোচন পরিকল্পনার প্রতিবাদে গতকাল মঙ্গলবার ৪৮ ঘণ্টার সাধারণ ধর্মঘট শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে প্রস্তাবিত ব্যয়সংকোচন প্যাকেজের ওপর পার্লামেন্টে ভোটাভুটির প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
দেশটির প্রধানমন্ত্রী জর্জ পাপানদ্রু গত সোমবার বলেন, দুই হাজার ৮০০ কোটি ইউরোর ব্যয়সংকোচন প্যাকেজ পাস হলেই কেবল গ্রিস আবারও নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারবে।
সরকার যদি ভোটাভুটিতে হেরে যায়, তাহলে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) এক হাজার ২০০ কোটি ইউরোর ঋণ স্থগিত করে দিতে পারে।
সরকারের ব্যয়সংকোচন পরিকল্পনার প্রতিবাদে গতকাল হাজার হাজার বিক্ষোভকারী রাজধানী এথেন্সের রাস্তায় নেমে আসে। প্রায় দুই হাজার মানুষ পার্লামেন্টের বাইরে সিনটাগমা স্কয়ারে বিক্ষোভ দেখায়। এ সময়তাঁরা ড্রাম বাজিয়ে সরকারে বিরোধী বিভিন্ন শ্লোগান দেয়। প্রথমে ধর্মঘট শান্তিপূর্ণথাকলেও পরে সহিংসতায়রূপ নেয়।বিক্ষোভকারীরা পুলিশের ওপর ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করলে পুলিশ পাল্টা ধর্মঘটিদের ওপর কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে।
পাঁচ হাজারেরও বেশি পুলিশ সদস্যকে গতকাল মঙ্গলবার এথেন্সের কেন্দ্রস্থলে মোতায়েন করা হয়।
ধর্মঘটে বেশির ভাগ পরিষেবার বিঘ্ন ঘটছে অথবা বন্ধ হয়ে গেছে। রাজধানীর গণপরিবহন-ব্যবস্থা অচল হয়েপড়েছে। চিকিৎসক, অ্যাম্বুলেন্সের চালক, সাংবাদিক, এমনকি অভিনেতা-অভিনেত্রীরাও ধর্মঘটে যোগ দেন।
ধর্মঘটের কারণে বিমান চলাচলেও বিঘ্ন ঘটেছে। এথেন্স আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের অনেকগুলো ফ্লাইট বাতিলকরা হয়েছে।
ট্রেন, বাস ও নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে। এথেন্সে শুধু পাতাল রেল চলাচল করছে। এথেন্সের মানুষ যাতে বিক্ষোভে যোগ দিতে পারে, সে জন্য পাতাল রেলের কর্মীরা ধর্মঘট না করার সিদ্ধান্ত নেন।
শ্রমিক ইউনিয়নগুলো বলছে, সরকারের ব্যয়সংকোচন পরিকল্পনা কার্যকর হলে কম বেতনের লোকজনের ওপর কর আরোপ করা হবে।
বিক্ষোভকারীরা বলছে, এমপিরা যাতে পার্লামেন্ট ভবনে প্রবেশ করতে না পারেন, সে জন্য তারা পার্লামেন্ট ভবন ঘিরে রাখবে। আজ বুধবার ও আগামীকাল বৃহস্পতিবার আলাদা ভোটাভুটির মাধ্যমে ব্যয়সংকোচন প্যাকেজ ও বাস্তবায়ন আইন পাস করার কথা।
জনমত জরিপে দেখা যাচ্ছে, গ্রিসের ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ মানুষ সরকারের ব্যয়সংকোচন পরিকল্পনার বিরুদ্ধে।ব্যাংকের কর্মী কলি পাতৌনা বলেন, ‘তারা যা করার চেষ্টা করছে, আমরা তার বিরোধিতা করছি।’
প্রধানমন্ত্রী পাপানদ্রু সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, ব্যয়সংকোচন প্রকল্প পাস না হওয়ার অর্থ হলো জাতীয় ‘কোষাগার’ কয়েক দিনের মধ্যেই শূন্য হয়ে যাওয়া। তিনি এমপিদের প্রতি ‘দেশপ্রেমমূলক দায়িত্ব’ পালনের আহ্বান জানান।

No comments

Powered by Blogger.