পরিবার আমায় ডাকছে: কারস্টেন

ভারতের বিশ্বকাপ জয়ে দক্ষিণ আফ্রিকান কোচ গ্যারি কারস্টেনের অবদান অনেক। গত তিন বছর ধরে প্রচণ্ড পরিশ্রম করেই তিনি দলকে দাঁড় করিয়েছিলেন। তাঁর সেই অবদান শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেছেন শচীন টেন্ডুলকার ও যুবরাজ সিংয়ের মতো সিনিয়র খেলোয়াড়েরা। শচীন টেন্ডুলকার তো একপ্রকার অনুরোধের সুরেই জানিয়েছে দিয়েছেন, কারস্টেন তাঁর কাজ চালিয়ে গেলে তিনি ব্যক্তিগতভাবে সবচেয়ে খুশি হবেন।
একটি দেশকে ২৮ বছর পর বিশ্বকাপ জেতানোর গর্ব, খেলোয়াড়দের অনুরোধ কোনো কিছুই অবশ্য কারস্টেনের প্রস্থান ঠেকিয়ে রাখতে পারছে না। কারণ, তিনি যে তাঁর পরিবারকে জানিয়ে দিয়েছেন, ‘আমি আর তোমাদের ছেড়ে থাকব না।’
ভারতীয় সিনিয়র খেলোয়াড়দের অনুরোধ ছুঁয়ে গেছে কারস্টেনকেও। তিনি বলেছেন, ‘ব্যাপারটিতে আমি খুবই সম্মানিত বোধ করছি। এমন চমত্কার একটি দলকে ছেড়ে যেতে আমার খুবই কষ্ট হবে। কিন্তু, সত্যি বলতে কী, আমি নিরুপায়। পরিবারকে কথা দিয়ে ফেলেছি। আমাকে এখন তাদের কাছে ফিরে যেতে হবেই।’
কারস্টেন সবচেয়ে বেশি ভাবছেন তাঁর দুই ছেলেকে নিয়ে। সাত ও চার বছর বয়সী দুই ছেলের পাশে থাকাটা এ মুহূর্তে জরুরি বলেও মনস্থির করেছেন তিনি। ‘আমার একটি ছেলের বয়স সাত আরেকটির চার। এ সময় তাঁর মনে-প্রাণেই চাইবে, তাদের বাবাকে পাশে পেতে।’ বাবা কারস্টেনের অনুভূতি।
ভারতীয় দলের কোচ হিসেবে তিনটি বছর কাটিয়ে দেওয়ার অভিজ্ঞতা তাঁর দারুণ বলেই জানিয়েছেন কারস্টেন। সবচেয়ে বড় অনুভূতিটি বিশ্বকাপ জয়ের। অতুলনীয় এ অভিজ্ঞতাকে সঙ্গী করে তিনি এখন চলে যাবেন নিজের দেশ দক্ষিণ আফ্রিকায়।
‘গত তিন বছর ছিল আমার জীবনের অন্যতম স্মরণীয় অধ্যায়। ভারতীয় দলের সঙ্গে কাজ করতে পেরে আমি আনন্দিত, একই সঙ্গে গর্বিত। বিশ্বের অন্যতম সব সেরা ক্রিকেটারদের সঙ্গে কাজ করতে পারার অভিজ্ঞতা ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়।’
শচীন টেন্ডুলকার ও যুবরাজ সিং ভারতীয় দলকে বিশ্বকাপ জয়ের উপযোগী করে গড়ে তুলতে তাঁর অবদানের দারুণ প্রশংসা করেছেন। শচীন বলেছেন, ‘গ্যারি প্রতিদিন ব্যাটসম্যানদের বল করত। এ সংখ্যা ২০০-৩০০ তো হবেই। সে ছিল দুর্দান্ত এক “বোলিং মেশিন।” ওকে আমরা খুবই মিস করব।’
যুবরাজ সিং গ্যারি কারস্টেনের অবদানকে ‘পিতৃতুল্য’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। বলেছেন, ‘একজন বাবা যেমন তাঁর সন্তানের ভালো-মন্দের খোঁজ-খবর নেন, গ্যারি ঠিক তেমনই।’
ভারতের কোচের দায়িত্ব ছেড়ে দিলেও এ মুহূর্তে গ্যারি কারস্টেনকে খুব করে নিজেদের দলের কোচ করতে চাচ্ছে, দক্ষিণ আফ্রিকা। এর পাশাপাশি আইপিএলে মুম্বাই ইন্ডিয়ানসের কোচ হওয়ারও যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে তাঁর।
এদিকে একটি বার্তা সংস্থা পরিবেশিত এক খবরে জানা গেছে, গ্যারি কারস্টেন অস্ট্রেলিয়ার ঘরোয়া ক্রিকেটের একটি দলের কোচ হতে পারেন। তবে তা খুবই সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য।

No comments

Powered by Blogger.