এবার হেরেই বসল শেখ জামাল

মাঝি ছাড়া নৌকার যে অবস্থা, শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবেরও হয়েছে ঠিক তাই। নৌকার পাল তোলা, বাতাসও অনুকূলে কিন্তু গন্তব্য জানা নেই। জাতীয় দলের একগুচ্ছ ফুটবলার সমন্বিত কোটি টাকার দল—তবুও কেমন যেন ছন্নছাড়া। গ্রামীণফোন চতুর্থ বাংলাদেশ লিগের উদ্বোধনী দিনেই কোচবিহীন দলটির ড্র দিয়ে শুরু। একটি মাত্র জয়ের পর, গত ম্যাচে চট্টগ্রাম আবাহনীর সঙ্গে ড্র, কাল তো হেরেই বসল আরামবাগের কাছে। পেনাল্টি থেকে গোল করলেন গিনির মিডফিল্ডার বাঙ্গুরা ইসমাইল। কোচবিহীন দলের যে হাল হওয়ার সেটিই হলো। ক্লাব সভাপতি মনজুর কাদেরের স্বেচ্ছাচারিতার ফলই যেন হাতেনাতে পেল বাংলাদেশ লিগের নবাগত দলটি।
ক্লাব সভাপতির সঙ্গে চূড়ান্ত একাদশ গড়া নিয়ে বিতর্কে চাকরি খোয়ান সার্বিয়ান কোচ জোরান কার্লেভিচ। এর পর থেকে চারটি ম্যাচে অনানুষ্ঠানিকভাবে কোচ থেকেছেন ক্লাব সভাপতি। কাল কোচ হিসেবে নিয়ে আসা হলো ঢাকার মাঠের একসময়ের দাপুটে ফুটবলার পাকির আলীকে। প্রথমার্ধে এই শ্রীলঙ্কান বসেছিলেন ভিআইপি গ্যালারিতে। দ্বিতীয়ার্ধে দলের করুণ অবস্থা দেখে চলে আসেন ডাগ-আউটে। তার পরও শেষ রক্ষা হয়নি। পুরো তিন পয়েন্ট খুইয়েই মাঠ ছাড়তে হয়েছে আমিনুল-এনামুলকে। আর লিগে আরামবাগ পেয়েছে প্রথম জয়। চার ম্যাচে এক জয়, এক ড্র থেকে চার পয়েন্ট তাদের। বিপরীতে চার ম্যাচে এক জয়, দুই ড্র ও এক পরাজয়ে পাঁচ পয়েন্ট শেখ জামালের। এখন পর্যন্ত লিগে অপরাজিত রয়েছে একমাত্র শেখ রাসেল ক্রীড়াচক্র।
আগের তিন ম্যাচের একটিতেও গোল না পাওয়া এনামুল মরিয়া ছিলেন গোলের জন্য। প্রথম মিনিটেই আরামবাগের রক্ষণদুর্গ ভেঙে ঢুকে পড়েছিলেন বক্সে। কিন্তু সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে পারেননি, বল পাঠিয়ে দেন মাঠের বাইরে।
তবে সুযোগ কাজে লাগিয়েছে আরামবাগ। ৩৪ মিনিটে ইসমাইল বক্সে ঢুকতেই তাঁকে পেছন থেকে ট্যাকল করেন শেখ জামালের ক্যামেরুনিয়ান খেলোয়াড় মোডো। পেনাল্টি দেন রেফারি আবদুল হান্নান। পেনাল্টি থেকে গোল করতে পা কাঁপেনি ইসমাইলের (১-০)।
প্রথমার্ধে ১-০-তে এগিয়ে থাকা আরামবাগ দ্বিতীয়ার্ধে হয়ে পড়ে অতিরক্ষণাত্মক। আরামবাগকে আক্রমণে আক্রমণে চিড়েচ্যাপ্টা করেও শেখ জামাল গোল পায়নি গোলরক্ষক বিপ্লবের কারণে। অনেকগুলো সেভ করেছেন বিপ্লব। তবে কয়েকটি সুযোগও নষ্ট করেছেন এনামুল। কোচ পাকির আলীর ময়নাতদন্তে ধরা পড়েছে স্ট্রাইকারদের দুর্বলতা, ‘স্ট্রাইকিং সমস্যার কারণেই দল হেরেছে। তবে আমি আশাবাদী, এই দলকে চ্যাম্পিয়ন করতে পারব।’ শেখ জামালের মতো বড় দলকে হারিয়ে আরামবাগ শিবিরে উল্লাস। কোচ মিলন মোল্লা সব কৃতিত্ব দিয়েছেন প্রথম ম্যাচে খেলতে নামা ইসমাইলকে, ‘আমি আশাবাদী ছিলাম নতুন খেলোয়াড় ইসমাইলকে নিয়ে। ও দারুণ খেলেছে।’
শেখ জামালের নিস্তব্ধ ড্রেসিংরুমে ওয়ালী ফয়সাল ও জাহিদ হোসেনকে (এমিলি) দেখা গেল বিষণ্ন মুখে। ইনজুরির কারণে তাঁরা খেলেননি। এক পাশে চুপচাপ বসে ছিলেন অধিনায়ক আমিনুল। কাছে যেতেই বললেন, ‘আমাদের সবাই ভালো খেলেছে। শুধু গোলই করতে পারিনি আমরা।’
আরামবাগ: বিপ্লব, ইমদাদুল, কাশেম, মোস্তফা কাবা, দীন মোহাম্মদ, শরীফ, ফয়সাল, সুবাইর মোহাম্মদ, জাহিদুল (রাশেদ), ইসমাইল, বেঞ্জামিন কুপার।
শেখ জামাল ধানমন্ডি: আমিনুল, আরিফুল, ড্রাগন, সুজন, মিশু, জাহিদ (আবদুল বাতেন), মোডো, মামুনুল, শাকিল (নাসির), তৌহিদুল, এনামুল।

No comments

Powered by Blogger.