ম্যাথুস-মালিঙ্গার অসাধ্য সাধন

৮৬ রানে শ্রীলঙ্কার ৬ উইকেট পড়ে যাওয়াতেই কথাটা একবার উঠল। ২৪০ স্কোর করে সবচেয়ে বেশি ব্যবধানে জেতার রেকর্ড কোনটি? সেই আলোচনা মাঝখানে একটু ঝিমিয়ে পড়ার পর শুরু হলো নতুন আলোচনা, এই কি তবে অস্ট্রেলিয়ার ঘুরে দাঁড়ানোর শুরু। শ্রীলঙ্কা তখন ১০৭ রানে হারিয়ে ফেলেছে অষ্টম উইকেট। অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস আছেন বটে, কিন্তু সঙ্গী লাসিথ মালিঙ্গার যে সর্বোচ্চ ওয়ানডে ইনিংসটা ১৬ রানের। অস্ট্রেলিয়ার জয় তখন যেন নিশ্চিতের চেয়েও বেশি কিছু।
সেখান থেকে সেই মালিঙ্গাকে নিয়েই অসাধ্য সাধন করলেন ম্যাথুস। নবম উইকেটে ম্যাথুস-মালিঙ্গা ১৩২ রানের রেকর্ড জুটিই (আগের রেকর্ডটি ছিল ২৭ বছর পুরোনো, কপিল-কিরমানির) ১ উইকেটে জেতাল শ্রীলঙ্কাকে। অস্ট্রেলিয়াকে তাদেরই মাটিতে প্রথম টি-টোয়েন্টি পরাজয়ের স্বাদ দেওয়ার পর এখন তিন ওয়ানডে সিরিজের প্রথমটিও জিতে নিল সফরকারীরা। টেস্ট-ওয়ানডে-টি-টোয়েন্টি মিলে এটি অস্ট্রেলিয়ার টানা ষষ্ঠ পরাজয়।
থিসারা পেরেরার তোপে কোণঠাসা হয়ে পড়া অস্ট্রেলিয়া প্রথমে ব্যাট করে তুলেছিল ২৩৯ রান। টানা তৃতীয় ফিফটি তুলে নেওয়া মাইক হাসি অপরাজিত ছিলেন ৭১ রানে। পর পর দু বলে হাডিন-হোয়াইটকে ফেরানো থিসারা হ্যাটট্রিক না পেলেও ক্যারিয়ারে দ্বিতীয়বারের মতো ৫ উইকেট পেয়েছেন।
তার পরও মেলবোর্নে জয়ই দেখতে পাচ্ছিল মাইকেল ক্লার্কের দল। ১৯ রানে দুই ওপেনারকে হারিয়ে শুরু করা শ্রীলঙ্কা একপর্যায়ে ম্যাচ থেকে ছিটকেই গিয়েছিল ৮৬ রানে ৬ উইকেট পড়ে যাওয়ায়। অভিষেকেই ৪ উইকেট নিয়ে শ্রীলঙ্কার মেরুদণ্ড ভেঙে দিয়েছিলেন জেভিয়ার ডোহার্টি। কিন্তু ম্যাথুস-মালিঙ্গা ক্লার্কদের মুখের গ্রাসটা কেড়ে নিয়ে গেলেন।
প্রথম ওয়ানডে ফিফটি করে মালিঙ্গা আউট হওয়ার পর নতুন করে জমে ওঠে উত্তেজনা। কিন্তু জয়সূচক রানটা মুরালির ব্যাট থেকেই আসবে, নিয়তি বুঝি আগে থেকেই ঠিক করে রেখেছিল। ফাইন লেগ দিয়ে চার মেরে দুশ্চিন্তার কুয়াশা সরিয়ে জয়ের হাসি এনে দিয়েছেন শেষ অস্ট্রেলিয়া সফরে আসা এই স্পিনার।
সংক্ষিপ্ত স্কোর: অস্ট্রেলিয়া: ৫০ ওভারে ২৩৯/৮ (হাসি ৭১*, হাডিন ৪৯; পেরেরা ৫/৪৬, মুরালিধরন ০/৩৬)। শ্রীলঙ্কা: ৪৪.২ ওভারে ২৪৩/৯ (ম্যাথুস ৭৭*, মালিঙ্গা ৫৬, সাঙ্গাকারা ৪৯; ডোহার্টি ৪/৪৬)। ফল: শ্রীলঙ্কা ১ উইকেটে জয়ী। ম্যাচ-সেরা: অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস।

No comments

Powered by Blogger.