ভেঙে গেছে কংগ্রেস-তৃণমূল জোট

পশ্চিমবঙ্গের ৮১টি পৌরসভা এবং কলকাতা পৌর করপোরেশনের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আসন ভাগাভাগি প্রশ্নে অবশেষে ভেঙে গেছে কংগ্রেস-তৃণমূল কংগ্রেস জোট। উভয় দলই শেষ পর্যন্ত পৃথকভাবে প্রার্থীতালিকা ঘোষণা করায় স্পষ্ট হয়ে গেছে এই ভাঙন। এই ভাঙনের জন্য তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দায়ী করেছে কংগ্রেসকে। আর কংগ্রেস দায়ী করেছে তৃণমূল কংগ্রেসকে। রাজ্যব্যাপী পরিবর্তনের হাওয়ায় এবার পৌরসভা নির্বাচনে কংগ্রেস-তৃণমূল জোট বামফ্রন্টকে হারানোর একটি সুযোগ পেয়েছিল। এই ভাঙনের ফলে বাড়তি সুবিধা এনে দিল বামফ্রন্টকে।
কংগ্রেস ও তৃণমূল কংগ্রেস জোট বেঁধে ২০০৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে লড়েছিল। জোট বাঁধার কারণে ২০০৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনেও সাফল্য পেয়েছিল তারা। একইভাবে জোট বেঁধে চলছিল ৮১টি পৌরসভার নির্বাচনের প্রস্তুতি। কিন্তু ক্ষমতার মোহই এখন সেই জোটে ভাঙন ধরিয়েছে।
৩০ মে এই ৮১টি পৌরসভা ও কলকাতা পৌর করপোরেশনের নির্বাচন। আর মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন ৪ মে। বামফ্রন্ট ইতিমধ্যে রাজ্যের বিভিন্ন পৌরসভা এবং কলকাতা পৌর করপোরেশনের ১৪১টি আসনের প্রার্থিতা ঘোষণা করেছে। অথচ কংগ্রেস ও তৃণমূল কংগ্রেস শেষ পর্যন্ত আসন-সমঝোতায় পৌঁছাতে পারেনি। কংগ্রেস চেয়েছে ৫১টি আসন। কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেসকে ছেড়েছে মাত্র ২৫টি আসন। এই ২৫টি ছেড়ে বাকি আসনে বুধবার প্রার্থিতাও ঘোষণা করে তৃণমূল। এই সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারেনি কংগ্রেস। তারা বলেছে, তাদের ৫১টি আসন দেওয়া না হলে তারা ৮৮টি আসনে লড়বে। শেষ পর্যন্ত শনিবার কংগ্রেসও ঘোষণা করে দেয় ৮৮টি আসনের প্রার্থীতালিকা। বলা হয়, বাকি ৫৩টি আসন রাখা হয়েছে তৃণমূলের জন্য।
এ ঘটনায় দারুণ ক্ষুব্ধ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শনিবারই দিল্লি থেকে ঘোষণা দেন, তাঁর দল তৃণমূল কংগ্রেস রাজ্যের সব পৌরসভা এবং কলকাতা পৌর করপোরেশন নির্বাচনে এককভাবে লড়বে। একই সঙ্গে মমতা আরও বলেছেন, ‘আমরা জোট চেয়েছিলাম। জোট ভেঙেছে কংগ্রেস। এতে আমরাই লাভবান হব।’ অন্যদিকে কংগ্রেস বলেছে, জোট রাজনীতিতে এবার বিশ্বাস ভঙ্গ করেছে তৃণমূল। কংগ্রেস-তৃণমূল জোট ভেঙে যাওয়ায় বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু সতর্কতার সঙ্গে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেছেন, এ নিয়ে বামদের উত্ফুল্ল হওয়ার কারণ নেই।

No comments

Powered by Blogger.