যুক্তরাষ্ট্রের ৯০টি নগরে বিক্ষোভ

অভিবাসনবিরোধী কালো আইন বাতিলের দাবিতে যুক্তরাষ্ট্রের ৯০টি নগরে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ হয়েছে। ১ মে আন্তর্জাতিক শ্রম দিবসে যুক্তরাষ্ট্রের রাজপথ ছিল বিক্ষোভকারীদের দখলে। শনিবার দিনভর অ্যারিজোনা থেকে নিউইয়র্ক পর্যন্ত লাখো মানুষের পৃথক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সম্প্রতি অ্যারিজোনা অঙ্গরাজ্যে প্রণীত অভিবাসনবিরোধী কালো আইন বাতিলের সম্মিলিত স্লোগান উঠেছে দেশজুড়ে। ওই আইনে পুলিশকে যেকোনো অভিবাসীকে তল্লাশি করার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। সন্দেহভাজন যেকোনো ব্যক্তিকে পুলিশ বৈধতার সনদের জন্য চ্যালেঞ্জ করতে পারবে। গ্রিনকার্ড দেখাতে না পারলে গ্রেপ্তার ও বহিষ্কার করা যাবে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে।
যুক্তরাষ্ট্রে দেড় কোটিরও বেশি অবৈধ অভিবাসী অবস্থান করছেন। বৈধতার সনদের জন্য দীর্ঘদিনের টানা সংগ্রামে অনেকেই এখন তাঁদের সমর্থনে এগিয়ে এসেছেন। জনপ্রতিনিধি থেকে শুরু করে ছাত্রসংগঠন, মানবাধিকার সংগঠন এবং ধর্মীয় সংগঠনগুলোর ব্যাপক উপস্থিতি ছিল শনিবারের বিক্ষোভ সমাবেশে। সব নগরেই বিক্ষোভ সমাবেশ ছিল মোটামুটি শান্তিপূর্ণ। তবে নাগরিক আইন লঙ্ঘনের জন্য পুলিশ ৩৫ জনকে বিভিন্ন স্থান থেকে গ্রেপ্তার করেছে।
শনিবারের বিক্ষোভ সমাবেশে অভিবাসী গোষ্ঠীগুলো প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার প্রতি তাদের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছে। ভেঙে পড়া অভিবাসন আইনের সংস্কারের জন্য অবিলম্বে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য প্রেসিডেন্ট ওবামার প্রতি আহ্বান জানায় তারা।
নিউইয়র্ক নগরে প্রায় ১০ হাজার বিক্ষোভকারীর সমাবেশে শ্রমিকনেতা জন ভেলনাডো বলেছেন, ‘অ্যারিজোনার গভর্নরকে আমি ধন্যবাদ জানাতে চাই। অভিবাসীদের তিনি উসকে দিয়েছেন। দাবি আদায় করেই অভিবাসীরা এবার ঘরে ফিরবে।’
লস অ্যাঞ্জেলেস নগরের সমাবেশ ছিল সবচেয়ে বড়। এখানে প্রায় ৬০ হাজার বিক্ষোভকারী সমাবেশে অংশ নেন। সংগীততারকা গ্লোরিয়া এস্তেফান সমাবেশে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র হচ্ছে অভিবাসীদের দেশ। এ দেশ থেকে কাউকে তাড়ানোর অধিকার কারও নেই। কিউবায় জন্ম নেওয়া এ সংগীততারকা বলেন, ‘এ দেশকে আমরা অনেক দিয়েছি, দেশটিও আমাদের অনেক কিছু দিয়েছে।’
শিকাগো নগরে ২০ হাজার বিক্ষোভকারীর সমাবেশটি উৎসবে পরিণত হয়। টেক্সাসের ডালাস নগরে ৩০ হাজারেরও বেশি লোকের সমাবেশে বলা হয়, অ্যারিজোনা অঙ্গরাজ্যের গভর্নর নব্য নািসবাদী। ডেনভার নগরে কয়েক হাজার বিক্ষোভকারীর সমাবেশে বক্তারা বলেন, অ্যারিজোনার আইন মেক্সিকোর অভিবাসীদের লক্ষ্য করে প্রণীত হয়েছে। এ বৈষম্যমূলক আইনের দ্রুত প্রভাব পড়বে অন্যান্য অভিবাসীদের ওপর।
অ্যারিজোনা অঙ্গরাজ্যের টুসন নগরে প্রায় ১০ হাজার বিক্ষোভকারী অভিবাসনবিরোধী কালো আইন অবিলম্বে বাতিলের দাবি জানিয়েছেন। রাজধানী ফিনিক্সেও আলাদা সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা তাঁর নির্বাচনী প্রচারের সময় প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, ক্ষমতা গ্রহণের ১০০ দিনের মধ্যেই অভিবাসন আইনের সংস্কার নিয়ে উদ্যোগী হবেন। তাঁর ক্ষমতা গ্রহণের পর এক বছর পেরিয়ে গেলেও এ ক্ষেত্রে কোনো কার্যকর উদ্যোগ না নেওয়ায় ক্ষুব্ধ অভিবাসী গোষ্ঠীগুলো। যদিও হোয়াইট হাউস থেকে বারবার আভাস দেওয়া হচ্ছে, এ বছরের মধ্যেই অভিবাসন আইনের সংস্কার বাস্তবায়ন করবেন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা।

No comments

Powered by Blogger.