যেন ফিরে এল আইসিএল!

হাবিবুল বাশারদের আইসিএলে যাওয়া নিয়ে যতই বিতর্ক হোক, ঢাকা ওয়ারিয়র্সের ম্যাচের দিন ঠিকই টেলিভিশনের সামনে বসত সবাই। কখনো কখনো অনেকে হয়তো অবচেতনে গর্বিতও হয়েছে বাংলাদেশি ক্রিকেটারদের পারফরম্যান্সে।
পিসিএলে কাল পাইরেটস অব চিটাগাং মনে করিয়ে দিল ক্রিকেটের বিদ্রোহী আসর আইসিএলের দল ঢাকা ওয়ারিয়র্সকে। ওয়ারিয়র্সেরই দুই ব্যাটসম্যান অলক কাপালি আর আফতাব আহমেদের ব্যাট কাল পাইরেটসের হয়ে ঝড় তুলল মরূদ্যান শারজায়, ঠিক যেন আইসিএলের মতোই! কিন্তু কজন দর্শকই আর তাঁদের এই জোড়া ফিফটি দেখেছেন? দর্শক বলতে তো পরবর্তী ম্যাচের খেলোয়াড়-কর্মকর্তা, আয়োজক, সাংবাদিক আর এটিএন বাংলার কলাকুশলীরাই! পিসিএল উপলক্ষে বাংলাদেশ থেকে উড়ে আসা চার শতাধিক মানুষইবা গেল কোথায়?
তবে কাল ফাইনালে এই দর্শক-খরা থাকবে না বলেই মনে করছেন আয়োজক কমিটির চেয়ারম্যান আ জ ম নাছির উদ্দিন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আসতে না পারলেও প্রবাসী বাংলাদেশিদের সুরের মূর্ছনায় ভাসাতে ফাইনালের দিন মাঠে আসবেন শিল্পী মমতাজ, এমনটাই জানিয়েছেন তিনি।
ফাইনালের আগে পিসিএলের দুটি সেমিফাইনালই আজ। আফতাব-অলকের জোড়া ফিফটিতে কাল কলকাতার দল বেঙ্গল টাইগার্সের বিপক্ষে ৩ রানে জিতে ‘বি’ গ্রুপের দ্বিতীয় দল হিসেবে সেমিফাইনালে উঠেছে পাইরেটস অব চিটাগাং। হেরেও বেঙ্গল টাইগার্স গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন। আর গ্রুপপর্যায় থেকে ছিটকেই গেছে ঢাকা স্পোর্টস ক্লাব।
টসজয়ী পাইরেটস উদ্বোধনী জুটিতেই তুলে নেয় ৭৮ রান। ওপেনার হিসেবে নেমে আফতাব মাত্র ৩৫ বলে করেন ৫৭ রান। পাঁচ ছক্কার সঙ্গে তাঁর এই ইনিংসে ছিল তিনটি বাউন্ডারি। আর অলক কাপালির ৩৪ বলে করা ৫১ রানের ইনিংসে বাউন্ডারি ছয়টি ও ছক্কা দুটি। এই দুই ফিফটিতে পাইরেটসের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৮ উইকেটে ১৮৫। বেঙ্গল টাইগার্সের রাজেশ, সুজয় ও ইন্দোর রেড্ডি দুটি করে উইকেট নেন।
১৮৬ রানের জয়ের লক্ষ্যে প্রায় পৌঁছেই গিয়েছিল বেঙ্গল টাইগার্স অব ইন্ডিয়া। ১৯তম ওভারে পাইরেটসের রাশেদ হানিফকে শচীন রানা চারটি ছক্কা মারলে শ্বাসরুদ্ধকর উত্তেজনার সৃষ্টি হয় ম্যাচে। শেষ ওভারে জয়ের জন্য দরকার ছিল ১৬ রান। কিন্তু বেঙ্গল টাইগার্সের ইনিংস থেমে যায় ১৮২ রানেই। ম্যান অব দ্য ম্যাচ হয়েছেন আফতাব।
টপ স্পোর্টসকে ১৭ রানে হারিয়ে ‘এ’ গ্রুপ থেকে পরশু রাতেই সেমিফাইনালের টিকিট নিশ্চিত করেছিল চিটাগাং টাইগার্স।
‘বি’ গ্রুপে কাল মোহামেডানকে ৮ উইকেটে হারিয়ে সেমির টিকিট নিশ্চিত করেছে ব্রাদার্স। তারা সেমিতে মুখোমুখি হবে ‘বি’ গ্রুপের রানার্সআপ পাইরেটস অব চিটাগংয়ের। অপর সেমিফাইনাল হবে বেঙ্গল টাইগার্স ইন্ডিয়া ও চিটাগং টাইগার্সের মধ্যে।
ব্রাদার্সের আজহার মাহমুদ এই জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। তিনি ৫ উইকেট নেন। ম্যাচসেরা হন তিনিই। এ ছাড়া ব্রাদার্সের ইমরান নাজির অপরাজিত ৬৩ রান করেন।
স্কোরকার্ড
পাইরেটস অব চিটাগাং: ২০ ওভারে ১৮৫/৮ (আফতাব ৫৭, অলক ৫১, রনি তালুকদার ৩৭; সুজয় ২/১৪, ইন্দর ২/২৫, রাজেশ ২/৩২)। বেঙ্গল টাইগার্স: ১৮২/৫ (দেবেন্দ্র ৪৬*, শচীন রানা ৩৩*; ফরহাদ ১/৩০, শুভাশিস ১/৪০)। ফল: পাইরেটস অব চিটাগাং ৩ রানে জয়ী। ম্যান অব দ্য ম্যাচ: আফতাব আহমেদ।
মোহামেডান: ১৮.৪ ওভারে ১০৮ (শোয়েব ২২, ফয়সাল ২১, ব্লিজার্ড ১৬; আজহার ৫/১৮, রফিক ২/৯)। ব্রাদার্স: ১৫.৫ ওভারে ১১১/২ (ইমরান নাজির ৬৩*, নাজিমউদ্দিন ২২; ডলার ১/১৩, শোয়েব মালিক ১/১৫)। ম্যান অব দ্য ম্যাচ: আজহার মাহমুদ।

No comments

Powered by Blogger.