এসএমই ঋণ নীতিমালার অগ্রাধিকার ক্ষুদ্র উদ্যোগ



ক্ষুদ্র প্রতিষ্ঠানকে অগ্রাধিকার দিয়ে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে (এসএমই) ঋণ বিতরণের নীতিমালা তৈরি করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। একই সঙ্গে নারী উদ্যোক্তাদের প্রাধিকার দেওয়া, অঞ্চলভিত্তিক শিল্প উত্পাদনকে উত্সাহ জোগানো, স্বল্পতম সময়ে ঋণ আবেদন নিষ্পত্তি করাসহ আরও কিছু কর্মসূচি থাকছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই নীতিমালায়।
এ মাসের শেষে এ নীতিমালা ঘোষণা করা হতে পারে। বাণিজ্যিক ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে এই নীতি অনুসরণ করতে পরামর্শ দেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ ব্যাংক ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের বিকাশ ও সম্প্রসারণে বেশ কয়েক ধরনের কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিজস্ব একটি তহবিল এবং বিশ্বব্যাংক ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) থেকে পাওয়া অপর একটি তহবিল থেকে এ খাতে পুনঃ অর্থায়ন সুবিধা দেওয়া হচ্ছে।
সূত্র জানায়, চলতি ২০১০ সালে দেশের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো এসএমই খাতে ২৩ হাজার ৭৯৫ কোটি টাকার ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। এর মধ্যে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো তিন হাজার ৮৯৭ কোটি টাকা, বিশেষায়িত ব্যাংকগুলো ৬০০ কোটি টাকা, বেসরকারি ব্যাংকগুলো ১৭ হাজার ২৮৮ কোটি টাকা, বিদেশি ব্যাংকগুলো ৭০৭ কোটি টাকা এবং অ-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো এক হাজার ৩০৩ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে।
জানা গেছে, বাংলাদেশ ব্যাংক সম্প্রতি প্রত্যেক ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কাছ এসএমই খাতে ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রার তথ্য সংগ্রহ করেছে। এর আগে শুধু কৃষি খাতে ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হতো। এ বছর থেকে এসএমই খাতেও ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা শুরু হলো।
২০০৯ সালে এসএমই খাতে নতুন ঋণ বিতরণ করা হয় সাত হাজার ৭০৮ কোটি টাকা। ডিসেম্বর পর্যন্ত মোট বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ দাঁড়ায় ৫১ হাজার ১৪৭ কোটি টাকা। ২০০৮ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বিতরণ করা হয়েছিল ৪৩ হাজার ৪৩৯ কোটি টাকা।
বিশ্লেষণে দেখা যায়, ব্যাংক খাতের মোট বিতরণ করা ঋণের মধ্যে এসএমই খাতে রয়েছে ২০ শতাংশ।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একজন শীর্ষপর্যায়ের কর্মকর্তা বলেন, এসএমইতে ঋণ দিতে গিয়ে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো ছো্ট উদ্যোগকে তেমন গুরুত্ব দিচ্ছে না। একইভাবে নারী উদ্যোক্তাদের ঋণ পেতে অনেক সমস্যা হয়।
অন্যদিকে ঋণ আবেদন প্রক্রিয়া শেষ করে বিতরণ করতে অনেক ব্যাংক দীর্ঘ সময় নেয়। এতে উদ্যোক্তারা অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েন। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিমালায় এসব বিষয়ে দিকনির্দেশনা থাকবে বলে জানা যায়।
নীতিমালায় কোন এলাকায় কী ধরনের শিল্প কেন্দ্রীভূত হয়েছে বা তার জন্য বিখ্যাত হয়েছে, তার একটা তালিকা সংযুক্ত করা থাকবে। বাংলাদেশ ব্যাংক মনে করছে, অঞ্চলভিত্তিক পৃথক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের ঋণ বিতরণের কৌশল নির্ধারণ করবে। তাতে ঋণ বিতরণ ও শিল্প স্থাপন সহজ হবে।
উল্লেখ্য, এর আগেই বাংলাদেশ ব্যাংকের পরামর্শ অনুসারে প্রত্যেক ব্যাংক শাখায় এসএমইর জন্য পৃথক সেবাকেন্দ্র চালু হয়েছে। আবার বিশেষায়িত এসএমই শাখাও খোলা হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকও পৃথক এসএমই বিভাগ চালু করেছে।

No comments

Powered by Blogger.