নারীদের জন্য নতুন সংস্থা করতে চান জাতিসংঘের মহাসচিব

নারীদের কল্যাণে শুধু তাঁদেরই জন্য জাতিসংঘে একটি পৃথক সংস্থা গড়ার ব্যাপারে প্রস্তাব পাস করতে সাধারণ পরিষদের কাছে আহ্বান জানিয়েছেন সংস্থাটির মহাসচিব বান কি মুন। সেই সঙ্গে বিশ্বব্যাপী নারীদের সমান অধিকার ও সুযোগ দেওয়ার জন্য সবার প্রতি অনুরোধ করেছেন তিনি। আসন্ন আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে গত বুধবার জাতিসংঘ সদর দপ্তরে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বান কি মুন এ কথা বলেন। খবর জি নিউজ ও এএফপির।
নারীর ক্ষমতায়নের জন্য ১৯৯৫ সালের বেইজিং ঘোষণার অগ্রগতি পর্যালোচনা করতে বুধবার ওই অনুষ্ঠানের আয়োজন হয়। এতে ১২টিরও বেশি দেশের মন্ত্রী এবং দুই হাজারের বেশি নারী কর্মী উপস্থিত ছিলেন।
এবারের ৮ মার্চের আন্তর্জাতিক নারী দিবসে বেইজিং ঘোষণার ১৫ বছর পূর্তি হবে। নারীর অধিকার আদায়ে সবচেয়ে সমন্বিত এই বেইজিং ঘোষণায় সব ক্ষেত্রে নারীর উন্নয়নের জন্য সমসুযোগ তৈরি করতে সরকারগুলোকে বাধ্য থাকার কথা বলা হয়েছে।
এর আগে গত বছর জাতিসংঘ ঘোষণা করেছিল যে চারটি সংস্থাকে একত্র করে একটি সংস্থা গঠন করা হবে, যাতে তা নারীদের কল্যাণ ও সমতা আনার ক্ষেত্রে কাজ করতে পারে।
জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন বলেন, ‘আশা করি জাতিসংঘ-ব্যবস্থায় জেন্ডার-সমতা ও নারীর ক্ষমতায়ন আনতে একটি গতিশীল স্বতন্ত্র সত্তা গঠন করা হবে। এর মাধ্যমে আরও সংগতিপূর্ণ প্রকল্প বাস্তবায়ন ও নারীর কণ্ঠকে আরও জোরালোভাবে প্রকাশ করা যাবে।’ তিনি বলেন, ‘সাধারণ পরিষদের কাছে আহ্বান জানাচ্ছি, আর দেরি না করে প্রস্তাব পাস করে এই নতুন স্বতন্ত্র সংস্থাটি গঠন করা হোক।’
জাতিসংঘের মহাসচিব জোর দিয়ে বলেন, বেইজিং ঘোষণার পর তাত্পর্যপূর্ণ অগ্রগতি হয়েছে। ঘোষণার পর নীতিমালা ও আইন প্রণয়নের সংখ্যা বাড়ায় জেন্ডার-সমতা, পুনরুত্পাদনশীল স্বাস্থ্য, কর্মসংস্থান ও সম্পদের অধিকার আদায়ে তা সহায়তা করছে।
পূর্ব তিমুরের কথা উল্লেখ করে বান কি মুন বলেন, বর্তমানে সে দেশে সরকারি কাজে নারীর অংশগ্রহণ বেড়েছে। পূর্ব তিমুর পার্লামেন্টের এক-তৃতীয়াংশ সদস্য নারী। রুয়ান্ডার পার্লামেন্টের অর্ধেকের বেশি সদস্য নারী। ইন্টার পার্লামেন্টারি ইউনিয়নের (আইপিইউ) মতে, মধ্যপ্রাচ্যে পার্লামেন্টে নারীর উপস্থিতি কম। বিশ্বে পার্লামেন্ট সদস্যদের মধ্যে মাত্র ১৮ দশমিক ৮ শতাংশ সদস্য নারী। বেইজিং ঘোষণায় এ হার ২০ শতাংশ করার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল।
এই উন্নতি সত্ত্বেও বান কি মুন বলেন, সর্বত্র নারীদের প্রতি অবিচার ও বৈষম্য অব্যাহত রয়েছে। ৭০ শতাংশ নারীর জীবনে নির্যাতন ও সহিংসতার অভিজ্ঞতা রয়েছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ঘনিষ্ঠজনেরাই তাঁদের ওপর হামলা চালান।

No comments

Powered by Blogger.