ইরাকে পার্লামেন্ট নির্বাচনে প্রাক্ ভোট গ্রহণ

ইরাকে আগামী রোববারের পার্লামেন্ট নির্বাচনের মূল ভোট গ্রহণের আগে গতকাল বৃহস্পতিবার নিরাপত্তাকর্মী ও সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ভোট গ্রহণ করা হয়েছে। এ প্রাক্ ভোট গ্রহণের সময় দুটি হামলায় কমপক্ষে সাতজন নিহত হয়। ইরাকের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা এ কথা জানান।
ইরাকের নির্বাচনী কর্তৃপক্ষ জানায়, গতকাল সকাল থেকেই হাজার হাজার সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা ভোটকেন্দ্রগুলোর সামনে উপস্থিত হন। নির্দিষ্ট সময়ে ভোট গ্রহণ শুরু হয়। ইরাকের প্রায় আট লাখ সরকারি কর্মীর জন্য এ প্রাক্ ভোট গ্রহণ আয়োজন করা হয়েছে।
দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, প্রথম আত্মঘাতী হামলাটি চালানো হয় রাজধানী বাগদাদের পশ্চিমাঞ্চলে মনসুর শহরতলীর একটি ভোটকেন্দ্রে। এতে কমপক্ষে তিনজন সেনাসদস্য নিহত ও ১৫ জন আহত হন। দ্বিতীয় হামলাটি চালানো হয় মধ্য বাগদাদে। ওই হামলায় আরও চার সেনাসদস্যের মৃত্যু হয়।
তবে গতকালের ভোট গ্রহণের দিনেও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নিরাপত্তা বাহিনীর দুই লাখ কর্মীকে মোতায়েন রাখা হয়। ভোট গ্রহণ উপলক্ষে বাগদাদসহ সমস্ত ইরাকে ব্যাপক নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। সারা দেশে চলাফেরার ওপর কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে এবং নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে।
দুপুরে বাগদাদের একটি কেন্দ্রে ভোট দিয়ে বের হওয়ার পর এক হাসপাতালের সেবিকা নিদাল বলেন, ‘আশা করছি, যে প্রার্থীকে ভোট দিলাম, তিনি জিতবেন।’ অবশ্য কাকে ভোট দিয়েছেন তা বলেননি নিদাল।
ইরাকের নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, নির্বাচনে পার্লামেন্টের ৩২৫টি আসনে ছয় হাজার প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আজ শুক্রবার প্রবাসী ইরাকিদের ভোট গ্রহণ করা হবে। রোববার মূল ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
প্রধানমন্ত্রী পদে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নূরি আল-মালিকিসহ ছয়জনের মধ্যে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলে আশা করছেন বিশ্লেষকেরা। অন্য পাঁচ প্রার্থী হলেন ভাইস প্রেসিডেন্ট আদেল আবদেল মাহদি, অর্থমন্ত্রী বাকের জাবের সোলাঘ, ব্রিটেনে শিক্ষা নেওয়া চিকিত্সক আয়াদ আলাওয়ি, সাবেক উপপ্রধানমন্ত্রী আহমেদ ছালাবি ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জাওয়াদ আল-বোলানি।
এবারের নির্বাচনকে ইরাকের গণতন্ত্রের জন্য একটি বড় পরীক্ষা হিসেবে দেখা হচ্ছে। কারণ ওয়াশিংটন ও বাগদাদের মধ্যকার চুক্তি অনুযায়ী এ বছরের জুনের মধ্যে ইরাকে মার্কিন সেনাসংখ্যা বর্তমানের তুলনায় অর্ধেকে নামিয়ে আনা হবে। ২০১১ সালের মধ্যে সেখান থেকে সব মার্কিন সেনা প্রত্যাহার করার কথা রয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.