রেকর্ডটা নিয়তির বেঁধে দেওয়া

সাঈদ আনোয়ারের ১৯৪ রানের ইনিংসটার কথা মনে আছে? সেদিন কিন্তু পাকিস্তানের সাবেক ওপেনার আউট হয়েছিলেন ৪৭তম ওভারে। মানে ডাবল সেঞ্চুরিটি করার জন্য যথেষ্ট বল হাতে ছিল তাঁর। কিন্তু পারেননি। সুইপ করতে গিয়ে ফাইন লেগে ধরা পড়েন সৌরভ গাঙ্গুলীর হাতে। ওয়ানডের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি থেকে তাঁকে বঞ্চিত করা বোলারটির নাম? শচীন টেন্ডুলকার!
১৯৯৭ সালের ম্যাচটার স্মৃতি ঠিকই মনে আছে ওয়াসিম আকরামের। এরপর জিম্বাবুয়ের চার্লস কভেন্ট্রিও যে বাংলাদেশের বিপক্ষে ১৯৪ রানে অপরাজিত একটা ইনিংস খেলেছিলেন—সেটিও জানেন আকরাম। কভেন্ট্রি কিংবা আনোয়ার দুজনের কেউই ডাবল সেঞ্চুরি কেন পাননি জানেন? কারণ, আকরাম বলছেন, নিয়তিই নির্দিষ্ট করে দিয়েছিল, রেকর্ডটা গড়া হবে যোগ্যতম ব্যক্তির ব্যাটে। আর সেটাই করছেন টেন্ডুলকার, দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে গোয়ালিয়রে।
আকরাম এখন ভারতেই। কলকাতা নাইট রাইডার্সের বোলিং পরামর্শক হিসেবে কাজ করবেন এবারের আইপিএলে। ভারতে এসেই টেন্ডুলকারকে অভিনন্দন জানানোর কাজটা সেরে রাখছেন ওয়ানডেতে ৫০০ উইকেট পাওয়া প্রথম বোলার। এই ফাঁকে জানিয়ে রেখেছেন, ‘এই রেকর্ডটা যোগ্য ব্যক্তির হাতেই হয়েছে। এটা ওর প্রাপ্য ছিল। নিয়তি এই রেকর্ডটা রেখেছিল তাঁর জন্যই। বাকিদের তাই করার কিছুই নেই।’
তার মানে কিন্তু এই না, ভাগ্যের সৌজন্যেই ডাবল সেঞ্চুরিটা হয়েছে। বরং পুরো কৃতিত্বই টেন্ডুলকারকে দিলেন তিনি, ‘৩৬ বছর বয়সী একজনের এমন অর্জন সত্যিই অবিশ্বাস্য। খেলাটার প্রতি তাঁর যে আবেগ, দায়বদ্ধতা এটি সবার জন্যই উদাহরণ। এ ধরনের ইনিংস যেকোনো পর্যায়ে, কোনো দলের বিপক্ষেই স্পেশাল কিছু। টেন্ডুলকার ডাবল সেঞ্চুরিটা করেছে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে, এতে ইনিংসটার মাহাত্ম্য আরও বেড়ে যাচ্ছে।’
ওয়ানডেতে ৫০২টি উইকেট তাঁর। কিন্তু এর মধ্যে টেন্ডুলকারের উইকেট আকরাম পেয়েছেন মাত্র তিনবার (টেস্টে মাত্র একবার!)। টেন্ডুলকার বোলারদের জন্য কত বড় পরীক্ষার নাম, সেটি আবারও স্মরণ করিয়ে দিলেন তিনি, ‘শচীনের মতো ব্যাটসম্যানের বিরুদ্ধে কোনো পরিকল্পনা করাই মুশকিল। ও এতটাই নিখুঁত, কোনো ফাঁদ পেতে লাভ হয় না। অসাধারণ প্রতিভাবান, দুর্দান্ত টেকনিক। এবং এটাও মনে রাখবেন, ও কিন্তু গায়ের জোরে বল মারে না। রেকর্ডই ওর হয়ে কথা বলে।

No comments

Powered by Blogger.