ফোরামের স্লোগান ‘পরিবর্তন’ ‘ধারাবাহিকতা’ পরিষদের

তাজরীন ও স্মার্ট ফ্যাশনসে অগ্নিকাণ্ডের পর দেশের তৈরি পোশাক কারখানার কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করতে চাপ তৈরি হয়েছে আন্তর্জাতিক মহলে। সেই সঙ্গে রয়েছে আমেরিকার জিএসপি-সুবিধা স্থগিত হওয়া নিয়ে টানাপোড়েন, ইউরোপের আর্থিক মন্দা আর নতুন বাজার খোঁজাসহ নানা চ্যালেঞ্জ।
এত সব চ্যালেঞ্জের মাঝে বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) নেতৃত্বে পরিবর্তন আসছে। ২০১৩-১৪ মেয়াদে বিজিএমইএর নির্বাচন হবে আগামী রোববার। বরাবরের মতো এবারের নির্বাচনেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে সমিতিকেন্দ্রিক ব্যবসায়িক গোষ্ঠীর দুটি প্যানেল—ফোরাম ও সম্মিলিত পরিষদ।
বিজিএমইএতে বর্তমানে নেতৃত্বে থাকা সম্মিলিত পরিষদের এবারের দলনেতা হচ্ছেন আতিকুল ইসলাম। অন্যদিকে ফোরামের দলনেতা হচ্ছেন মাহমুদ হাসান খান। দুজনই বিজিএমইএতে এর আগে সহসভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন।
নির্বাচনে যে প্যানেলই জয়ী হোক না কেন, দেশের পোশাক খাতকে এগিয়ে নিতে নানা চ্যালেঞ্জকে মোকাবিলা করতে হবে নতুন নেতৃত্বকে।
এবারের নির্বাচনে সম্মিলিত পরিষদ ‘অগ্রগতির ধারাবাহিকতা’ আর ফোরাম প্যানেল ‘পরিবর্তন’—স্লোগান নিয়ে মাঠে নেমেছে। উভয় প্যানেলের প্রার্থীরাই ভোট প্রত্যাশায় ভোটারদের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছেন। নির্বাচনের আর মাত্র চার দিন বাকি থাকায় এখন চলছে শেষ মুহূর্তের প্রচার-প্রচারণা।
রোববার ঢাকা ও চট্টগ্রামে একযোগে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সকাল আটটা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত টানা ভোট গ্রহণ চলবে। নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) সভাপতি জাহাঙ্গীর আলামিন।
নির্বাচনে ২৭ পরিচালক পদের বিপরীতে ৫৪ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। এর মধ্যে ঢাকা অঞ্চলের ২০ পদের বিপরীতে ৪০ জন এবং চট্টগ্রাম অঞ্চলের ৭ পদের বিপরীতে ১৪ জন। এবার ভোটার সংখ্যা তিন হাজার ১৯৬ জন। এর মধ্যে ঢাকায় দুই হাজার ৫৯২ ও চট্টগ্রামে ৬০৪ জন। নির্বাচনের পর ২১ মার্চ একজন সভাপতি ও চারজন সহসভাপতি নির্বাচন করবেন পরিচালকেরা।
আতিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘ব্যবসার ধারাবাহিকতা রক্ষার জন্য সব ধরনের সহযোগিতা করবে সম্মিলিত পরিষদ। একই সঙ্গে সামনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে ব্যবসাকে মসৃণ ও সাপ্লাই চেইনকে ধরে রাখতে আমরা কাজ করব।’
আতিকুল ইসলাম আরও বলেন, ‘আমরা মধ্যম সারির কারখানাগুলোকে কমপ্লায়েন্ট (মানসম্মত কর্মপরিবেশ) হিসেবে গড়ে তুলব।’ এ ছাড়া সম্মিলিত পরিষদ নির্বাচিত হলে কারখানায় উচ্চ প্রযুক্তি আনা, শ্রমিকদের ডিজিটাল ডেটাবেইস, অল্প সুদে অগ্নিনির্বাপণযন্ত্র, অগ্নিনিরাপত্তায় জোরদার ব্যবস্থা, পোশাকপল্লির দ্রুত বাস্তবায়নসহ বিভিন্ন কাজ করবে বলে জানান তিনি।
অন্যদিকে মাহমুদ হাসান খান প্রথম আলোকে বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে পোশাক কারখানার কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করাই বড় ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর ২৫ থেকে ৩০ বছর আগে ঢাকার ভেতর যেসব কারখানা হয়েছিল, এখন তা কোটি টাকা দিয়েও কমপ্লায়েন্ট করা যাবে না।
মাহমুদ হাসান আরও বলেন, ‘এ জন্য আমরা ঢাকাকে কেন্দ্র করে ঢাকার বাইরে অন্তত চারটি বিশেষায়িত অর্থনৈতিক এলাকা (ইকোনমিক জোন) করব। প্রতিটিতে ১০০ থেকে ১৫০টি কারখানা থাকবে। সেখানে সব সুযোগ-সুবিধা থাকবে। চট্টগ্রামেও একই ধরনের বিশেষায়িত এলাকা করা হবে।’ এ ছাড়া নির্বাচনে জয়ী হলে ফোরাম শ্রমিকদের ডোটাবেইস তৈরি, ব্যাংকঋণের সুদ কমানোসহ বিভিন্ন ধরনের কাজ করবে বলে জানান তিনি।

No comments

Powered by Blogger.