ওবামার স্বাস্থ্যসেবা সংস্কার নীতির বিজয় পররাষ্ট্রনীতিকে শক্তিশালী করবে

যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্যসেবা খাত সংস্কার বিষয়ে প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সাম্প্রতিক বিজয় তাঁর পররাষ্ট্রনীতিকেও শক্তিশালী করবে বলে মত প্রকাশ করেছেন বিশ্লেষকেরা। গত মঙ্গলবার স্বাস্থ্যসেবা সংস্কার বিলে সই করার পর ডজনখানেক বিদেশি সরকারপ্রধান ও রাষ্ট্রপ্রধান ওবামাকে টেলিফোন করে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। এ থেকেই বোঝা যায় যে মার্কিন প্রেসিডেন্টের কাছে সর্বোচ্চ গুরুত্বপূর্ণ অভ্যন্তরীণ বিষয়টি নিয়ে বিদেশি নেতারা কতটা মনোযোগী ছিলেন।
তবে ওবামার উপদেষ্টা ও রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা তাঁর এত বড় বিজয় অর্জনের পর আত্মতুষ্টিতে ভুগছেন না বরং কিছুটা সতর্ক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তাঁরা বলছেন, আগামী বছরগুলোতে আরও বেশিসংখ্যক মার্কিন নাগরিক স্বাস্থ্যবীমার আওতায় আসবে—শুধু এই কারণে ইরান তার পরমাণু কর্মসূচি বন্ধ করবে না অথবা উত্তর কোরিয়াও আলোচনার টেবিলে ফিরে আসার আগ্রহ দেখাবে না।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর ওবামার প্রথম বছরটি কেটেছে নানা ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্যে। তবে এই এক বছরে দেশে ও দেশের বাইরে বেশ কিছু নীতিগত জয় ওবামার অভ্যন্তরীণ নীতি বাস্তবায়ন ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে আলোচনার ক্ষেত্রে গতি সঞ্চার করবে।
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশের জাতীয় নিরাপত্তাবিষয়ক উপদেষ্টা স্টিফেন হ্যাডলি বলেন, এই বিজয় ওবামার অভ্যন্তরীণ নীতি বাস্তবায়নে সাহায্য করছে। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রেও এটি ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে। এই বিজয় ওবামার রাজনৈতিক শক্তি প্রমাণ করেছে এবং তাঁর সঙ্গে আলোচনার সময় বিষয়টি মাথায় রাখবেন বিদেশি নেতারা।
ওবামার জাতীয় নিরাপত্তাবিষয়ক উপ-উপদেষ্টা বেন রোডস বলেন, ‘স্বাস্থ্যসেবা খাত সংস্কার নিয়ে ওবামার দীর্ঘ লড়াই তাঁর বক্তৃতাগুলোর বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়িয়ে দিয়েছে। বিশেষ করে জলবায়ু পরিবর্তন, পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ ও অন্যান্য পররাষ্ট্রনীতির বিষয়ে দেওয়া বক্তব্য ও প্রতিশ্রুতিকে এখন অনেক বেশি অর্থপূর্ণ করে তুলবে। স্বাস্থ্যসেবা বিল নিয়ে বিজয় নেতা হিসেবে প্রেসিডেন্ট ওবামার গুরুত্ব সম্পর্কে একটি ইতিবাচক বার্তা পৌঁছে দিয়েছে সবাইকে।’
রোডস আরও বলেন, ‘ওবামা সম্পর্কে সমালোচনা রয়েছে, তিনি বড় লক্ষ্য নির্ধারণ করেন কিন্তু তা বাস্তবায়ন করেন না। এই সমালোচনার সবচেয়ে বড় জবাব স্বাস্থ্যসেবা খাত সংস্কারনীতিতে বিজয়।’
তবে পররাষ্ট্রনীতি বাস্তবায়নে এই বিজয়ের প্রভাব এত অল্প সময়ের মধ্যে নজরে আসবে না। মধ্যপ্রাচ্য শান্তিপ্রক্রিয়া নিয়ে অগ্রগতি থমকে থাকলেও পরমাণু অস্ত্র হ্রাস করা নিয়ে রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনায় অগ্রগতি হয়েছে। গত সপ্তাহে অধিকৃত অঞ্চলে বসতি স্থাপন নিয়ে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে ওবামার দুবারের বৈঠক থেকে কোনো ইতিবাচক ফল বেরিয়ে আসেনি। তবে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পরমাণু অস্ত্র হ্রাস করা নিয়ে দুই দেশ একটি যৌথ ঘোষণা দেওয়ার খুব কাছাকাছি পৌঁছেছে। কয়েকজন বিশ্লেষক বলেছেন, ওবামার অভ্যন্তরীণ নীতির সাফল্য ও ব্যর্থতাকে গুরুত্ব দিয়ে পর্যবেক্ষণ করছে রাশিয়া।

No comments

Powered by Blogger.