জেরুজালেমে বসতি নির্মাণ বন্ধ করা হবে না: ইসরায়েল

অধিকৃত জেরুজালেম ইস্যুতে ইসরায়েল তার নীতি থেকে সরে আসেনি এবং সেখানে বসতি স্থাপনের সিদ্ধান্তও বাতিল করা হয়নি। ওয়াশিংটনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সঙ্গে এ-সংক্রান্ত আলোচনা শেষে দেশে ফিরে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এ কথা জানিয়েছেন। গতকাল শুক্রবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, জেরুজালেম ইস্যুতে ৪২ বছর ধরে ইসরায়েলের বিগত সব সরকার যে নীতি অবলম্বন করে আসছে, তা থেকে প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু একচুলও সরে আসেননি। সুতরাং সেখানে বসতি নির্মাণ বন্ধের কোনো কারণই দেখছে না ইসরায়েল। নেতানিয়াহুর এই কট্টর অবস্থান থমকে থাকা মধ্যপ্রাচ্য শান্তি আলোচনা শুরু হওয়ার সম্ভাবনাকে অনেকখানি পিছিয়ে দেবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। খবর এএফপি ও জি নিউজ অনলাইনের।
যুক্তরাষ্ট্র এ মাসের শুরুতে ইসরায়েলকে পূর্ব জেরুজালেমে নতুন কোনো বসতি না গড়ার আহ্বান জানায়। কিন্তু দুই সপ্তাহ আগে যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জেরুজালেম সফর করার সময় ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু সেখানে আরও এক হাজার ৬০০ নতুন ইহুদি বাসস্থান গড়ার ঘোষণা দেন। এটাকে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ‘অপমানজনক’ বলে মন্তব্য করেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন। এতে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের মধ্যে কূটনৈতিক টানাপোড়েন শুরু হয়। নিজেদের মধ্যে ‘ভুল বোঝাবুঝি’র অবসানে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার আমন্ত্রণে গত সপ্তাহে নেতানিয়াহু ওয়াশিংটনে যান। জেরুজালেম ও মধ্যপ্রাচ্য শান্তি আলোচনা শুরুর বিষয়ে এই দুই নেতা বৈঠক করার পর গত বৃহস্পতিবার নেতানিয়াহু দেশে ফেরেন।
গতকাল নেতানিয়াহুর কার্যালয় থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়, অধিকৃত পশ্চিম তীরে ইসরায়েল বসতি স্থাপনের কার্যক্রম আংশিকভাবে স্থগিত রেখেছে। কিন্তু এই নীতি জেরুজালেমের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না। জেরুজালেমকে ইসরায়েল তার ‘শাশ্বত ও অবিভাজ্য’ রাজধানী মনে করে এবং সে কারণেই সেখানে বসতি স্থাপনের সিদ্ধান্ত থেকে তারা সরে আসবে না।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ফিলিস্তিনের সঙ্গে শান্তি আলোচনা পুনরায় শুরু করার বিষয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবার সঙ্গে কী কী আলোচনা হয়েছে, তা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকে বিস্তারিত আলোচনা করবেন।
এদিকে নেতানিয়াহুর মুখপাত্র নির হেফেজ ইসরায়েলের সামরিক রেডিওকে বলেছেন, পূর্ব জেরুজালেমে বসতি গড়ার বিষয়ে নেতানিয়াহু যুক্তরাষ্ট্রের সম্মতি আদায় করতে সক্ষম হয়েছেন। তবে ফিলিস্তিনের সঙ্গে শান্তি আলোচনা শুরুর বিষয়ে এখনো ওবামা প্রশাসনের সঙ্গে তাঁদের কিছু মতানৈক্য রয়ে গেছে।
ইসরায়েলের মন্ত্রিসভার সচিব য’ভি হাউসার বলেছেন, শুক্রবার (গতকাল) সন্ধ্যায় মন্ত্রিসভার সাত সদস্যকে নিয়ে নেতানিয়াহুর বৈঠক করার কথা। ওই বৈঠক থেকে শান্তি আলোচনা শুরুর বিষয়ে একটা দিকনির্দেশনা পাওয়া যাবে বলে তাঁরা আশা করছেন।

No comments

Powered by Blogger.