ফিলিপাইনে নির্বাচনী প্রচার শুরু

ফিলিপাইনে আসন্ন পার্লামেন্ট নির্বাচন উপলক্ষে গতকাল শুক্রবার প্রার্থীরা আনুষ্ঠানিক প্রচার শুরু করেছেন। আঁততায়ীর হামলার হুমকি, সামরিক অভ্যুত্থান, রাজনৈতিক প্রতারণার অভিযোগ ইত্যাদির মধ্য দিয়েই শুরু হয়েছে এই নির্বাচনী প্রচার। আগামী ১০ মে দেশটিতে পার্লামেন্ট ও প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোট গ্রহণ করা হবে।
দেশের জনগণ বর্তমান প্রেসিডেন্ট গ্লোরিয়া অ্যারোইয়োর নয় বছরের শাসনের ইতি টানার পক্ষে রায় দিতে পারেন বলে আশা করছেন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা। দুর্নীতি ও ভোট কারচুপির অভিযোগ রয়েছে অ্যারোইয়োর প্রশাসনের বিরুদ্ধে।
পার্লামেন্ট নির্বাচনে প্রার্থীদের মধ্যে সাবেক ফার্স্ট লেডি ইমেলদা মার্কোস, ফিলিপাইনের প্রয়াত গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী কোরাজন অ্যাকুইনোর ছেলে বেনিগনো অ্যাকুইনো ছাড়াও রয়েছেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট অ্যারোইয়ো ও বক্সিং তারকা ম্যানি প্যাকুইয়াও। ফিলিপাইনের কংগ্রেস ও স্থানীয় নির্বাচনের জন্য ৪৫ দিন প্রচার চালানোর সুযোগ পাবেন প্রার্থীরা। প্রায় ১৮ হাজার আসনে এই প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে।
গতকাল ফিলিপাইনের উত্তরাঞ্চলে ইলোকোস নর্তে এলাকা থেকে নির্বাচনী প্রচার শুরু করেছেন ইমেলদা মার্কোস। তিনি আইন সভার নিম্নকক্ষের আসনের জন্য ওই এলাকা থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ইমেলদার প্রয়াত স্বামী সাবেক একনায়ক ফার্দিনান্দ মার্কোস ১৯৮৬ সালে এক গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হন। ক্ষমতায় থাকার সময় এই দম্পতির বিরুদ্ধে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। ইমেলদার ছেলে ফার্দিনান্দ মার্কোস জুনিয়র আইনসভার উচ্চকক্ষে একটি আসনের জন্য এবং তাঁর বড় মেয়ে প্রাদেশিক গভর্নর পদের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ইমেলদা মার্কোস বলেছেন, তিনি নাগরিকদের জীবনমান উন্নয়নের জন্য কাজ করতে চান।
অন্য প্রার্থীরাও নিজ নিজ এলাকায় নির্বাচনী প্রচার শুরু করেছেন। তবে নির্বাচনের প্রচার শুরু হওয়ায় সহিংসতার আশঙ্কা বেড়ে গেছে বলে সতর্ক করেছেন ফিলিপাইনের পুলিশের মুখপাত্র চিফ সুপারিনটেন্ডেন্ট লিওনার্দো এসপিনা। তিনি বলেন, ‘নির্বাচনী প্রচারের সময় সহিংসতা বেড়ে যায়। অতীতে অনেকবারই এমনটি হয়েছে। এ কারণে নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।
এদিকে সামরিক অভ্যুত্থানের আশঙ্কা নাকচ করে দিয়েছেন সে দেশের সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র। ফিলিপাইনের মেরিন বাহিনীর প্রধান বলেন, ‘সামরিক জান্তার ক্ষমতা দখলের খবর শুধুই গুজব। বরং সামরিক বাহিনী জনগণ ও ভোটের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে। আমাদের কেউই আইন ভাঙবে না।’ ফিলিপিনোরা এই প্রথম স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে ভোট দেবেন। তবে বিদ্যুৎ সরবরাহে বিঘ্ন ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে। এতে নির্বাচনে বিপর্যয় দেখা দেবে।
তবে প্রেসিডেন্ট অ্যারোইয়োর কার্যালয় এ ধরনের আশঙ্কা ও গুজবে জনগণকে কান না দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ের মুখপাত্র রিকার্দো সালুদো বলেন, ‘আগামী ৩০ জুন দেশ একজন নতুন নেতা পাবে। আমাদের সংবিধান রয়েছে এবং সেটাই প্রেসিডেন্ট অ্যারোইয়োর হাত থেকে পরবর্তী প্রেসিডেন্টের হাতে ক্ষমতার হস্তান্তর নিশ্চিত করবে।

No comments

Powered by Blogger.