ম্যারাথনে বিশ্ব রেকর্ড

ভোর সকালে এসএ গেমসে একটি বিশ্ব রেকর্ডের সাক্ষী হলো বাংলাদেশ! ম্যারাথনের বিশ্ব রেকর্ড। টঙ্গী থেকে দৌড় শুরু করে শেষ হয় সেটি ক্যান্টনমেন্টের সেনাকুঞ্জে। সবার আগে দৌড় শেষ করে নেপালি ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখলেন রাজেন্দ্র বাহাদুর ভান্ডারি। সময় লাগল ১ ঘণ্টা ৫৪ মিনিট। এই ইভেন্টে বিশ্ব রেকর্ড ২ ঘণ্টা ৬ মিনিটের, এশীয় রেকর্ড ২ ঘণ্টা ১৬ মিনিটের।
কিন্তু এ তো অবিশ্বাস্য ব্যাপার! এটি ঘটল কী করে? পরে খোঁজ নিয়ে জানা গেল ৪২ কিলোমিটারের ম্যারাথন শেষ হয়েছে ৩৫ কিলোমিটারে, অর্থাত্ প্রায় ৭ কিলোমিটার কম!
এই ইভেন্টে দ্বিতীয় হয়েছেন শ্রীলঙ্কার অজিত বান্দারা, তৃতীয় ভারতের রাম সিং। বাংলাদেশের দুই প্রতিযোগী গোলাম মাওলা ও ফিরোজ খান সতীর্থদের ব্যর্থতার ধারাবাহিকতা অক্ষুণ্ন রেখে সবার শেষ দুটি স্থান পেয়েছেন। হয়েছেন সপ্তম ও অষ্টম।
ওই দ্বিতীয় স্থানে থাকা বান্দারার পক্ষ থেকেই ওঠে অনিয়মের অভিযোগ, ১০০ ডলার দিয়ে অভিযোগ দায়ের করে শ্রীলঙ্কা দল। টেকনিক্যাল কমিটি এই অভিযোগের কোনো সদুত্তর দিতে পারেনি। জুরি কমিটির সদস্য ও বাংলাদেশ অ্যাথলেটিকস ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম জানিয়েছেন, ‘ফেডারেশনের সদস্যদের দিয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি ১০ দিনের মধ্যে রিপোর্ট দেবে।’
হা হতোস্মি! খেলা শেষ হওয়ার ১০ দিন পর রিপোর্ট। তবে শাহ আলম জানিয়েছেন, ‘ফলে কোনো হেরফের হবে না।’ আর বিশ্ব রেকর্ড? এখানেও হাস্যকর যুক্তি, ‘টাইমিং দেখানো হবে না।’ অফিসিয়াল ফলাফলে অবশ্য সময়টা দেখানোও হয়নি। রাস্তা ৭ কিলোমিটার কেন কম হলো, সেটা তদন্ত করে দেখা গেল এটা হয়েছে গেমসের অনুষ্ঠানবিষয়ক কমিটির একটা সিদ্ধান্তের কারণেই। দৌড় বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও গেমসের অনুষ্ঠানবিষয়ক কমিটি সমাপনী অনুষ্ঠানের ব্যস্ততার কারণ দেখিয়ে তা হতে দেয়নি। আর তাতেই কমে গেল ওই সাত কিলোমিটার।
ফল যেহেতু এটাই থাকবে, ম্যারাথনে হিমালয় দুহিতা নেপালের আধিপত্যই টিকে থাকছে। এই নিয়ে এটি ম্যারাথনে তাদের পঞ্চম সোনা। ১৯৮৪ সালে দেশের মাটিতে সোনা জিতেছিলেন নেপালি অ্যাথলেট। এরপর ১৯৮৫ ও ১৯৮৭ তে সেটা ধরে রাখেন বৈকুণ্ঠ মানান্ধার। তারপর তিনটি গেমসে ম্যারাথন থেকে শূন্য হাতে ফিরলেও ১৯৯৫তে টিকা ভোপালির হাত ধরে আসে সোনা। এবারের গেমসে আবার জিতলেন রাজেন্দ্র ভান্ডারি।

No comments

Powered by Blogger.