সন্ত্রাস ও দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান

রাজনৈতিকভাবে অনেকটাই নেতিয়ে পড়েছিল পশ্চিমবঙ্গের শাসকজোট বামফ্রন্ট। বিশেষ করে ২০০৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচন, ২০০৯ সালের লোকসভা ও পৌরসভার নির্বাচনে ব্যাপক পরাজয়ে রাজ্যবাসীর মনে এমন ধারণা জন্মে যায় যে বামফ্রন্টের বুঝি দিন শেষ হয়ে আসছে। সামনের দিন বুঝি তৃণমূল কংগ্রেসের।
তবে তৃণমূলের এই উত্থানকে তেমন আমল না দিয়ে গতকাল রোববার কলকাতায় এক মহাসমাবেশ করে পশ্চিমবঙ্গবাসীকে বামফ্রন্ট বুঝিয়ে দিল তারা ফুরিয়ে যায়নি। জ্যোতি বসুহীন বামফ্রন্ট আবার চাঙ্গা হয়েছে, জ্যোতি বসুর দেখানো পথেই। সামনের দিন বামফ্রন্টেরই।
গতকাল দুপুরে কলকাতার ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে আয়োজন করা হয় এই মহাসমাবেশের। এই সমাবেশে রাজ্যের প্রতিটি জেলা থেকে যোগ দেয় হাজারও মানুষ। বামফ্রন্টের দাবি এই সমাবেশে নয় থেকে ১০ লাখ মানুষ উপস্থিত হয়েছে।
সমাবেশে বামফ্রন্ট নেতারা জানান, লোকসভা নির্বাচনের পর থেকে এখন পর্যন্ত এই রাজ্যে ১৭৮ জন বাম নেতা ও কর্মী বিরোধীপক্ষের হাতে নিহত হয়েছেন। নেতারা কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস ও দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার অভিযোগ এনে অবিলম্বে দেশজুড়ে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান। একই সঙ্গে তাঁরা মাওবাদীদের সঙ্গে তৃণমূলের যোগাযোগ থাকার অভিযোগ তুলে বলেন, এই অশুভ আঁতাতকে ভেঙে এই রাজ্যে শান্তির বাতাবরণ তৈরি করতে হবে। মানুষের কাছে যেতে হবে বামফ্রন্টের প্রতিটি নেতা-কর্মীকে। তাঁদের বোঝাতে হবে এই রাজ্যে বামফ্রন্টের বিকল্প কেবল বামফ্রন্টই। তাঁরাই পারবে এই রাজ্যে স্থিতিশীল শাসন দিতে। তাই বামফ্রন্টের পতাকাতলে সমবেত হয়ে জ্যোতি বসুর আদর্শ বাস্তবায়নের দাবি জানান তাঁরা।
মহাসমাবেশে বক্তব্য দেন সিপিএমের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক ও বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু, সিপিআইয়ের রাজ্য সম্পাদক মঞ্জু কুমার মজুমদার, আরএসপির কেন্দ্রীয় নেতা ক্ষিতি গোস্বামী, ফরোয়ার্ড ব্লকের কেন্দ্রীয় নেতা ও রাজ্য সম্পাদক অশোক ঘোষ, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য, প্রবীণ কমিউনিস্ট নেতা ও সিপিএম পলিটব্যুরো সদস্য মহম্মদ আমিন প্রমুখ নেতারা।

No comments

Powered by Blogger.