দশমিক ১৬ সেকেন্ডের আক্ষেপ

ফিনিশিং টাচটা দিয়েই ফিরে তাকালেন ইলেকট্রনিকস স্কোরবোর্ডের দিকে। হতাশায় নিজের হাত মুঠো করে স্টার্টিং ব্লকে সজোরে দিলেন এক ঘা। মাত্র ০.১৬ সেকেন্ড! মাইক্রো সেকেন্ডের ব্যবধানে মুঠো গলে বেরিয়ে গেল মাহফুজা খাতুনের সোনা। অথচ এক দিন আগেই বলেছিলেন, ‘দেখবেন, এখানে আমি সোনা জিততে পারি।’ চেষ্টাও করেছিলেন। কিন্তু দুর্ভাগ্য ছুঁয়ে গেল খর্বাকৃতির মাহফুজাকে। দীর্ঘাঙ্গি শ্রীলঙ্কার নাতাশা করুণারত্নে তাঁর সামান্য আগে টাচপ্যাডে হাত ছুঁয়ে জিতে নিলেন ১০০ মিটার ব্রেস্টস্ট্রোকের সোনা।
বাংলাদেশের সাঁতারুদের এই এক সমস্যা। গতির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে কাছাকাছি গেলেও শেষ মুহূর্তে শারীরিক উচ্চতা তাঁদের পেছনে ঠেলে দেয়। না হলে বাংলাদেশের সাঁতারের অতিকাঙ্ক্ষিত প্রথম সোনাটি কালই হয়তো এসে যেত। কিন্তু তা এল না বলে সাঁতারের তৃতীয় দিনটিও বাংলাদেশের জন্য হতাশার।
পুলের নীল জল দাপিয়ে বেরিয়েছেন ভারতীয়রাই। কালও চারটি সোনা জিতেছে ভারত। গেমস রেকর্ড গড়েছেন ভারতের এক নম্বর সাঁতারু সন্দীপ সেজওয়াল ও বালাকৃষ্ণান বদ্রিনাথ। ১০০ মিটার ব্রেস্টস্ট্রোকে ১:০৫.০১ সেকেন্ড সময় নিয়ে গেমসে নিজের দ্বিতীয় রেকর্ড গড়লেন সন্দীপ। গত গেমসে কলম্বোতে নিজের গড়া রেকর্ড (১:০৭.৭৩ সে.) নিজেই ভাঙলেন দিল্লির তরুণ। এই ইভেন্টে রুপা ভারতের পুনিত রানার। ব্রোঞ্জ বাংলাদেশের কামাল হোসেনের (১:০৭.৩২ সে.)। অন্তত ১টি সোনার প্রত্যাশা ছিল ইসলামাবাদ গেমসের সোনাজয়ী রুবেল রানাকে ঘিরে। কাল তিনি চূড়ান্ত হতাশা উপহার দিয়েছেন। কোনো পদকই জিততে পারেননি ৫০ মিটার ব্যাকস্ট্রোকে। ২৮.৬৬ সেকেন্ডে সাঁতার শেষ করে বললেন, ‘আমি হতাশ।’ এই ইভেন্টে স্বদেশি অর্জুন মুরালিধরনের রেকর্ড (২৮.২৮ সেকেন্ড) ভেঙে সোনা জিতেছেন ভারতের বদ্রিনাথ (২৭.৬৩ সেকেন্ড)। রুপা শ্রীলঙ্কার হেশান বান্দারার।
সাঁতারপুলে দিনের একমাত্র সাফল্য মেয়েদের ১০০ মিটার ব্রেস্টস্ট্রোকে—রুপা জিতেছেন মাহফুজা খাতুন। ব্রোঞ্জ জিতেছেন ডলি আক্তার। ১০০ মিটার বাটারফ্লাইয়ে ব্রোঞ্জ বাংলাদেশের জুয়েল আহমেদের (৫৮.৪ সেকেন্ড)। এই ইভেন্টে সোনাজয়ী ভারতের অর্জুন মুরালিধরন। রুপা অ্যান্থনি ফ্রান্সিসের। ৫০ মিটার ব্যাকস্ট্রোকে সোনা জিতেছেন ভারতের ফারিহা জামান, রুপা শচিনী আমারাসিংহে ও ব্রোঞ্জ পাকিস্তানের কিরণ খান।

No comments

Powered by Blogger.