ইসরায়েলি রাষ্ট্রদূতকে সতর্ক করল অস্ট্রেলিয়া

দুবাইয়ে শীর্ষ এক হামাস কমান্ডার হত্যায় জড়িত সন্দেহভাজন ‘মোসাদ’ সদস্যরা অস্ট্রেলিয়ার তিনটি পাসপোর্ট ব্যবহার করেছিল। ওই ঘটনার জন্য গতকাল বৃহস্পতিবার ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূতকে তলব করে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী কেভিন রাড বলেছেন, হামাস নেতা মাহমুদ আল-মাবু হত্যার ঘটনায় ১৫ জন নতুন সন্দেহভাজনের মধ্যে একজন নারী ও দুজন পুরুষ অস্ট্রেলীয় নাগরিকের জাল পাসপোর্ট ব্যবহার করে বলে দুবাই পুলিশ নিশ্চিত হয়। এ রকম ঘটনার পর অস্ট্রেলিয়া চুপ করে বসে থাকতে পারে না। রাড এবিসি টেলিভিশনকে দেওয়া সাক্ষাত্কারে বলেন, কেবল হত্যার উদ্দেশ্যে কোনো রাষ্ট্র অস্ট্রেলিয়ার পাসপোর্ট ব্যবহার কিংবা জাল করে থাকলে তা খুবই উদ্বেগজনক।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দুবাই পুলিশ সন্দেহভাজনদের নতুন তালিকায় অস্ট্রেলিয়া, ব্রিটেন, ফ্রান্স ও আয়ারল্যান্ডের পাসপোর্টধারীদের নাম উল্লেখ করার পর অস্ট্রেলীয় কর্মকর্তারা রাতভর বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছেন।
দুবাই পুলিশ গত বুধবার সন্দেহভাজন ওই ১৫ জনের নাম প্রকাশ করে। নতুন এ তালিকায় পাঁচজন নারী রয়েছেন। তিনজন অস্ট্রেলীয় ছাড়াও তিনজন আইরিশ নাগরিকের জাল পাসপোর্ট ব্যবহার করার কথা জানিয়েছে দুবাই পুলিশ। এর আগে সন্দেহভাজন ১১ জন বিদেশির নাম-পরিচয় প্রকাশ করে পুলিশ। সব মিলিয়ে ওই হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত ও হত্যাকারীদের বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করেছেন, এমন ২৬ জনের তালিকা প্রকাশ করল দুবাই পুলিশ।
দুবাইয়ের একটি বিলাসবহুল হোটেলে ২০ জানুয়ারি ওই হামাস নেতাকে হত্যা করা হয়। দুবাই পুলিশ জোর দিয়ে বলছে, এ হত্যাকাণ্ডের ধরন থেকে এটা নিশ্চিত এতে ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের সম্পৃক্ততা রয়েছে।
অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী স্টিফেন স্মিথ বলেন, প্রাথমিকভাবে দেখা গেছে, অস্ট্রেলিয়ার পাসপোর্টগুলো জাল ছিল। তিনি ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত জুভাল রোটেমকে তলব করে ঘটনার ব্যাখ্যা দাবি করেন।
স্মিথ বলেন, ‘এ ঘটনা তদন্তে অস্ট্রেলিয়ার ফেডারেল পুলিশকে ইসরায়েল পূর্ণ সহযোগিতা দেবে বলে অস্ট্রেলিয়া আশা করে। তিনি অস্ট্রেলিয়ার পাসপোর্টধারী ইসরায়েলে বসবাসরত তিন নাগরিক হত্যাকাণ্ডে আদৌ জড়িত ছিলেন, নাকি তাঁরা পাসপোর্ট প্রতারণার শিকার হয়েছেন, এ ব্যাপারে আমরা নিশ্চিত নই। ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’
ইসরায়েলি গণমাধ্যমের এক খবরে বলা হয়েছে, অস্ট্রেলীয় নাগরিক কোরম্যান (৩৪) তেল আবিবের একটি দোকানে কাজ করেন। তাঁর পাসপোর্ট জাল করা হয়েছে, এমন খবরে কোরম্যান দুঃখ করে বলেন, ‘আমার পাসপোর্ট চুরি করে একজন হামাস নেতাকে হত্যা করা হয়েছে—এসব খবর সত্যি অবিশ্বাস্য মনে হচ্ছে।’
ইসরায়েল দাবি করে আসছে, মোসাদ ওই হত্যাকাণ্ডে জড়িত দুবাই পুলিশের এই দাবির পক্ষে কোনো তথ্যপ্রমাণ নেই। এর আগে ব্রিটেনের সানডে টাইমস-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ওই হত্যা মিশন অনুমোদন করেন এবং মিশনের উদ্দেশ্যে দেশ ত্যাগের আগে হত্যাকারীদের সঙ্গে বৈঠক করেন।

No comments

Powered by Blogger.