কোটানের জন্য আবেগের ম্যাচ

অনুশীলন শেষ করে হোটেলে ঢোকার সময় বিষণ্ন দেখাল জর্জ কোটানকে। আগের বিকেলে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ভালো খেলেও হেরে গেছে তাঁর দল। আজ বাংলাদেশের কাছে হারলে টুর্নামেন্টই শেষ। অস্ট্রিয়ান কোচের মনটা ভালো থাকে কী করে?
বাংলাদেশ-পাকিস্তান ম্যাচ নিয়ে কথা বলার পর অনিবার্যভাবেই চলে এল অন্য একটা প্রসঙ্গ। বাংলাদেশের বিপক্ষে বাঁচা-মরার ম্যাচটা তো কোটানের জন্য বিশেষ ম্যাচও। ২০০৩ সালে যে বাংলাদেশ দলকে সাফ ফুটবলে চ্যাম্পিয়ন করে গেছেন, সেই বাংলাদেশের বিপক্ষেই আজ তাঁর লড়াই। কোটানের কাছে এটা আবেগের ম্যাচও নয় কি?
পেশাদার কোচরা আবেগকে সন্তর্পণে মাটিচাপা দিয়ে কথা বলেন। কোটানও এর বাইরের দুনিয়ার কেউ নন, তবে স্বীকার করলেন, ‘হ্যাঁ, এটা আমার জন্য শুধুই একটা ম্যাচ নয়। বিশেষ একটা ম্যাচ। আমি অনেক কিছুই অনুভব করছি।’ কী সেটা, জানতে চাইলে আবার ঢুকে পড়লেন পেশাদারিত্বের খোলসেই, ‘এখন শুধু আমার দায়িত্ব নিয়েই ভাবা উচিত। আমার চাকরি এখন পাকিস্তানে।’
তা ঠিক, তারপরও নিজের সাবেক দলের বিপক্ষে একটুও কি আবেগ ছুঁয়ে যাবে না? মনে যা-ই থাক, মুখের কথায় কোটান নিজেকে একটা সীমারেখার মধ্যেই আটকে রাখলেন, ‘আবেগ প্রশ্রয় দেওয়া ঠিক হবে না আমার। এখন আমার দলের প্রতিই সব মনোযোগ দিতে চাই।’ পাকিস্তানের কোচ না হলে বাংলাদেশ-পাকিস্তান লড়াইয়ে বাংলাদেশের পক্ষেই যে তাঁর অবস্থান হতো, সেটি কিন্তু জানাতে ভুললেন না, ‘অমন পরিস্থিতিতে অবশ্যই আমি বাংলাদেশের পাশেই থাকব।’ এই প্রথম কোটানের মুখে এক টুকরো হাসি।
এ-কথা ও-কথার পর এসে যায় বাংলাদেশের বর্তমান দলের সঙ্গে ২০০৩ সালের তাঁর দলটির তুলনা। কোটান রাখঢাক না রেখেই ২০০৩ সালের সাফজয়ী দলটিকেই এগিয়ে রাখেন, ‘আমার দলটি এই দলটির চেয়ে শক্তিশালী ছিল।’ পরশু ভুটানের বিপক্ষে বাংলাদেশ দলকে দেখার পর তাঁর কী মনে হয়েছে? কোটানের মূল্যায়ন, ‘এটি তরুণ দল। ভবিষ্যত্ ভালো। মাঝমাঠে একটা ছেলে খুব ভালো খেলেছে। গোটা দলেরই গতি আছে।’
বাংলাদেশ দল সাফ জিততে পারবে কি না—প্রশ্নে কোটানের মুখে সারাসরি না উত্তর শোনা যায়নি। তবে এটা বলেছেন, ‘আমি মনে করি না এই টুর্নামেন্টে বাংলাদেশ সবচেয়ে শক্তিশালী।’ তাহলে চ্যাম্পিয়ন হতে পারে কারা? কোটানের উত্তর, ‘বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ, পাকিস্তান—এই চার দলের কারও জেতা উচিত।’

No comments

Powered by Blogger.