কাল শুরু ‘রঙিন’ প্রিমিয়ার টি-টোয়েন্টি

ভারতের আইপিএল বা চ্যাম্পিয়নস লিগের মতো অতটা বর্ণিল হয়তো হবে না। তবে ঢাকায় কাল থেকে শুরু বিগ বস প্রিমিয়ার ডিভিশন টি-টোয়েন্টি লিগেও জ্বলবে ফ্লাডলাইট আর আতশবাজি, উড়বে ফানুস, নাচবে চিয়ারলিডার, থাকবে টেলিভিশন ক্যামেরা। কাল এক সংবাদ সম্মেলনে সিসিডিএম জানিয়েছে, দর্শকদের মাঠে টানতেই এবারের প্রিমিয়ার লিগে উত্সবের এই রঙিন মোড়ক।
লিগ হবে দুই গ্রুপে। ‘এ’ গ্রুপের ছয় দল গতবারের টি-টোয়েন্টি চ্যাম্পিয়ন মোহামেডান, বিমান, নবাগত খেলাঘর, পারটেক্স, বিকেএসপি ও ভিক্টোরিয়া। ‘বি’ গ্রুপে আছে গতবারের রানার্সআপ গাজী ট্যাংক, ওল্ড ডিওএইচএস, কলাবাগান, আবাহনী, সূর্যতরুণ ও সিসিএস। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়াম, ধানমন্ডি ক্রিকেট স্টেডিয়াম ও ফতুল্লা স্টেডিয়াম—তিন ভেন্যুতে প্রতিদিন খেলা হবে মোট ছয়টি করে। ২০ অক্টোবর মিরপুর স্টেডিয়ামেই দুটি সেমিফাইনাল, পরদিন ২১ অক্টোবর একই মাঠে হবে তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচ ও ফাইনাল। বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল দেশ টিভি টি-টোয়েন্টি লিগের দুটি সেমিফাইনাল ও ফাইনালসহ মোট ৮টি ম্যাচ সরাসরি সম্প্রচার করবে। রেডিও ফুর্তি আয়োজন করবে কুইজ প্রতিযোগিতার। গ্রুপ পর্বের ম্যাচে গ্যালারি উন্মুক্ত থাকলেও দুটি সেমিফাইনাল ও ফাইনালে টিকিট কেটে ঢুকতে হবে মাঠে। এই তিন ম্যাচে দর্শকদের জন্য থাকবে র্যাফল ড্রর মাধ্যমে আকর্ষণীয় পুরস্কার।
২০ লাখ টাকায় লিগের স্পনসর হয়েছে পারটেক্স বেভারেজের এনার্জি ড্রিংক বিগ বস। তবে লিগের মোট বাজেট প্রায় ২৯ লাখ টাকা বলে জানিয়েছে সিসিডিএম। এর মধ্যে ১৩ লাখ টাকার মতো খরচ হবে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান, আতশবাজির উত্সবসহ অন্যান্য পার্শ্ব আয়োজনে। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে লিগের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ১২টি দল ক্লাবের পতাকা নিয়ে মাঠ প্রদক্ষিণ করবে। প্রতিটি ম্যাচের বিরতিতে সংগীত পরিবেশন করবেন শিল্পীরা, থাকবে ডিস্ক জকি। ফাইনালের দিন হবে কনসার্ট।
যে রকম জাঁকালো আয়োজন, তাতে এবারের টি-টোয়েন্টি লিগে হয়তো অনেক কিছুই চোখে পড়বে। কিন্তু লিগ শুরুর আগেই যে চোখ আটকে যাচ্ছে প্রাইজমানির বিবিধ অসামঞ্জস্যে! লিগের দলীয় প্রাইজমানিগুলো এ রকম—চ্যাম্পিয়ন দল পাবে ২ লাখ টাকা, রানার্সআপ ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা, তৃতীয় স্থানে থাকা দল ১ লাখ টাকা ও চতুর্থ স্থানের দল ৭৫ হাজার টাকা। দেশের শীর্ষ টি-টোয়েন্টি লিগের চ্যাম্পিয়ন-রানার্সআপদের পুরস্কার মূল্য এত কম কেন সেটা যেমন প্রশ্ন, তেমনি বিস্ময়কর ব্যক্তিগত প্রাইজমানিগুলোর ব্যবধানও। ম্যান অব দ্য টুর্নামেন্ট যিনি হবেন, তিনি পাবেন তৃতীয় স্থান পাওয়া দলের সমান ১ লাখ টাকা! আবার গ্রুপ পর্বের প্রতি ম্যাচের ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার ৫ হাজার টাকা করে হলেও সেমিফাইনালে সেটা ২৫ হাজার করে এবং ফাইনালে বেশি দশ গুণ—মানে ৫০ হাজার টাকা! এ ছাড়া স্পনসরদের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ ছক্কা মারা ব্যাটসম্যান, সেরা ব্যাটসম্যান, দ্রুততম হাফ সেঞ্চুরিয়ান, সেরা বোলারকেও দেওয়া হবে ১ লাখ টাকা করে। আর লিগে অংশগ্রহণকারী দলগুলোকে বিসিবি এবার অংশগ্রহণ সম্মানী দিচ্ছে ৫০ হাজার টাকা করে।
গ্রুপ পর্বে যে পাঁচটি দিবারাত্রির ম্যাচ তার দুটিই আবাহনীর। গতবারের চ্যাম্পিয়ন মোহামেডানের দিবারাত্রির ম্যাচ মাত্র একটি কেন, সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্ন উঠেছিল এটা নিয়ে। জবাবে সিসিডিএম চেয়ারম্যান ও আবাহনী কর্মকর্তা জি এস হাসান তামিম বলেছেন, ব্যাপারটা উদ্দেশ্যমূলক নয়। ফরম্যাট মেনেই করা হয়েছে ফিকশ্চার। আর ফরম্যাট করা হয়েছে সব দলের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে। প্রশ্ন উঠেছে ফ্লাডলাইটের আলোয় খেলা আয়োজন নিয়েও। বিদ্যুত্সংকটের মৌসুমে এই আয়োজন বিলাসিতা নয় তো? সিসিডিএম চেয়ারম্যানের বক্তব্য, ‘ক্রিকেটের স্বার্থে এর জনপ্রিয়তা বাড়ানোর জন্যই এই উদ্যোগ।’

No comments

Powered by Blogger.