সুগন্ধি চাল রপ্তানিতে সরকার আগ্রহী নয়

চাল রপ্তানির সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে চাইছে সরকার। দুই মাস আগে শর্ত সাপেক্ষে সুগন্ধি চাল রপ্তানির অনুমতি দেওয়া হলেও গতকাল রপ্তানিকারকদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যেকোনো ধরনের চাল রপ্তানির ব্যাপারে সরকার আগ্রহী নয়।
গতকাল সোমবার সচিবালয়ে বাংলাদেশ চাল রপ্তানিকারক সমিতির চার সদস্যের এক প্রতিনিধিদলের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকে সরকারের এমন মনোভাবের কথা জানিয়ে দিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী ফারুক খান।
সমিতির সভাপতি শাহ আলম প্রতিনিধিদলটির নেতৃত্ব দেন। তবে বৈঠক শেষে বাণিজ্যমন্ত্রী ও রপ্তানিকারকদের কেউ সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেননি।
বৈঠক সূত্র জানায়, বাণিজ্যমন্ত্রী রপ্তানিকারকদের জানিয়ে দিয়েছেন, চাল রপ্তানি না করার সিদ্ধান্তেই তিনি অটল। বাণিজ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, আগের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ১০ হাজার টন চাল রপ্তানি করতে পারলে হয়তো ১০০ লোকের উপকার হবে। কিন্তু ক্ষতি হবে ১৫ কোটি মানুষের।
সূত্রমতে, বাণিজ্যমন্ত্রী রপ্তানিকারকদের বলেছেন, চালের মূল্য এখন যে বাড়তির দিকে, এর অন্যতম কারণ হচ্ছে ১০ হাজার টন সুগন্ধি চাল রপ্তানির অনুমতি দেওয়া। সুতরাং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত কোনো চালই আর রপ্তানির পক্ষে নয় সরকার।
চাল রপ্তানি বিষয়ে গত ২৫ আগস্ট বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের রপ্তানি-১ অধিশাখা থেকে জারি করা প্রজ্ঞাপনে মাত্র চার মাসের জন্য অর্থাত্ আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে ১০ হাজার টন সুগন্ধি চাল রপ্তানির অনুমোদন দেওয়া হয়। এর আগে গত জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে খাদ্যমন্ত্রী আবদুর রাজ্জাকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় সুগন্ধি চাল রপ্তানির।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, প্রজ্ঞাপনের পর চাল রপ্তানির জন্য মন্ত্রণালয়ে আবেদন জমা পড়ে ১২০টি। আবেদনগুলো যাচাই-বাছাই করতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে চার সদস্যের একটি কমিটিও গঠন করা হয়। কিন্তু চালের দর বাড়তে থাকায় সরকার চাল রপ্তানি না করার পক্ষে অবস্থান নেয়।
এদিকে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) থেকে প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যায়, দুই মাস ধরে শুধু সুগন্ধি নয়, সব ধরনের চালের দরই কেজিতে দুই থেকে তিন টাকা বেড়েছে।
যেসব চাল রপ্তানির কথা বলা হয়েছিল, সেগুলো হচ্ছে কালিজিরা, চিনিগুঁড়া, বাদশাভোগ, দুলাভোগ, কাটারীভোগ, রাঁধুনীপাগল, জটাবাসফুল, কুলশীমালা, বিআর-৫, বিআর-৩৪, বিআর-৩৭ ও বিআর-৩৮।
যোগাযোগ করলে চাল রপ্তানিকারক সমিতির সভাপতি শাহ আলম প্রথম আলোকে জানান, অন্য চালের দাম বেড়ে যাওয়ার কথা বলে বাণিজ্যমন্ত্রী সুগন্ধি চাল রপ্তানির ব্যাপারে নেতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছেন। তবে সীমিত আকারে রপ্তানির কথা বিবেচনারও আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
শাহ আলম আরও জানান, ‘দেশে অনেক সুগন্ধি চাল উদ্বৃত্ত রয়েছে। এগুলো রপ্তানি হওয়া দরকার। আশা করছি, সুগন্ধি চাল রপ্তানির সুযোগ দেবে সরকার।’

No comments

Powered by Blogger.