চার দিন বন্ধ থাকার পর পঞ্চগড় জেম জুট আবার চালু

শ্রমিকদের ধর্মঘটের কারণে অনির্দিষ্টকালের জন্য উত্তরাঞ্চলের সর্ববৃহত্ পাটকল জেম জুট লিমিটেড বন্ধ ঘোষণার চার দিন পর গত শনিবার থেকে আবারও চালু হয়েছে।
গত শুক্রবার রাতে কারখানার সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের পর কর্তৃপক্ষ মিল চালুর সিদ্ধান্ত নেয়। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে সমঝোতা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. নজরুল ইসলাম।
রাতেই মাইকিং করে মিল চালুর সংবাদ জানানোর পর সকাল থেকে শ্রমিকেরা কাজে যোগদান করেন। ৬ অক্টোবর শ্রমিক ধর্মঘটের কারণে কর্তৃপক্ষ অনির্দিষ্টকালের জন্য মিল বন্ধ ঘোষণা করে।
জেম জুট লিমিটেডের ব্যবস্থাপক (প্রশাসন ও মানবসম্পদ) বোরহান উদ্দিন শামীম স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ‘বেআইনি ধর্মঘটের কারণে বন্ধ ঘোষিত জেম জুট লিমিটেডের সাধারণ শ্রমিকদের সম্মিলিত দাবির মুখে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা মিল কর্তৃপক্ষের কাছে মিল চালু করার জন্য বিশেষ অনুরোধ জানান। এ অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে কর্তৃপক্ষ পঞ্চগড় জেলা প্রশাসনের মধ্যস্থতায় অনুষ্ঠিত এক আলোচনায় বসে। বেআইনি ধর্মঘটে নেতৃত্বদানকারী কর্মকর্তারা তাঁদের কৃতকর্মের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করায় শনিবার থেকে মিল চালু করা হয়। সকাল সাতটা থেকে মিলে স্বাভাবিক উত্পাদন শুরু হয়েছে।’
পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার ময়দানদীঘি ইউনিয়নের মুসলিমবাগে অবস্থিত এই পাটকল ২০০৩ সালে চালু হয়। শতভাগ রপ্তানিমুখী এই প্রতিষ্ঠানের দুটি ইউনিটে ২৯৬টি লুম রয়েছে। এতে বছরে প্রায় ৭০ থেকে ৮০ কোটি টাকার জুট ব্যাগ ও জুট ইয়ার্ন (সুতা) বিদেশে রপ্তানি করা হয়। এই মিলে প্রায় তিন হাজার শ্রমিক ও কর্মকর্তা-কর্মচারী কর্মরত রয়েছেন।
কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কারখানার চারজন কর্মকর্তা ক্ষমতার অবৈধ দাপট ও দৌরাত্ম্য দেখিয়ে পরিস্থিতি খারাপ করেছেন। তাঁরা হলেন সহব্যবস্থাপক (বিক্রয়) মো. মাহবুবুর রহমান শামীম, ব্যবস্থাপক (হিসাব) মো. শামীম বিন হক, ব্যবস্থাপক (মানবসম্পদ ও প্রশাসন) মো. বোরহানউদ্দিন শামীম ও উপব্যবস্থাপক (কোয়ালিটি কন্ট্রোল) মো. সাইফুল ইসলাম। তাঁদের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার করে দীর্ঘদিন ধরে শ্রমিক নির্যাতনসহ বিভিন্ন অপকর্মের অভিযোগ আসছিল।
তবে শামীম বিন হক এসব অভিযোগ অস্বীকার করেন। আর কারখানার সিওও মেজর (অব.) সোহেল রানা এ প্রসঙ্গে বলেন, কোনো কারণ ছাড়াই শ্রমিকেরা সকালে কাজ বন্ধ রেখে বেরিয়ে যান। পরে তাঁদের এক পক্ষ কাজ করতে চাইলেও অন্য পক্ষ বাধা দেয়। সংঘর্ষের আশঙ্কায় মিলের নিরাপত্তার স্বার্থে প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল।

No comments

Powered by Blogger.