বন্যার ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে বাংলাদেশকে ৩ হাজার কোটি টাকা অনুদান দেবে বিশ্বব্যাংক by এমএম মাসুদ

অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, সাম্প্রতিক বন্যাসহ জলবায়ুজনিত বিভিন্ন ধরনের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে বাংলাদেশকে আপৎকালীন ঝুঁকি মোকাবিলায় এককালীন ২৫ কোটি ডলার (প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা) অনুদান দেবে বিশ্বব্যাংক। বুধবার স্থানীয় সময় যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে বিশ্বব্যাংকের সদর দপ্তরে চলমান বার্ষিক সভার সাইড লাইনে সংস্থাটির ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্টিন রেইজারের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান উপদেষ্টা।

একইদিনে যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের কর্মকর্তা ও পরে ভারতের অর্থমন্ত্রী নির্লমা শিতরামের সঙ্গেও বৈঠক করেন অর্থ উপদেষ্টা। বৈঠকে ব্যবসা-বাণিজ্য, দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক উন্নয়ন, অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন বিষয়ে আলোচনা করেন। এ ছাড়া বিশ্বব্যাংক গ্রুপের বার্ষিক সম্মেলনে যোগ দিয়ে সাইড লাইনে বিভিন্ন দেশ এবং উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার সঙ্গে বৈঠক করছেন বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর।

আগস্টের শেষ থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশের ইতিহাসে ভয়াবহ বন্যা হয় ফেনী-নোয়াখালী অঞ্চলে। এতে সৃষ্ট বন্যায় দেশটির দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল ও উত্তরাঞ্চলে জনজীবন হয়ে উঠে দুর্বিষহ। বিশেষ প্রভাব পড়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থায়। ফসল নষ্ট হওয়ায় ঊর্ধ্বমুখী ছিল নিত্যপণ্যের দাম। এ প্রেক্ষাপটে গ্রামীণ জীবনমান স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে অন্তর্বর্তী সরকারের পাশে দাঁড়াচ্ছে বিশ্বব্যাংক।

সভা শেষে সাংবাদিকদের অর্থ উপদেষ্টা বলেন, এবারের সম্মেলনে উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি তাদের প্রত্যাশা একটু বেশি। তারা আমাদের সব ধরনের সংস্কার কার্যক্রমে সহায়তা দেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। তাই বাংলাদেশকে আপৎকালীন ঝুঁকি মোকাবিলায় এককালীন ২৫০ মিলিয়ন বা ২৫ কোটি ডলার অনুদান দেবে বিশ্বব্যাংক।

সংকট উত্তরণের পথে বৃহৎ ক্ষেত্রগুলোতে উন্নয়ন সহযোগীদের বিশেষ সহায়তা নবজাগরণে আরও নতুন পরিকল্পনা তৈরিতে বিশেষ ভূমিকা রাখছে। একদিকে ঋণ প্রদান, অন্যদিকে আর্থিক সহায়তা কিংবা অনুদান সব মিলিয়ে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে নতুন সোপান রচনা করবে দাতাগোষ্ঠীগুলোর এসব সহায়তা, এমনটাই মনে করেছেন সরকারের প্রতিনিধিরা।

এদিকে বকেয়া ঋণ পরিশোধ করতে পারায় বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানিয়েছে বিশ্বব্যাংক। রিজার্ভ থেকে এক পয়সাও না নিয়ে প্রায় আড়াই বিলিয়ন ডলার ঋণের কিস্তি শোধ করার ফলে ডলার নিয়ে অস্থিরতাও কমে আসছে। ফলে সামনের দিনগুলোতে আমদানিজনিত মূল্যস্ফীতিও কমে আসবে। ডলার সংকট কাটিয়ে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরছে দেশের অর্থনীতি। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার আগের সরকারের দায় পরিশোধ করছে। এজন্য কিছুটা চাপও পেতে হচ্ছে। 

No comments

Powered by Blogger.