অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠছে মনিপুর

ক্রমশ অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠছে মনিপুর। কুকি ও মেইতি সম্প্রদায়ের মধ্যে চলমান উত্তেজনা, সংঘর্ষে সেখানে প্রায়দিনই মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। চলছে প্রতিবাদ, বিক্ষোভ। সম্প্রতি ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোর পর পরিস্থিতি বেসামাল হয়ে ওঠে। তাতে প্রায় হারান কমপক্ষে ৫ জন। রোববার রাতে মনিপুরের ইম্ফল পশ্চিম জেলায় সেনাবাহিনীর সাবেক একজন জওয়ানকে পিটিয়ে হত্যা করেছে কে বা কারা। তার নাম লিমলাল মাটে। তিনি কুকি সম্প্রদায়ের। ভুল করে তিনি মেইতি অধ্যুষিত সেকামি এলাকায় গাড়ি চালিয়ে প্রবেশ করেছিলেন। এ জন্য তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করেছে কুকি সংগঠনগুলো। অনলাইন ডেকান হেরাল্ড এ খবর দিয়ে বলছে, নিহত লিমলাল কুকি অধ্যুষিত কাংগোকপি জেলার শ্যারন ভেং-এর বাসিন্দা।

সোমবার রক্তের মধ্যে পড়ে থাকতে দেখা যায় তার মৃতদেহ। কুকিদের একটি সংগঠন বলেছে, তিনি সেনাবাহিনীর সাবেক একজন সদস্য। কয়েক বছর আগে হারিয়েছেন স্ত্রীকে। তারপর থেকে নিজের ছেলের সঙ্গে বসবাস করছিলেন তিনি। তবে তার মৃত্যু নিয়ে পুলিশ কোনো তথ্য দেয়নি। মেইতি অধ্যুষিত ইম্ফল উপত্যকা সোমবার শিক্ষার্থীদের ব্যাপক প্রতিবাদ বিক্ষোভ প্রত্যক্ষ করেছে। ১লা সেপ্টেম্বর থেকে কুকিদের বিরুদ্ধে যে নতুন করে সহিংসতা শুরু হয়েছে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানায় তারা। তবে ইম্ফলে রাজভবন লক্ষ্য করে শিক্ষার্থীরা ইটপাথর নিক্ষেপকালে তাদেরকে ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাস ছুড়েছে পুলিশ।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করা একটি ভিডিওতে দেখা যায়, থুবালে ডেপুটি কমিশনারের অফিস কম্পাউন্ড থেকে ভারতের জাতীয় পতাকা নামিয়ে ফেলছে একদল বিক্ষোভকারী। তারা মনিপুরের অখণ্ডতা রক্ষার পক্ষে স্লোগান দিচ্ছিল। একই সঙ্গে কুকিদের আলাদা প্রশাসনের দাবিকে প্রত্যাখ্যান করেছে তারা। উত্তেজনা প্রকট আকার ধারণ করায় ইম্ফলে শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং। রাজ্যে শান্তি ফেরানোর জন্য ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেন তিনি। রাজ্যে ক্ষমতায় বিজেপি সরকার। তাদের ওপর চাপ বৃদ্ধির জন্য ইম্ফল উপত্যকায় ‘পাবলিক শাটডাউন’ ঘোষণা করেছে মেইতি সংগঠনগুলো। তবে এর প্রেক্ষিতে সোমবার ও মঙ্গলবার সব স্কুল বন্ধ এবং আন্ডারগ্রাজুয়েট, পোস্টগ্রাজুয়েট পরীক্ষা স্থগিত করেছে প্রশাসন।

mzamin

No comments

Powered by Blogger.