টঙ্গী ও চুয়াডাঙ্গায় দুই শিক্ষার্থীকে গলা কেটে হত্যা

নির্যাতনের চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে মানবিকতা। হিংস্রতার চিহ্ন চারদিকে। গতকাল টঙ্গী ও চুয়াডাঙ্গায় দুই শিক্ষার্থীকে গলা কেটে হত্যা এরই প্রমাণ দেয়। নিজ ঘরে অসুস্থ এক সন্তানকে রেখে অপর সন্তানকে স্কুলে দিতে গিয়েছিলেন এক মা। ফিরে এসে দেখেন সন্তানের গলা কাটা নিথর দেহ। অপরদিকে চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গায় নিজ মাদ্রাসার পাশের ইটভাটা থেকে আবির হোসাইন নামের এক শিক্ষার্থীর মস্তকবিহীন লাশ উদ্ধার করা হয়।
উত্তরার শাহীন ক্যাডেট স্কুল অ্যান্ড কলেজের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র মুন্না (১৩)। সে পটুয়াখালী জেলার বাউফল থানার তাঁতেরকাঠী গ্রামের মিজানুর রহমানের ছেলে। নিহত মুন্নার বাবা ঢাকার বনানীতে একটি জনশক্তি অফিসে চাকরি করেন।
টঙ্গী গাজীপুরা কাজীপাড়া এলাকার হাবিবুর রহমানের ৫ম তলা বাড়ির ৪র্থ তলায় সপরিবারে বসবাস করেন। নিহতের খালু শাহাদাত হোসেন জানান, উত্তরা শাহীন ক্যাডেট স্কুল অ্যান্ড কলেজের ছাত্র মুন্না বেশ কয়েকদিন ধরে জ্বরে ভুগছিল। পরে তাকে হোস্টেল থেকে বাসায় নিয়ে আসা হয়। সেই থেকে সে বাসায়ই ছিল। গতকাল সকাল সাড়ে ৮টায় মুন্নাকে একা বাসায় রেখে তার মা মুকুল বেগম ছোট ছেলে তামিমকে নিয়ে স্কুলে যান। স্কুল থেকে বাসায় ফিরে মুন্নার নিথর দেহ খাটের উপর রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। ধারালো অস্ত্রের আঘাতে মুন্নার নাড়িভুঁড়ি বের হয়ে গেছে এবং কণ্ঠনালী ছিল কাটা। খবর পেয়ে টঙ্গী পূর্ব থানার এসআই আবদুস সালাম নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর মর্গে প্রেরণ করেন।

খবর পেয়ে মহানগর পুলিশ কর্মকর্তারা বাড়িটি ঘেরাও করে রাখে। তবে কে বা কারা এবং কী কারণে মুন্নাকে হত্যা করেছে এ ব্যাপারে তাৎক্ষণিক কেউ কিছু বলতে পারেননি।

এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে টঙ্গী পূর্ব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামাল হোসেন বলেন, এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে এবং থানায় একটি মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গায় উপজেলার একটি ইটভাটার কাছ থেকে আবির হোসাইন (১০) নামে এক মাদ্রাসা ছাত্রের মস্তকবিহীন মৃতদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল সকাল ৯টায় আলমডাঙ্গা থানা পুলিশ তার মৃতদেহ উদ্ধার করে। সে কয়রাডাঙ্গা নূরানী হাফেজিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানার নূরানী বিভাগের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র এবং ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার দৌলতপুর গ্রামের আলী হোসেনের ছেলে। নিহতের কাটা মাথাটি এখনো পাওয়া যায়নি।

আলমডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আসাদুজ্জামান মুন্সি জানান, মঙ্গলবার রাতে মাদ্রাসা থেকে ওই ছাত্র নিখোঁজ হয়। মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ খোঁজাখুঁজি করেও পায়নি। সকালে মাদ্রাসা সংলগ্ন মশিউরের ইটভাটার পাশে মস্তকবিহীন মৃতদেহ দেখে এলাকাবাসী পুলিশে খবর দেয়। ধারণা করা হচ্ছে, সন্ত্রাসীরা তাকে গলা কেটে হত্যা করেছে।
চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কানাইলাল সরকার ও মোহাম্মদ কলিমুল্লাহ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

No comments

Powered by Blogger.