ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ছাদ থেকে ফেলে যুবককে হত্যা: আড়াই লাখ টাকায় রফা

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রেম করার অপরাধে আদিল মিয়া (২২) নামে এক যুবককে বাড়িতে ডেকে নিয়ে হত্যা করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। মারধর করে ছাদ থেকে নিচে ফেলে দেয়া হয় তাকে। ঘটনা ধামাচাপা দিতে ময়নাতদন্ত ছাড়াই দাফন করা হয় লাশ। কোনো মামলাও হয়নি। সপ্তাহ না পেরুতে আড়াই লাখ টাকায় রফাদফাও হয়ে গেছে এই খুনের। জেলা শহরের পুরাতন জেল রোড এলাকায় গত ১৭ই জুলাই রাতে এই ঘটনা ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শী ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, জেলার নবীনগর উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের সাতঘর হাটি গ্রামের সালাম মিয়ার ছেলে আদিল মিয়া (২২) শহরের জেল রোডের ফেমাস ড্রাগ হাউজের কর্মচারী ছিল। দু’বছর ধরে রয়েছে সে এখানে।
এ সময় একই রোডের ঝিলন টি স্টলের মালিক ঝিলন মিয়ার কলেজপড়ুয়া মেয়ে চৈতীর (১৮) সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে তার। ঝিলন মিয়া পৌর এলাকার পুরাতন জেল রোডের শাহীন স্কুল সংলগ্ন ১১৪১ নম্বর বাসার (শফিক মঞ্জিল) দোতলায় বসবাস করেন। জেল রোডের ব্যবসায়ীরা জানান, আদিল মিয়ার সঙ্গে চৈতীর দীর্ঘদিন ধরে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। ১৭ই জুলাই রাতে আদিলকে ফোন করে চৈতীর বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়। অভিযোগ মিলেছে এরপর তাকে বেধড়ক পিটিয়ে ছাদ থেকে ফেলে দেয়া হয়। রাত ১০টার দিকে মেয়ের বাসার পাশে রাস্তায় তাকে অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা উদ্ধার করে জেলা সদর হাসপাতালে প্রেরণ করে। ওই সময় জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক মির্জা মো. সাঈফ বলেন- ছেলেটিকে যখন হাসপাতালে নিয়ে আসা হয় তখন সে অজ্ঞান ছিল। ইন্টারন্যাল ইনজুরির কারণে শরীরের অঙ্গগুলো অকেজো হয়ে পড়েছিল। পরে তাকে মৃত ঘোষণা করি। লাশ মর্গে নিয়ে যাওয়ার জন্যও বলা হয়েছিল বলে জানান সাঈফ। তবে ছেলের মৃত্যুর বিষয়ে এখনো অন্ধকারে পিতা সালাম মিয়া। তিনি বলেন, আমি এখনো কোনো কিছু জানি না। তবে অনেক কিছু শুনছি। আমার ভাতিজা পাবেল আর ফার্মেসির মালিক জুয়েল সব জানে। তিনি বাড়িতে শয্যাশায়ী আছেন বলে জানান। সালামের ৪ ছেলের মধ্যে জুয়েল ছিলেন সবার বড়। পরে পাভেল ফোন দিয়ে জানান, এটা একটা এক্সিডেন্ট। ঘটনার পরদিন ময়নাতদন্ত ছাড়াই আদিলের লাশ তার গ্রামের বাড়িতে নিয়ে দাফন করা হয়। এদিকে ঘটনার এক সপ্তাহ পর মঙ্গলবার বিকালে জুয়েল নামে জেলা ছাত্রলীগের সাবেক এক নেতাসহ আরো কয়েকজন নেতাকর্র্মী মেয়ের বাবা ঝিলনকে শহরের টেংকের পাড়ে পৌর কমিউনিটি সেন্টারে নিয়ে গিয়ে আড়াই লাখ টাকায় এই খুনের রফাদফা করেন। আগামী রোববারের মধ্যে এই টাকা পরিশোধ করতে হবে বলে জানা গেছে। ঘটনার পর থেকে বন্ধ রয়েছে ঝিলনের চায়ের দোকান। তাকে খোঁজ করে পাওয়া যায়নি। এ ব্যাপারে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সেলিম উদ্দিন বলেন- বিষয়টি তার জানা নেই। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবেন।

No comments

Powered by Blogger.