বকেয়া বেতনের দাবিতে সাভারে শ্রমিক বিক্ষোভ

সাভারে বকেয়া বেতনের দাবিতে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে একটি তৈরী পোশাক কারখানার শ্রমিকরা। মঙ্গলবার সকাল ১১ টা থেকে তিন মাসের বকেয়া বেতন এবং ওভারটাইম বিল পরিশোধের দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে শ্রমিকরা। এর আগে মালিকপক্ষের কথা অনুযায়ী আজ মঙ্গলবার সকালে বকেয়া বেতনের জন্য কারখানায় হাজির হয় পৌর এলাকার আড়াপাড়া মহল্লায় অবস্থিত আব্বাস এ্যাপারেলস কারখানার শ্রমিকরা। দীর্ঘক্ষন মূল ফটকে তালাবদ্ধ কারখানাটির সামনে অবস্থান নিলেও মালিক পক্ষের কোন সাড়া পায়নি শ্রমিকরা। একপর্যায়ে কারখানাটির নিরাপত্তা কর্মীরা বেতন দেয়া হবে জানিয়ে চলে যাওয়ার নির্দেশ দেয়। এঘটনায় শ্রমিকরা কারখানার সামনে থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। মিছিলটি সাভার বাজার রোড হয়ে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে উঠে আসে। এসময় শ্রমিকরা বাজার রোডের মাথায় মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে দাবি আদায়ে বিভিন্ন শ্লোগান দিতে থাকে। এদিকে মহাসড়ক অবরোধের খবর পেয়ে শিল্প পুলিশের উর্দ্ধতন কর্মকর্তাবৃন্দ, সাভার মডেল থানা ও ঢাকা জেলা উত্তরের গোয়েন্দা পুলিশ ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। এসময় শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে দফায় দফায় কথা বলে ৮ই মে বেতন আদায় করে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েও ক্ষুব্ধ শ্রমিকদেরকে রাস্তা থেকে সড়াতে ব্যার্থ হয়।
আব্বাস এ্যাপারেলস কারখানার শ্রমিক মিজানুর রহমান বলেন, আমাদের ফেব্রুয়ারি, মার্চ ও এপ্রিল মাসের বকেয়া বেতন পহেলা মে দেয়ার কথা ছিলো। এর আগেও মালিকপক্ষ বেতন দেয়ার জন্য একাধিকবার সময় দিয়ে কথা রাখেনি। আয়রনম্যান রবিন বলেন, গত রবিবারও আমাদের বকেয়া পাওনা পরিশোধের সময় দেয়া হয়েছিল। সেদিন এক হাজার করে টাকা দিয়ে আজ পুরো বেতন পরিশোধের সময় দেয়া হয়েছিল। নারী শ্রমিক নূর আক্তারী বলেন, বেতন না পাওয়ায় আমরা অনাহারে অর্ধাহারে জীবন যাপন করছি। টাকার জন্য বাড়িওয়ালা এবং দোকানী আমাদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করছে। টাকা না পাওয়া পর্যন্ত ঘরে ফিরবেনা বলেও জানান এই নারী। অন্যদিকে সকাল ১১ টা থেকে প্রায় দুই ঘণ্টারও বেশী সময় মহাসড়ক অবরোধ থাকায় দূর্ভোগে পড়ে হাজার হাজার মানুষ। এসময় ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে প্রায় ১০ কিলোমিটার দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হলে অনেককে প্রয়োজনীয় কাজ সারতে পায়ে হেঁটে গন্তব্যস্থলের উদ্দেশ্যে যেতে দেখা গেছে।

সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহসীনুল কাদির বলেন, শ্রমিকদের বকেয়া পাওনা আদায়ে কারখানা মালিককে আটক করে থানায় আনা হয়। পরে বেতন পরিশোধের শর্তে কারখানাটির ভবন মালিক সংসদ সদস্য কামাল আহমেদ মজুমদারের জিম্মায় তাকে মুক্তি দেয়া হয়। ইতোমধ্যে কারখানা মালিকের একটি ফ্ল্যাট বিক্রির চেষ্টা চলছে। সেটি বিক্রি হলেই আগামী ৮ই মে শ্রমিকদের বেতন পরিশোধের সিদ্ধান্ত রয়েছে বলেও জানান তিনি।

No comments

Powered by Blogger.