পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত সাজিদ বৃটেনের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

পদত্যাগ করেছেন বৃটেনের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যাম্বার রুড। তার পদত্যাগের পর বেশ দ্রুতই নতুন বৃটিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত বৃটিশ নাগরিক সাজিদ জাভিদ। রাড রোববার রাতে পদত্যাগ করেন। আর সোমবার সকালেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে জাভেদকে নিয়োগ দেন মে’। এ খবর দিয়েছে সিএনএন ও বিবিসি।
খবরে বলা হয়, অবৈধ অভিবাসী ইস্যুতে রাড ছিলেন সমালোচনার মুখে। তার পদত্যাগ দাবিও জোরালো হয়েছিল। বার বার ক্ষমা প্রার্থনা আর ভুল স্বীকার করেছেন। ভুল সংশোধনের প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন। কিন্তু শেষ রক্ষা হয় নি। তাকে পদত্যাগ করতেই হয়েছে।
পাকিস্তানি অভিবাসীর সন্তান জাভিদ (৪৮)। বিবিসি’র খবরে বলা হয়েছে, ১৯৬০-এর দশকে পাকিস্তান থেকে বৃটেনে পাড়ি জমান জাভিদের বাবা। প্রথমে কাপড়ের কারখানায় শ্রমিক হন। পরে বাস চালাতেন। প্রথম প্রজন্মের অভিবাসীর সন্তান হয়ে জাভিদের অন্যতম প্রধান দায়িত্ব হবে অভিবাসন নিয়ে বৃটেনের জনগণের উদ্বেগ সামলানো।
তথাকথিত ‘উইন্ডরাশ’ কেলেঙ্কারি নিয়ে বৃটেনের বর্তমান কনজারভেটিভ সরকার সমপ্রতি প্রচণ্ড চাপের মুখে পড়েছে। প্রধানত ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জ থেকে ৫০ এবং ৬০ দশকে আসা অভিবাসী, যাদেরকে উইন্ডরাশ প্রজন্ম বলে অভিহিত করা হয়- তাদের অনেককে হঠাৎ করে অবৈধ অভিবাসী হিসেবে ঘোষণার কথা ফাঁস হয়ে যাওয়ার পর সরকারের বিরুদ্ধে নিন্দার ঝড় ওঠে। পত্রপত্রিকায় প্রতিদিন খবর বেরুতে থাকে- এমনকি বৃটেনে জন্ম নিয়েও উইন্ডরাশ প্রজন্মের সন্তানদের অনেককেই হঠাৎ করে অবৈধ অভিবাসী হিসেবে ঘোষণা করায় অনেকে চাকরি হারান, চিকিৎসা সুবিধা থেকে বঞ্চিত হন। অনেককে তাদের পিতৃপুরুষের দেশে ফিরেও যেতে হয়েছে। বিভিন্ন অনুসন্ধানে ফাঁস হয়ে পড়েছে, অবৈধ অভিবাসীদের ফেরত পাঠানোর সংখ্যা নিয়ে সরকারের গোপন টার্গেটের অন্যায় বলি হয়েছেন বহু পুরনো অনেক ক্যারিবীয় অভিবাসী এবং তাদের সন্তানরা। এ নিয়ে সরকারের ভেতরেও ক্ষোভ তৈরি হয়।
জাভিদ অভিবাসন সমপর্কিত ওই কেলেঙ্কারির বিরুদ্ধে সরব ছিলেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পদে নিয়োগ পাওয়ার আগে তিনি সমপ্রদায়, স্থানীয় সরকার এবং আবাসন মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করতেন। লন্ডনের দৈনিক টেলিগ্রাফকে তিনি বলেন, ‘তিনি নিজেও উইন্ডরাশ প্রজন্মের সন্তান, তার বাবা-মাকেও হয়তো রাতারাতি অবৈধ হয়ে যেতে হতো।’ পত্রিকায় সরকারের অভিবাসন নীতির সমালোচনা করলেও তাকেই প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মে অভিবাসন কেলেঙ্কারি সামলানোর দায়িত্ব দিলেন।

No comments

Powered by Blogger.