সংরক্ষিত নারী আসন ২৫ বছর বহাল রাখার বিল সংসদে

আগামী ২৫ বছর জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী আসন বহাল রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে সংসদে। এজন্য সংবিধান সংশোধন করতে ‘সংবিধান (সপ্তদশ সংশোধন) বিল-২০১৮’ নামের একটি বিল উত্থাপন করা হয়েছে। জাতীয় সংসদে নারী প্রতিনিধিত্ব বাড়াতে ১৯৭৩ সাল থেকে সংরক্ষিত আসনের বিধান চালু হয়। এই আসন ১৫টি থেকে বেড়ে এখন ৫০টিতে দাড়িয়েছে। মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে বিলটি উত্থাপন করেন আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক। এর আগে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে দিনের কার্যসূচী শুরু হয়। বিলটি উত্থাপনের বিরোধীতা করেন স্বতন্ত্র এমপি রুস্তম আলী ফরাজী। পরে কন্ঠভোটে তা নাকচ হয়। সংবিধানে নারী আসনের মেয়াদ বাড়িয়ে আনা বিলটি উত্থাপনের পর অধিকতর পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়েছে। কমিটিকে বিলটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে এক মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। সংসদে উত্থাপিত বিলে সংবিধানের ৬৫ অনুচ্ছেদের (৩) দফায় সংশোধনীর প্রস্তাব করে বলা হয়েছে- ‘সংবিধান (সপ্তদশ সংশোধন) আইন-২০১৮ প্রবর্তনকালে বিদ্যমান সংসদের অব্যবহিত পরবর্তী সংসদের প্রথম বৈঠকের তারিখ হইতে শুরু করিয়া ২৫ বৎসরকাল অতিবাহিত হইবার অব্যবহিত পরবর্তীকালে সংসদ ভাংগিয়া না যাওয়া পর্যন্ত ৫০টি আসন কেবল মহিলা সদস্যদের জন্য সংরক্ষিত থাকিবে এবং তাঁহারা আইন অনুযায়ী পূর্বোক্ত সদস্যদের দ্বারা সংসদে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতির ভিত্তিতে একক হস্তান্তরযোগ্য ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত হইবেন। বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সম্বলিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে- সংরক্ষিত মহিলা আসনের ধারাবাহিকতা বজায় থাকার কারণে সমাজে সকল ক্ষেত্রে মহিলাদের অধিকতর অংশগ্রহণ নিশ্চিত হয়েছে। সর্বশেষ সংশোধনী অনুযায়ী সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৬৫ এর দফা (৩) এর বিদ্যমান বিধান অনুযায়ী বর্তমানে সংরক্ষিত মহিলা আসনের ১০ (দশ) বছর মেয়াদ ২৮ জানুয়ারি ২০১৯ শেষ হবে। সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে মেয়াদ বৃদ্ধি করা না হলে উক্ত সময় অতিবাহিত হওয়ার পর জাতীয় সংসদে মহিলাদের জন্য কোন আসন সংরক্ষিত থাকবে না। সংরক্ষিত আসনের প্রয়োজনীয়তা এখনও বিদ্যমান রয়েছে। একাদশ জাতীয় সংসদ সংরক্ষিত আসনের মহিলা-সদস্যদেরকে নিয়ে গঠন করতে হলে দশম সংসদ বহাল থাকা অবস্থায় সংবিধানে এ সংক্রান্ত বিধান সংশোধন করা আবশ্যক। আরো বলা হয়েছে, স্বাধীনতার স্থপতি ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশনায় বাংলাদেশে জাতীয় পর্যায়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও আইন প্রণয়নে মহিলাদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে তদানীন্তন গণপরিষদ কর্তৃক প্রণীত ১৯৭২ সালের মূল সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৬৫ এর দফা (৩) এর বিধানে জাতীয় সংসদে মহিলা সদস্যদের জন্য সংবিধান প্রবর্তন হতে ১০ বছর সময় অতিবাহিত হওয়ার অব্যবহিত পরবর্তী সময়ে সংসদ ভেঙ্গে না যাওয়া পর্যন্ত ১৫টি আসন সংরক্ষণ করা হয়।

No comments

Powered by Blogger.