সৈকতে উৎসব নেই

বিদায় নিচ্ছে ২০১৭ সাল। আজ বছরের শেষ দিন ৩১ ডিসেম্বর। ‘থার্টিফাস্ট নাইট’ উদ্‌যাপনের জন্য এখন কক্সবাজার সৈকতে জড়ো হয়েছেন অন্তত দুই লাখ পর্যটক। কিন্তু প্রশাসনের কড়াকড়িতে এবার সৈকতে উন্মুক্ত স্থানে কোনো উৎসব নেই। ফলে বিকেলে বছরের শেষ সূর্যাস্ত দেখেই সন্তুষ্ট থাকতে হবে। এ নিয়ে পর্যটকেরা হতাশ। অথচ গত বছর সৈকতে মধ্যরাত পর্যন্ত কনসার্টসহ নানা আয়োজন ছিল। কেন উৎসবে নেই, এমন প্রশ্নে পুলিশ প্রশাসন সরাসরি কোনো কারণ বলছে না। পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুয়ায়ী রাতে কোনো উৎসব করা যাবে না। জেলা পুলিশ প্রশাসন সূত্র জানায়, সৈকতের কোথাও বর্ষবিদায় ও বরণ উপলক্ষে সাংস্কৃতিক উৎসব অথবা বিনোদনের কোনো আয়োজন থাকছে না। নিজস্ব অতিথিদের বিনোদনের জন্য তারকা হোটেল সায়মান বিচ রিসোর্ট, ওশ্যান প্যারাডাইস ও রয়েল টিউলিপ হোটেলে পৃথক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন রয়েছে। তবে সেখানে বাইরের লোকজনের অংশগ্রহণ সংরক্ষিত। হোটেলের পরিচালক ও কক্সবাজার হোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের মুখপাত্র মো. সাখাওয়াত হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, নিরাপত্তা সমস্যার কারণে থার্টিফাস্ট নাইটের আয়োজন সম্ভব হয়নি। বিদেশি পর্যটকদের পছন্দের জায়গা পেঁচার দ্বীপ সৈকতের ‘মারমেইড বিচ রিসোর্ট।’ ব্যতিক্রমী বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে অংশ নিতে শহরের লোকজন মারমেইডে জড়ো হন। কিন্তু এবার সেখানে তেমন আয়োজন নেই। গত বছর মারমেইডে বছরের শেষ দিনের রাতে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ছিল। রিসোর্টের মহাব্যবস্থাপক মাহফুজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, বিকেলে বন্য হাতির প্রদর্শনী ছাড়া দেশি-বিদেশি অতিথিদের জন্য আর কোনো আয়োজন তাঁদের নেই। এই রিসোর্টে বিদেশি পর্যটক অবস্থান করছেন ২০ জনের মতো।
জেলা পুলিশ সুপার একেএম ইকবাল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা মতে কক্সবাজার সৈকতেও সন্ধ্যার আগে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান শেষ করার নির্দেশনা রয়েছে। কিন্তু বিকেলে বা সন্ধ্যার আগে যেকোনো সংগঠন বা প্রতিষ্ঠান সৈকতে উৎসব আয়োজন করতে পারে। তবে শনিবার পর্যন্ত কেউ আবেদন করেনি বলে সৈকত ফাঁকা যাচ্ছে। পুলিশ সুপার বলেন, এবার তিনটি তারকা হোটেলে থার্টিফাস্ট নাইট উৎসব হচ্ছে হোটেলে থাকা দেশি-বিদেশি অতিথিদের জন্য। কিন্তু সেখানে বাইরের লোকজনের যাওয়া নিষেধ। গতকাল শনিবার দুপুরে সৈকতের লাবণী পয়েন্টে গিয়ে দেখা গেছে, সৈকতে হাজারো পর্যটক। সৈকতে গোসলসহ নানা রাইডে চড়ে আনন্দে মেতেছে সবাই। কথা বলে জানা গেছে, বেশির ভাগ পর্যটক এসেছেন থার্টিফাস্ট নাইট উৎসবে যোগ দিতে। রাজধানীর কমলাপুর থেকে আসা ব্যবসায়ী আবদুল হালিম (৪৫) বলেন, গত বছর সৈকতে দেশের তারকা শিল্পীদের গান শোনার সুযোগ হয়েছিল। আনন্দ-উল্লাসে পালন করেছিলাম বর্ষবরণ উৎসব। এবার কিছুই নেই। কক্সবাজার হোটেল-মোটেল গেস্টহাউস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম সিকদার বলেন, থার্টিফাস্ট নাইট উদ্‌যাপনের জন্য সৈকতে সমবেত হবেন অন্তত তিন লাখ পর্যটক। ইতিমধ্যে দুই লাখের বেশি পর্যটক এসে পৌঁছেছেন। শহরের চার শতাধিক হোটেল-মোটেল গেস্টহাউসে কোনো কক্ষ এখন খালি নেই। ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজারের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার রায়হান কাজেমী বলেন, উন্মুক্ত স্থানে কোনো অনুষ্ঠান না থাকলেও সন্ধ্যায় সৈকতে ভ্রমণে কোনো বাধা নেই। পর্যটকের নিরাপত্তায় ট্যুরিষ্ট পুলিশ রাতদিন কাজ করে চলেছে।

No comments

Powered by Blogger.