দুই হাতের কবজি পর্যন্ত নেই, তবুও ভালো ফল

রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার গদাই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের হাত না থাকা সেই শারীরিক প্রতিবন্ধী কলি রানী (১১) কথা রেখেছে। পা দিয়ে লিখে এবারের প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিইসি) পরীক্ষায় জিপিএ-৪ দশমিক ৫৮ পেয়েছে। জন্মগতভাবেই তার দুই হাতের কবজি পর্যন্ত নেই। গত ২৬ নভেম্বর প্রথম আলোয় ‘চিকিৎসক হতে চায় প্রতিবন্ধী কলি রানী’ শিরোনামে সচিত্র সংবাদ প্রকাশিত হলে নজর কাড়ে সে। প্রথম আলোর অনেক পাঠক বাড়িতে গিয়ে কলির খোঁজখবর নেন ও তাকে পড়াশোনায় উৎসাহিত করে যাবতীয় সহায়তার আশ্বাস দেন। তবে পরীক্ষার ওই ফলাফলে কলি সন্তুষ্ট নয়। সে বলে, ‘ভাবছিলাম এ প্লাস পাব। পাই নাই। কিন্তু ডাক্তার হবই আমি। চিকিৎসা করে মানুষের কাছে টাকা নেব না। দোয়া করেন।
কারও বোঝা হইতে চাই না।’ এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা সূত্রে জানা গেছে, জন্মগতভাবেই কলি শারীরিক প্রতিবন্ধী। উপজেলার হরিশ্বর গ্রামের মৃত মনোরঞ্জন বর্মণের মেয়ে সে। পাঁচ বছর আগে মনোরঞ্জন সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান। ছয় ভাইবোনের মধ্যে কলি সবার ছোট। সংসারে অভাব-অনটন নিত্যসঙ্গী। কলির পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ দেখে স্কুলে ভর্তি করে দেন পরিবারের সদস্যরা। শিক্ষকদের প্রচেষ্টায় সব বাধা উপেক্ষা করে পা দিয়ে লিখে পিইসি পরীক্ষায় অংশ নেয় সে। গদাই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাইদুল ইসলাম বলেন, ‘অদম্য মনোবল নিয়ে কলি লেখাপড়া করছে। এবারে পিইসিতে জিপিএ-৪ দশমিক ৫৮ পেয়েছে। পা দিয়ে লিখে এমন ফলাফলে আমরা অনেক খুশি।’

No comments

Powered by Blogger.