স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামীর মৃত্যুদণ্ড

ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ায় যৌতুকের জন্য স্ত্রী পাপিয়াকে হত্যার দায়ে স্বামী মনিরুজ্জামান সেলিমকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল। বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোঃ হেলাল উদ্দিন এই রায় ঘোষণা করেন। রায়ে মামলার অপর আসামি নজরুল ইসলামকে খালাস দেয়া হয়েছে। রায়ের বিবরণে জানা যায়, ২০০৯ সালের ৯ অক্টোবর ফুলবাড়িয়া উপজেলার কালাদহ দীঘলপাড়া গ্রামের মৃত ইদ্রিস আলীর ছেলে মনিবরুজ্জামান সেলিমের সাথে ছফর আলীর মেয়ে পাপিয়া আক্তারের (৩০) বিয়ে হয়। বিয়ের সময় পাপিয়া আনন্দমোহন কলেজে ইসলামের ইতিহাসে ২য় বর্ষে পড়তো এবং স্বামী মনিরুজ্জামান সেলিম ওয়ার্ল্ডভিশনে চাকরি করতো। পরে স্বামী মনিরুজ্জামান স্বাস্থ্য বিভাগে চাকরি নেবে বলে স্ত্রীর কাছে দুই লাখ টাকা যৌতুকের দাবিতে শ্বশুরবাড়ি পাঠান। পাপিয়ার বাবা যৌতুক দিতে অপারগতা প্রকাশ করে মেয়েকে নিজের বাড়িতেই রেখে দেয়।
ঘটনার ১৫ দিন আগে মনিরুজ্জামান স্ত্রী পাপিয়াকে বাড়ি নিয়ে আসে এবং শারিরীক নিযার্তন শুরু করে। ২০১০ সালের ২৭ এপ্রিল দিবাগত রাতে পাপিয়াকে হত্যা করে। পরদিন পাপিয়ার বাবাকে খবর দেয় যে, তার মেয়ে অসুস্থ। খবর পেয়ে পাপিয়ার স্বজনরা এসে দেখে ঘরের ভেতর পাপিয়ার লাশ পড়ে রয়েছে। বিষয়টি থানা পুলিশকে অবহিত করা হলে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ মর্গে পাঠায়। এঘটনায় পাপিয়ার বাবা ছফর আলী বাদী হয়ে ফুলবাড়িয়া থানায় মামলা দায়ের করে। আদালতে আসামি পক্ষসহ ১৫ জনের সাক্ষ্য প্রমাণ শেষে বিচারক মনিরুজ্জামানকে মৃত্যুদণ্ড এবং ১০ হাজার টাকা জরিমানার আদেশ দেন। মামলার অপর আসামি নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমানিত না হওয়ায় আদালত তাকে বেকসুর খালাস দেন। রাষ্ট্রপক্ষে বিশেষ পিপি অ্যাডভোকেট কবির উদ্দিন ভূইয়া ও অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম চুন্নু এবং আসামি পক্ষে অ্যাডভোকেট বিশ্বনাথ পাল ও অ্যাডভোকেট সনজীব কুমার সরকার মামলা পরিচালনা করেন।

No comments

Powered by Blogger.