অর্ডের হাত ধরে ফুটবলে জেগে ওঠার আশা

হারতে হারতে আজ ক্লান্ত বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল। ক্রমাগত বাজে পারফরম্যান্সে ফিফা র‌্যাংকিংয়ের তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। এখন আশাই একমাত্র ভরসা বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে)। সাফের ফাইনাল খেলার অদম্য ইচ্ছা কর্তাদের। আর তাই নতুন আরেকজন কোচকে নিয়োগ দিল বাফুফে। বুধবার ইংল্যান্ডের বংশোদ্ভূত অস্ট্রেলিয়ান কোচ অ্যান্ড্র– অর্ডের সঙ্গে এক বছরের চুক্তি করেছে। আর তার হাতে তুলে দেয়া হয়েছে আসন্ন বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ, এএফসি অনূর্ধ্ব-২৩ বাছাই পর্ব এবং সাফ ফুটবলের দায়িত্ব। ভরসা দিচ্ছেন অর্ডও। তার কথায়, ‘জাতীয় দলের উন্নতি করতে চাই।’ ন্যাশনাল টিমস কমিটির চেয়ারম্যান কাজী নাবিল আহমেদ ও অর্ডের মধ্যে চুক্তি সই হয়। তবে বাংলাদেশের দায়িত্ব নিয়ে লাভই হয়েছে অ্যান্ড্রু অর্ডের। কেননা এর আগে অস্ট্রেলিয়া জাতীয় দলে স্কাউট হিসেবে কাজ করার অভিজ্ঞতা থাকলেও কোনো দেশের জাতীয় দলের কোচ হিসেবে কাজ পাচ্ছেন এই প্রথম। তাই এখন থেকে নিজেকে জাতীয় দলের কোচ হিসেবে পরিচয় দিতে পারবেন। কিন্তু তার কাছ থেকে আগামী এক বছরে কতটা লাভবান হবে বাংলাদেশ? প্রশ্নটা থেকেই যায়। যদিও অর্ড বলছেন নিজের সাধ্যমতোই উন্নতির চেষ্টা করবেন। তার কথায়, ‘বাফুফেকে ধন্যবাদ আমাকে দায়িত্ব দেয়ার জন্য। আগামী এক বছর পর জাতীয় দল কোনো অবস্থানে থাকবে সেটা নিয়ে এখনই ভাবছি না। আমি চাই প্রতিটি মাসে দলের উন্নতি করতে।’ ঢাল নেই তলোয়ার নেই নিধিরাম সর্দার। বাফুফের অবস্থাও অনেকটা সেরকমই। জাতীয় দলে নেই যথেষ্ট মানসম্পন্ন ফুটবলার। কিন্তু কোচের ঘারে দায়িত্ব দিয়েই তারা স্বপ্ন দেখছে সাফের ফাইনাল খেলার। এই কোচ নিয়েই সেই আস্থার পাহাড়কে উকি দিয়ে দেখছেন বাফুফের কর্তারা। ন্যাশনাল টিমস কমিটির চেয়ারম্যান কাজী নাবিল আহমেদের কথা, ‘আস্থার কথা যদি আসে। তাহলে বলবো অর্ড বয়সে নবীন। তার মাত্র ৩৭ বছর বয়স।
তাই বর্তমান আধুনিক ফুটবল সম্পর্কে তার জ্ঞান আছে। আর আমরা খুঁজছিলাম এমন একজন পশ্চিমা কোচ, যার এশিয়াতে কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে। আর সে কারণেই অর্ডকে দায়িত্ব দেয়া।’ তিনি যোগ করেন, ‘আমাদের লক্ষ্য থাকবে সাফের ফাইনালে খেলা। গত দুই আসরে সাফে যে ফল হয়েছে তা থেকে অবশ্যই আরো ভালো করাই লক্ষ্য আমাদের।’ বাফুফে সভাপতি কাজি সালাউদ্দিন অবশ্য সব ব্যর্থতার দায় একরকম ফুটবলারদের ঘারেই চাপালেন, ‘প্রথমত জাতীয় দলের নতুন কোচ অ্যান্ড্র– অর্ডকে স্বাগতম। জাতীয় দল কমিটিকে ধন্যবাদ তারা ঠিক সময়ে কোচ নিয়োগ দিয়েছে। যত রকমের সুবিধা প্রয়োজন আমরা জাতীয় দলকে দিতে চাই। আমি ফুটবলারদের বলব তারা যেন তাদের কাজটাকে গুরুত্ব সহকারে নেয়। আমার ম্যাসেজ ফুটবলারদের জন্য, দয়া করে তোমরা প্রফেশনাল হও। দেশের জন্য সিরিয়াসলি খেলো।’ গত কয় বছরে অনেক এগিয়ে গেছে সাফের অন্তর্ভুক্ত দলগুলো। কোচের ওপর দায়িত্ব চাপিয়ে দেয়া হয় ভালো ফল করতে হবে সাফে। বর্তমানে জাতীয় দলের ফুটবলাররা মানসম্পন্ন নয়। এদের নিয়ে কি করে সাফের শিরোপা খরা ঘুচাবে বাফুফে? ফুটবলার তৈরিতে তৃণমূলে নজর দেবে কিনা বাফুফে? কাজী নাবিল বলেছেন, ‘বর্তমানে জাতীয় দলে বেশ কিছু খেলোয়াড় বিভিন্ন ডেভলপম্যান্ট প্রোগ্রাম থেকে এসেছে। বর্তমানে অনূর্ধ্ব-১৮ ফুটবল এবং পাইওনিয়ার ফুটবল চলছে। গত দুই বছরে গেম এনালাইসিস করলে দেখা যাবে ম্যাচের শেষ মিনিটগুলোতে গোল হজম করে ম্যাচের ফল পরিবর্তন হয়ে গেছে বাংলাদেশের। বর্তমানের ফুটবলারদের ৫ থেকে ১০ ভাগ লিকেজ বন্ধ করলে এবং তাদের একটু যতœ নিলে ও নজর দিলে ভালো ফল আসতে পারে।’ ১২ জুন শুরু হওয়া পেশাদার লীগের ম্যাচগুলো মাঠে বসেই দেখবেন অর্ড। এরপর ফুটবলার নির্বাচন করে জাতীয় দল গঠন করবেন বলে জানা গেছে।

No comments

Powered by Blogger.