প্রতিরক্ষায় সমঝোতা তিস্তায় আশ্বাস

প্রতিরক্ষা খাতে বাংলাদেশ ও ভারতের সহযোগিতা সংক্রান্ত রূপরেখাসহ চারটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই হলেও তিস্তা চুক্তির ব্যাপারে মিলেছে নরেন্দ্র মোদির জোরালো আশ্বাস। তিনি (মোদি) বলেছেন, শুধু তার এবং শেখ হাসিনার সরকারই এই চুক্তি সম্পাদন করতে সক্ষম হবে। তাদের সরকার দ্রুত এটা নিষ্পত্তি করবে বলেও জানান তিনি। দিল্লিতে হায়দরাবাদ হাউসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মধ্যে বৈঠকের পর মোদি তিস্তার ব্যাপারে এই ঘোষণা দেন। আর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তিস্তাসহ অভিন্ন নদীগুলোর পানিবণ্টন ইস্যুর দ্রুত নিষ্পত্তিতে ভারতের সহায়তা কামনা করেন। এ সময় পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকের পর দু’দেশের মধ্যে সরকারি পর্যায়ে ২২টি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই হয়। তার মধ্যে ছয়টি চুক্তি এবং ১৬টি এমওইউ সই হয়েছে। প্রতিরক্ষা খাতের চারটি এমওইউ ছাড়াও পরমাণু শক্তি, স্যাটেলাইট, সাইবার নিরাপত্তা, সীমান্ত হাট, বিচার বিভাগের মধ্যে সহযোগিতা এবং কানেকটিভিটি খাতে সহযোগিতার চুক্তি রয়েছে। এছাড়া বেসরকারি পর্যায়ে আরও ১২টি চুক্তি সই হয়েছে। কর্মকর্তারা বলছেন, বেসরকারি পর্যায়ে আরও চুক্তি সই হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশকে সমরাস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম ক্রয়ে ৫০ কোটি ডলারসহ বিভিন্ন খাতে মোট ৫০০ কোটি ডলারের ঋণ দেয়ার ঘোষণাও দিয়েছেন। ফলে গত ছয় বছরে বাংলাদেশকে মোট আটশ’ কোটি ডলার ঋণ দেয়ার ঘোষণা দেয়া হল। এদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ থেকে পণ্য রফতানির ক্ষেত্রে বাণিজ্য বাধা দূর করার জন্য ভারতের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
এদিকে শনিবার রাতে ঢাকা-দিল্লি ৬২ দফা যৌথ ঘোষণা দেয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের দ্বিতীয় দিনে শনিবার এসব চুক্তি ও এমওইউ সই হয়। সফরের দ্বিতীয় দিনে রাষ্ট্রপতি ভবনে গার্ড অব অনার গ্রহণের মধ্য দিয়ে দিনের কর্মসূচি শুরু করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি উপস্থিত ছিলেন। তারপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজঘাটে গিয়ে গান্ধী সমাধিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। হায়দরাবাদ হাউসে স্থানীয় সময় সাড়ে ১১টায় দ্বিপক্ষীয় বৈঠক শুরু হয়। প্রথমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মধ্যে আধা ঘণ্টা একান্ত আলোচনা হয়েছে। তারপর বসে আনুষ্ঠানিক দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে। তিস্তা চুক্তি যে এবার হচ্ছে না সেটা আগেই ঘোষণা করেছিল উভয় পক্ষ। তবে ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলী বলেছিলেন, তিস্তা চুক্তি সম্পাদন কবে নাগাদ হবে সে ব্যাপারে একটি সময়সীমা চাওয়া হবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক বৈঠকে তিস্তা চুক্তি সম্পাদনের কোনো সময়সীমা চাওয়া হয়নি। তবে এই চুক্তি সম্পাদনের প্রক্রিয়াটি দ্রুত করার তাগিদ দেয়া হয়েছে। আনুষ্ঠানিক দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন এমন একজন কর্মকর্তা বৈঠকের পর যুগান্তরকে বলেছেন, ‘তিস্তা চুক্তি সম্পাদনের কোনো সময়সীমা আনুষ্ঠানিক বৈঠকে চাওয়া হয়নি। এ চুক্তি সম্পাদন প্রক্রিয়া দ্রুত করার তাগিদ দেয়া হয়েছে।’ তবে তিনি এটাও বলেন যে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদির মধ্যে একান্ত বৈঠকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী সময়সীমা চেয়েছেন কিনা তা তিনি জানেন না। তবে দিল্লির কূটনৈতিক মহলে এ আলোচনা চলেছে যে, শেখ হাসিনাকে একেবারে নিরাশ করে ফেরাতে চান না মোদি। কেননা তিস্তার ব্যাপারে ভারতের সঙ্গে কোনো প্রকার অগ্রগতি না হলে আগামী জাতীয় নির্বাচনে প্রভাব পড়তে পারে। এদিকে প্রতিরক্ষা খাতে রূপরেখায় প্রতিরক্ষা শিল্পে সহযোগিতা,
সমুদ্র অবকাঠামো নির্মাণ, মহাকাশ গবেষণা, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, যৌথ মহড়া, সামরিক কর্মকর্তাদের সফর বিনিময়সহ বিভিন্নভাবে সহযোগিতার কথা রয়েছে। এছাড়াও ভারত থেকে সমরাস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম ক্রয়ের লক্ষ্যে বাংলাদেশকে ৫০ কোটি ডলারের ‘লাইন অব ক্রেডিট’ (এলওসি) দেয়ার বিষয়ে পৃথক এমওইউ সই হয়েছে। এছাড়া দুই দেশের ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজ এবং ডিফেন্স সার্ভিস স্টাফ কলেজের মধ্যে সহযোগিতা সংক্রান্ত পৃথক দুটি এমওইউ সই হয়েছে। এছাড়া দিল্লির পার্ক স্ট্রিটের নাম জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে ঘোষণা দেন মোদি। এ সময় পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি উপস্থিত ছিলেন। এই আনুষ্ঠানিকতার এক পর্যায়ে দুই প্রধানমন্ত্রীকে নেমে এসে ‘বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী’র হিন্দি অনুবাদ বইয়ের মোড়ক উন্মোচনের আহ্বান জানানো হয়। এই ঘোষণা দিতে গিয়ে উপস্থাপক বলেন, ‘মে আই রিকোয়েস্ট দ্য টু প্রাইম মিনিস্টার্স টু নাউ প্লিজ স্টেপ ডাউন।’ এ কথা বলার পর মিলনায়তন ভর্তি সবার মধ্যে হাস্যরসের সৃষ্টি হয়। শেখ হাসিনা ও মোদি উভয়কেই তখন হাসতে দেখা যায়। অনুষ্ঠানে খুলনা-কলকাতা রুটে নতুন যাত্রীবাহী বাস সার্ভিস, পরীক্ষামূলকভাবে খুলনা-কলকাতা দ্বিতীয় মৈত্রী এক্সপ্রেস এবং মালামাল পরিবহনের জন্য বিরল-রাধিকাপুর রেলপথটি পুনরায় চালু করার ঘোষণা দেয়া হয়। বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি ক্ষেত্রেও পারস্পরিক সহযোগিতা বিদ্যমান রয়েছে। বাংলাদেশ ইতিমধ্যেই ত্রিপুরা থেকে বাংলাদেশে অতিরিক্ত ৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ উদ্বোধন করেছে এবং নেপাল ও ভুটান থেকে ক্রসবর্ডার বিদ্যুৎ আমদানির বিষয়েও আলোচনা হয়েছে। চুক্তি সই করার পর হায়দরাবাদ হাউসের একটি কক্ষে বাংলাদেশ ও ভারতের সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে বক্তৃতা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। জনাকীর্ণ এই অনুষ্ঠানে মোদি তার বক্তৃতায় অভিন্ন নদীগুলোর পানিবণ্টন সম্পর্কে আলোকপাত করে বলেন, ‘আমাদের অভিন্ন স্থল সীমান্তের সঙ্গেই রয়েছে আমাদের অভিন্ন নদী। তারা আমাদের জনগণকে বাঁচিয়ে রাখে এবং তাদের জীবিকার ব্যবস্থা করে।
তার মধ্যে তিস্তা সবচেয়ে বেশি আকর্ষণের সৃষ্টি করেছে। এটা ভারত, বাংলাদেশ ও ভারতের জনগণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।’ ভারতের প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমি আনন্দিত যে, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী আজকে আমার সম্মানিত অতিথি। আমি জানি যে, বাংলাদেশ সম্পর্কে তার অনুভূতি আমার মতোই। আমি বাংলাদেশের জনগণকে আমাদের অঙ্গীকার ও অব্যাহত প্রচেষ্টা সম্পর্কে আশ্বস্ত করতে চাই। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, শুধু আমার সরকার এবং শেখ হাসিনার সরকারই তিস্তার পানির ভাগাভাগির দ্রুত সমাধান করতে পারে এবং করবে।’ অভিন্ন নদীগুলোর পানিবণ্টন সমস্যার দ্রুত সমাধানের তাগিদ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা তিস্তার মতো অভিন্ন নদীগুলোর পানিবণ্টন, গঙ্গা ব্যারাজ প্রকল্প এবং অভিন্ন নদীগুলোর অববাহিকাভিত্তিক ব্যবস্থাপনাসহ পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনা নিয়ে আলোচনা করেছি। আমরা আন্তরিকভাবে বিশ্বাস করি, দ্রুততার সঙ্গে এসব ইস্যুর নিষ্পত্তির বিষয়ে ভারতের সমর্থন পাব।’ বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে প্রতিরক্ষা খাতে সহযোগিতা বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে দৃশ্যমান হয়েছে। এ ব্যাপারে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, ‘আমাদের অংশীদারিত্ব আমাদের জনগণের জন্য সমৃদ্ধি নিয়ে এসেছে। এই অংশীদারিত্ব জনগণকে জঙ্গিবাদ ও উগ্রবাদ থেকে সুরক্ষার কাজে লাগছে। এটা শুধু ভারত আর বাংলাদেশের জন্যই হুমকি নয়; বরং গোটা অঞ্চলের জন্যই হুমকি।
সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে শেখ হাসিনার ‘জিরো টলারেন্স’ নীতিরও প্রশংসা করেন মোদি। তিনি বলেন, ‘আমাদের দুই দেশের ও এই অঞ্চলের শান্তি, নিরাপত্তা ও উন্নয়ন আমাদের সম্পৃক্ততার কেন্দ্রে রয়েছে। অনেক দিন পর আজকে আমরা আমাদের দুই দেশের সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে একটি চুক্তিতে উপনীত হতে পেরেছি।’ এ সময় বাংলাদেশের সমরাস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম ক্রয়ের জন্য ৫০ কোটি ডলারের ঋণ দেয়ার ঘোষণা দিয়ে বলেন, বাংলাদেশ তার নিজস্ব প্রয়োজন এবং অগ্রাধিকারের ভিত্তিতেই এই ক্রয় সম্পাদন করতে পারবে। আসন্ন বাংলা নববর্ষের প্রাক্কালে শেখ হাসিনা দুদেশের জনগণকে ‘শুভ নববর্ষ’ বলে বাংলায় নববর্ষ ১৪২৪-এর আগাম শুভেচ্ছা জানান। শেখ হাসিনা তার বক্তৃতায় বলেন, আমি আন্তরিকভাবে বিশ্বাস করি, দ্রুততার সঙ্গে এসব ইস্যু সমাধানে আমরা ভারতের সমর্থন পাব। তিনি বাংলাদেশ-ভারত দ্বিপক্ষীয় চমৎকার সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে তাদের এই বৈঠককে ফলপ্রসূ হিসেবে বর্ণনা করেন। শেখ হাসিনা জানান, পারস্পরিক উদ্বেগ ও অগ্রাধিকারের ব্যাপারে আমাদের বোঝাপড়া আরও এগিয়ে নিতে ক্রমবর্ধমান সম্পর্কের সব দিক নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি। এ প্রসঙ্গে তিনি উল্লেখ করেন, ভারত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী দেশ এবং বাংলাদেশের অন্যতম উন্নয়ন অংশীদার। শেখ হাসিনা ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে ভারতের অমূল্য অবদানের কথা স্মরণ করে বলেন, এ জন্য আমরা গভীরভাবে কৃতজ্ঞ। তিনি বলেন, তার বর্তমান দিল্লি সফরকালে ১৯৭১ সালে ভারতীয় সেনাবাহিনীর শহীদ সদস্যদের সম্মান জানাতে পেরে তিনি আনন্দিত। একাত্তরের গণহত্যার ব্যাপারে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ে বাংলাদেশের প্রচেষ্টায় নয়াদিল্লি সমর্থন দিতে সম্মত হওয়ায় তিনি এ উদ্যোগের প্রশংসা করেন। শেখ হাসিনা বলেন, তিনি এবং প্রধানমন্ত্রী মোদি একমত হয়েছেন, এ দুটি দেশের উন্নয়নে উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
দু’দেশের মধ্যে যোগাযোগের ক্ষেত্রে আন্তঃব্যক্তিক যোগাযোগই বড় শক্তি উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, সে কারণেই আমরা আমাদের আগরতলা ভিসা অফিসকে যুগোপযোগী করে সম্প্রতি সহকারী হাইকমিশন এবং গৌহাটিতে আরেকটি নতুন সহকারী হাইকমিশন খুলেছি। ভারতও বাংলাদেশে আরও অনেক ভারতীয় ভিসা অ্যাপলিকেশন সেন্টার (আইভিএসি) খুলেছে উল্লেখ করে বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, এগুলো আমাদের মধ্যকার পারস্পরিক আত্মবিশ্বাস এবং বিশ্বাসের ভিতকে মজবুত ও সম্প্রসারিত করছে। শেখ হাসিনা বলেন, আজ দুটি দেশের মধ্যে বেশ কয়েকটি দ্বিপক্ষীয় চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। ফলে বিবিধ জায়গায় সহযোগিতার ক্ষেত্র প্রস্তুত হয়েছে। এসবের মধ্যে রয়েছে অর্থনৈতিক সহযোগিতা, প্রতিরক্ষা সহযোগিতা, শান্তিপূর্ণভাবে পারমাণবিক জ্বালানির ব্যবহার, স্যাটেলাইট, যোগাযোগ প্রযুক্তি, গণমাধ্যম প্রভৃতি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারত ইতিমধ্যেই প্রশংসনীয় অর্থনৈতিক উন্নয়ন সাধন করেছে এবং খুব দ্রুতই শিক্ষা, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি এবং উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে পাওয়ার হাউস হয়ে উঠছে। বাংলাদেশের অর্থনীতিও এখন একটি সন্তোষজনক হারে এগোচ্ছে, ৭ শতাংশ হারে প্রবৃদ্ধি অর্জিত হচ্ছে। আমরা সহস াব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (এমডিজি) বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশেষ করে স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং দারিদ্র্য বিমোচনে উল্লেখযোগ্য উন্নতি সাধন করেছি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে তার গতিশীল নেতৃত্ব এবং উদ্ভাবনী চিন্তার জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এর ফলে যে ভারতই শুধু দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে তা নয় বরং দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রেও যোগ করছে নতুন মাত্রা। তিনি বলেন, একটি সমন্বিত এবং টেকসই সম্পর্ক সৃষ্টির যে লক্ষ্য তা আমাদের যৌথ ঘোষণায় প্রতিফলিত হয়েছে। এখন আমাদের এই ঘোষণাকে কাজে পরিণত করে এর একটি শক্ত ভিত প্রদান করতে হবে।’
বাণিজ্য বাধা দূর করার আহ্বান : বৈঠকে বাণিজ্য বাধা দূর করার জন্য ভারতের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ। শেখ হাসিনা বলেন, প্রধানমন্ত্রী মোদি দু’দেশের মধ্যে ব্যবসায়িক ঘাটতি বাড়তে থাকার বিষয়টি মেনে নিয়ে এ বিষয়ে তার সরকারের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের বিষয়েও আশ্বস্ত করেছেন। আমরা পাট রফতানির ক্ষেত্রে ‘এন্টি ডাম্পিং শুল্ক’ আরোপের বিষয়টি পুনর্বিবেচনার বিষয়েও আলোচনা করে সমাধানের উদ্যোগ নিয়েছি। দু’দেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে সমতা আনয়নের বিষয়ে শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার দেশের বিভিন্ন নির্দিষ্ট স্থানে ভারতের জন্য বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল করারও উদ্যোগ নিয়েছে। তিনি বলেন, আমরা দু’দেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্যের উন্নয়ন এবং বিনিয়োগ বৃদ্ধির জন্য অন্য সব বিষয়ে আলোচনা করেছি।

No comments

Powered by Blogger.