বার্সার পরাজয়ে নেইমার দুঃস্বপ্ন


বার্সেলোনার সামনে দারুণ সুযোগ এসেছিল। কিন্তু কাতালানরা সেটি কাজে লাগাতে পারেনি। আগের ম্যাচে রিয়াল মাদ্রিদ অ্যাতলেটিকোর সঙ্গে ড্র করায় বার্সার সামনে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে ওঠার সুযোগ আসে। সঙ্গে লা লিগায় শিরোপার দাবিটা আরেকটু পোক্ত করা। কিন্তু এসবের কিছুই হয়নি। উল্টো মালাগার কাছে ২-০ গোলে বিধ্বস্ত হয়েছে লুইস এনরিকের শিষ্যরা। এই পরাজয় ছাপিয়ে আলোচনায় এসেছে ব্রাজিলের ওয়ান্ডার কিডস নেইমারের লাল কার্ড। তিনি এল ক্লাসিকো মিস করছেন। এ নিয়ে শেষ তিনটি অ্যাওয়ে ম্যাচের দুটিতে হারল বার্সেলোনা। গত মাসে দেপোর্তিভো লা করুনার মাঠে ২-১ গোলে হেরেছিল বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। এবারের লিগে এখন পর্যন্ত হওয়া ৩১ রাউন্ডে মাত্র দুটি ম্যাচেই গোল করতে ব্যর্থ বার্সেলোনা এবং দুটিই এই মালাগার বিপক্ষে। গত নভেম্বরে ঘরের মাঠে লিগের প্রথম পর্বের ম্যাচটি গোলশূন্য ড্র হয়েছিল। শনিবার রাতে অ্যান্থনি গ্রিজম্যানের গোলে অ্যাতলেটিকো মাদ্রিদ ১-১ গোলে রিয়াল মাদ্রিদের সঙ্গে ড্র করে। এর কয়েক ঘণ্টা পরই সফরকারী হিসেবে মাঠে নামে বার্সেলোনা। মালাগার মাঠে শুরুতে বল দখলে মেসিরা মুন্সিয়ানা দেখালেও সময় গড়ানোর সঙ্গে নিয়ন্ত্রণ হারাতে থাকে। গোছালো আক্রমণে ১৬ মিনিটে এগিয়ে যাওয়ার দারুণ সুযোগ পায় বার্সা। মাঝমাঠ থেকে জর্দি আলবার লম্বা পাস ডি-বক্সে বুক দিয়ে নিয়ন্ত্রণে নেন লুইস সুয়ারেজ। কিন্তু এগিয়ে আসা গোলরক্ষক কালোর্স কামেনিকে ফাঁকি দিতে পারেননি তিনি। এরপর মেসির নৈপুণ্যে ৩০ মিনিটে আরেকটি দারুণ আক্রমণ করে বার্সেলোনা। একজনকে কাটিয়ে দু'জনের মধ্যে দিয়ে নিখুঁত পাস দেন মেসি। কিন্তু ধীরগতির আন্দ্রে গোমেস শট নিতেই ব্যর্থ হন। দুই মিনিট পর খেলার ধারার বিপরীতে দারুণ এক প্রতি-আক্রমণে এগিয়ে যায় মালাগা। নিজেদের সীমানা থেকে হুয়ান কার্লোসের লম্বা উঁচু করে বাড়ানো বল ধরে দারুণ ক্ষিপ্রতায় ডি-বক্সে ঢুকে নিচু শটে গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন বার্সেলোনার সাবেক স্ট্রাইকার সান্দ্রো। অবশ্য এই গোলে যতটা না এই স্প্যানিশ স্ট্রাইকারের অবদান, তার চেয়েও বড় ভূমিকা বার্সার ডিফেন্সের।
ফরাসি ডেফেন্ডার জেরেমি ম্যাথিউয়ের ভুলে গোলটা পান সান্দ্রো। অবশ্য তার অফসাইডের আবেদনে সাড়া দেননি রেফারি, যদিও পরে দেখা গেছে জেরেমির আবেদনই সঠিক। প্রথমার্ধে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় দু'দল। দ্বিতীয়ার্ধে গোল পরিশোধে মরিয়া হয়ে ওঠে বার্সেলোনা। এরই ফলে ৬৫ মিনিটে বড় ধাক্কাটি খায় অতিথিরা। দিয়েগো লরেন্তেকে অহেতুক ফাউল করে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন নেইমার। ১০ জনের দলকে চেপে ধরে মালাগা। ৭২ মিনিটে দারুণ এক প্রতি-আক্রমণে বল জালে পাঠিয়েছিলেন মালাগার পেনারান্দা। কিন্তু অফসাইডের বাঁশি বেজে ওঠে। অবশ্য টিভি রিপ্লেতে দেখা যায়, অফসাইড ছিলেন না ভেনিজুয়েলার এই মিডফিল্ডার। ছয় মিনিট পর সার্জিও রবের্তো ফাউলের শিকার হলে ফ্রি-কিকের বাঁশি বাজান রেফারি। তবে পেনাল্টির আবেদন করে বার্সেলোনার খেলোয়াড়রা। এবারও টিভি রিপ্লেতেও দেখা যায়, ডি-বক্সের ঠিক ভিতরেই ফাউলটি হয়েছিল। ৮৯ মিনিটে সুয়ারেজের শেষ প্রচেষ্টা প্রচেষ্টা রুখে দেন ক্যামেরুনের গোলরক্ষক কামেনি। আর নির্ধারিত সময়ের একেবারে শেষ মুহূর্তে জোনাথন রদ্রিগেস গোল করলে হার নিশ্চিত হয়ে যায় বার্সেলোনার। স্বদেশী মিডফিল্ডার পাবলো ফোর্নালসের পাস পেয়ে অনায়াসে লক্ষ্যভেদ করেন জোনাথন। লিগে বার্সেলোনার এটি চতুর্থ হার। ৩১ ম্যাচে ৬৯ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে আছে তারা। অ্যাতলেটিকো মাদ্রিদের সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করা রিয়াল ৩০ ম্যাচে ৭২ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে। ৩১ ম্যাচে ৬২ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে অ্যাতলেটিকো। এক পয়েন্ট কম নিয়ে চতুর্থ স্থানে সেভিয়া।

No comments

Powered by Blogger.